Home Blog Page 6

নয়নাভিরাম সোনাদিয়া

সোনাদিয়া কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ একটি দ্বীপ৷ এই দ্বীপটির আয়তন প্রায় ৯ বর্গ কিলোমিটার। অপরুপ সৌন্দর্যের আধার এই দ্বীপটি কক্সবাজার জেলা সদর থেকে ১৫ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে মহেশখালী উপজেলার কুতুবজোম ইউনিয়নে অবস্থিত৷

সোনাদিয়া দ্বীপ
সোনাদিয়া দ্বীপ

এটি ২১˙২৮˝- ২১˙৩৩˝উত্তর অক্ষাংশ ও ৯১˙৫০˝- ৯১˙৫৬˝পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত। একটি খাল দ্বারা সোনাদিয়া মহেশখালীর মূল দ্বীপ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছে৷ সোনাদিয়া অনেকের কাছে জীববৈচিত্রের দ্বীপ নামেও পরিচিতি এবং এ দ্বীপ সৌন্দর্য পিপাসুদের জন্য অন্যতম পর্যটন স্থান। চারদিকে গভীর সমুদ্রের সাগরের ঢেউ সমৃদ্ধ সোনাদিয়া মূলত একটি প্যারাদ্বীপ৷

বাংলাদেশের দক্ষিন-পূর্ব উপকূলীয় প্যারাবনের অবশিষ্টাংশ এখন মূলত শুধু সোনাদিয়া দ্বীপেই দেখা যায়। সোনাদিয়ার প্যারাবন বাইন বৃক্ষ সমৃদ্ধ। এছাড়া প্যারাবনে কেওড়া, গেওয়া, হারগোজা, নুনিয়া ইত্যাদি ম্যনগ্রোভ প্রজাতির উদ্ভিদ পাওয়া যায়। প্যারাবনের ভিতরে সুন্দর বনের মত ছোট ছোট নদীর দু’পাশে নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখা যায়। সোনাদিয়ার প্যারাবন, চর, খাল ও মোহনা নানা প্রজাতির মাছ ও অমেরুদন্ডী প্রাণীর গুরুত্বপূর্ন আবাসস্থল।

দ্বীপটির প্যারাবন সংলগ্ন খালে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ পাওয়া যায় যেমন-বাটা, কোরাল, তাইল্যা, দাতিনা, কাউন, পোয়া ইত্যাদি।

সোনাদিয়া দেশের প্রধান শুটকি মাছ উৎপাদন কেন্দ্র। এখানকার ম্যানগ্রোভ বন এবং উপকূলীয় বনভূমি, সাগরে গাঢ় নীল পানি, কেয়া বন, লাল কাঁকড়া, শামুক, বিভিন্ন প্রকারের সামুদ্রিক পাখি পর্যটকদের মনে দোলা দেয়।

সামুদ্রিক শামুক

এই দ্বীপটি বাংলাদেশের গভীর সমুদ্র বন্দর তৈরির জন্য নির্বাচিত হয়েছিল পরে তা মাতারবাড়ি তে স্থানান্তর করা হয়েছে বৃহত্তর স্বার্থে৷

মাতারবাড়ি এলএনজি টার্মিনালে সন্ধায়

 

প্রায় ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ প্রশস্থ সৈকত, সৈকত ঘেষে সারিবদ্ধভাবে দাড়িয়ে থাকা সূউচ্চ বালিয়াড়ি, জালের মতো ছোট-বড় অসংখ্য খাল বেষ্টিত ম্যানগ্রোভ বন, বিস্তির্ণ ল্যাগুন্যাল ম্যাডফ্ল্যাট, কেয়া-নিশিন্দার ঝোপ, বিচিত্র প্রজাতির জলচর পাখি সোনাদিয়া দ্বীপের প্রধান বৈশিষ্ট্য।

ছবি: রবি চন্দ্রবিন্দু

সমুদ্র সৈকতের পাশ ঘেষে অবস্থিত সোনাদিয়ার সূ-উচ্চু বালিয়াড়ির তুলনা বাংলাদেশে নেই। সমুদ্র এবং সৈকত থেকে বালিয়াড়ির দৃশ্য অপূর্ব মনে হয়। সোনাদিয়ার সৈকত এবং বালিয়াড়ি বিপন্ন জলপাই বর্ণের সামুদ্রিক কাছিমের ডিম পাড়ার উপযোগী স্থান। এখানে সামুদ্রিক সবুজ কাছিমও ডিম পাড়তে আসে। সমুদ্র সৈকতের বেলাভূমিতে পানির কিনারা ঘেষে বিচরন করে লাল কাঁকড়া এবং প্যারাবন এলাকায় শীলা কাঁকড়া দেখতে পাওয়া যায়৷

সোনাদিয়ার লাল কাঁকড়া

এই দ্বীপে ২টি মসজিদ, ১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১টি সাইক্লোন সেন্টার, আনুমানিক ১২টি গভীর নলকূপ রয়েছে। স্থানীয় অধিবাসীদের মতে সোনাদিয়া দ্বীপে মানব বসতির ইতিহাস আনুমানিক দেড়শত বছরের।

দ্বীপের মানুষেরা মূলত দুইটি গ্রামে বসবাস করে: সোনাদিয়া পূর্বপাড়া এবং সোনাদিয়া পশ্চিমপাড়া। দ্বীপটির বর্তমান লোকসংখ্যা প্রায় এক হাজার সাত শত। মাছ ধরা, মাছ শুকানো এবং কৃষিকাজ এই দ্বীপবাসীর মূল পেশা। অনেকেই আবার তাদের জীবিকার জন্য চিংড়ির পোনা ও শামুক-ঝিনুক সংগ্রহের মতো পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের জন্য ক্ষতিকর কাজে নিয়োজিত থাকতে দেখা যায়।

কিভাবে যাবেন:

কক্সবাজার ৬ নং ঘাট থেকে রিজার্ভ বোটে করে সরাসরি সোনাদিয়া চলে যাওয়া যায়৷ ৬০০০ টাকার মত লাগে৷ একটু দরদাম করে নিতে হয় বোট৷ আবার লোকাল স্পীড বোটে করে মহেশখালী গিয়ে সেখান থেকে সিএনজি বা টমটমে করে ঘটি ভাঙ্গা ঘাটে গিয়ে লোকাল গামবোটে করেও সোনাদিয়া যাওয়া যায়৷

কক্সবাজার থেকে স্পীড বোটে বর্তমানে জনপ্রতি ১০০ টাকা করে নেয়৷ আর রিজার্ভ টমটম ২৫০-৩০০ টাকা নেয় ঘটি ভাঙ্গা পর্যন্ত৷ একটা টমটমে ৭ জন বসতে পারে৷ পিছনে ৬ জন আর সামনে ড্রাইভারের পাশে ১ জন ৷ ঘটি ভাঙ্গা ঘাট থেকে লোকাল গামবোটে সোনাদিয়া পর্যন্ত জনপ্রতি ৩৫-৪০ টাকার মত নেয় ৷

বিঃ দ্রঃ : যেখানেই ঘুরতে যান , পরিবেশের প্রতি সচেতন থাকুন ৷ যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলে পরিবেশ নোংরা করবেন না ৷ আপনার আমার প্রচেষ্টাই পারে দেশটাকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে৷

হুমকির মুখে সীতাকুন্ড মীরসরাই ঝর্ণার ট্রেইল

হুমকির মুখে সীতাকুন্ড, মীরসরাই ঝর্না ট্রেইল

লকডাউন কিছুটা শিথিল হবার পরই পর্যটকদের চাপে এবং বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্সীগুলোর নিয়ম, নীতি বহির্ভূত কর্মকান্ডে সীতাকুন্ড এবং মিরসরাই ঝরণার ট্রেইলগুলো মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে।

হুমকির মুখে সীতাকুন্ড মীরসরাই ঝর্ণার ট্রেইল
হুমকির মুখে সীতাকুন্ড মীরসরাই ঝর্ণার ট্রেইল

পর্যটকদের ব্যবহৃত চিপস, প্লাস্টিকের ক্যান, বোতল, খাবারের উচ্ছিষ্ট যত্রতত্র ফেলার দরুণ এসব ট্রেইলের প্রাকৃতিক পরিবেশ মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে। স্হানীয় অধিবাসীরাও আক্ষেপ প্রকাশ করছেন ট্রাভেলারদের এমন বিবেকহীন কর্মকান্ডে।

মীরসরাই সিতাকুন্ডের রায় প্রতিটা ঝর্ণার ট্রেইলই এখন পানিতে টইটম্বুর। এমতাবস্হায় বিভিন্ন ট্রাভেল গ্রুপ গুলো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ট্যুর অর্গানাইজ করছে, এবং এসব গ্রুপের অনেক ট্রাভেলাররাই পরিবেশ রক্ষায় সচেষ্ট নন।

হুমকির মুখে সীতাকুন্ড মীরসরাই ঝর্ণার ট্রেইল

এই বিষয়ে ব- দ্বীপ পরিবার যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।

বি:দ্র: বাংলাদেশের প্রকৃতি আপনার আমার সবার। প্রকৃতির প্রতি যত্নবান ইউন।

গুমাই বিল, রাঙ্গুনিয়া

গুমাই বিল | রাঙ্গুনিয়া

চট্টগ্রামের শস্যভাণ্ডার খ্যাত রাঙ্গুনিয়ার গুমাই বিল মূলত কর্ণফুলী নদীর বিধৌত উর্বর ভূমি। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধানের গোলাখ্যাত গুমাই বিল উৎপাদন ও অর্থনীতির গতি প্রবাহ আজ চট্টগ্রামকে করেছে সমৃদ্ধ।

গুমাই বিলের উৎপাদিত মোট খাদ্য এলাকার চাহিদা মিটিয়ে জাতীয় খাদ্য চাহিদাও করছে সমৃদ্ধ। দেশের বৃহত্তম চলন বিলের পর বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রাঙ্গুনিয়ার এই গুমাই বিলের মোট আবাদি জমির পরিমান ২ হাজার ৪’শ হেক্টর। কর্ণফুলী নদী বিধৌত উর্বর ভূমি যা এই বিলের পলিবাহিত জমি উর্বরতার কারণে প্রতি বছর বিপুল পরিমান ফসল উৎপাদন করছে।

গুমাই বিল, রাঙ্গুনিয়া, ছবি – জাকির হোসেন

গুমাইয়ের সাথে রাঙ্গুনিয়াবাসীর সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়। গুমাই এক সময় ঝিল আকারে থাকলেও রাঙ্গুনিয়ার উপর দিয়ে বয়ে চলা কর্ণফুলী নদী এবং গুমাইয়ের কুলে নেমে আসা প্রচুর পাহাড়ী ঝর্ণা, ছড়া ও ঝর্ণাবাহিত পলি এবং পলি বালি মিশ্রিত স্রোতধারা পরিকল্পিতভাবে প্রবাহের ব্যবস্থা করে রেখেছে গুমাইয়ের বুকে। বাইনালার ছড়া, সোনাইছড়ি, মুন্দরী, কুরমাই, ইছামতি, বারঘোনিয়া, ঘাগড়া হ্রদ খাল ও গুট্টাকার খাল গুমাইতে প্রবাহিত করা হয়।

গুমাইয়ের ঝিলে পলি-বালি জমে একসময় চাষাবাদের উপযুগি হয়ে উঠলে রাঙ্গুনিয়ার কৃষকরে তাতে কৃষিপণ্য চাষবাদ করা শুরু করে। পরবর্তীতে উক্ত গুমাই বিল হয়ে উঠে দেশের শস্য ভান্ডার হিসেবে যা এখন দেশের অর্থনীতিকে করছে সমৃদ্ধ ও রাঙ্গুনিয়ার কৃষি অর্থনীতিতে সার্বিক উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রাখছে।

বর্তমানে প্রধান সড়ক সংলগ্ন জমি ভরাট করে তোলা হচ্ছে নানা স্থাপনা। এমনকি ইট ভাটাও তৈরি হয়েছে এখানে। এ অবস্থায় ঐতিহ্য হারাতে বসেছে ঐতিহ্যবাহী এই বিল।

August 04, 2020

ছবি ও লেখা: Zakir Hossain

দয়া করে শঙ্খিনি বা শাখামুটি বা Banded Krait সাপ মারবেন না

দয়া করে শঙ্খিনি বা শাখামুটি বা Banded Krait সাপ মারবেন না

ছবির সাপটির নাম শঙ্খিনি বা শাখামুটি বা Banded Krait। ভয়ংকর নিউরোটক্সিন বিষ আছে এর। মজার ব্যাপার এ সাপের কামড়ে গত ২০ বছরে কারো মরার রেকর্ড নাই। কারন এই সাপ মানুষ দেখলে পালিয়ে যায় এমনকি আঘাত করলেও অ্যাটাক করেনা।

তবে হ্যা, আপনি নিজ থেকে বিরক্ত করলে শুধু শুধু, আপনাকে কামড় দিবে।

এটা বাংলাদেশের সবচেয়ে উপকারী সাপ। এটা একমাত্র সাপ বাংলাদেশের যা রাসেল ভাইপারসহ বাংলাদেশের যেকোন বিষাক্ত সাপকে খেয়ে ফেলতে পারে। জীঁ ঠিকই পড়েছেন। আবার পড়ুন, এই সাপ রাসেল ভাইপারকেও খেয়ে ফেলতে সক্ষম।

ছবিতে ব্যান্ডেড ক্রেইট রাসেল ভাইপার দিয়ে নাস্তা করছে

মানুষ ভয়ংকর ভাবে গত দশ বছরে এই সাপটাকে এতো বেশী মেরে ফেলছে যে এটার পরিমান কমে গেছে, ফলে এর খাবার রাসেল ভাইপার বৃদ্ধি পেয়েছে। গত এক দেড় বছরে বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি জেলায় রাসেল ভাইপার পাওয়া গেসে। এবং বন্যার জন্য বর্তমানে এর উৎপাতের মাত্রা বেশ উর্দ্ধমুখী।

আজ থেকে পাঁচ বছর আগেও বাংলাদেশে রাসেল ভাইপারের আনাগোনা ছিলো না, ছিল না এর কোন রিপোর্টিং কেস। কিন্তু বর্তমানে দর্শনীয় স্থানগুলোতে এই সাপের আনাগোনা বেশ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ট্রাভেলারদের কাছ থেকেও ব্যাপক মাত্রায় রাসেল ভাইপারের রিপোর্টিং কেস পাওয়া যাচ্ছে।

পড়ুন: এবার পাওয়া গেলো রাসেল ভাইপার

ধারণা করা হয় বন্যার পানির সাথে ভারত থেকে আসছে এই টপ গ্রেডেড বিষাক্ত সাপটি। রাসেল ভাইপার এতটাই বিষাক্ত যে এর এক ফোটা টক্সিন দিয়ে কমপক্ষে একশত জনকে মেরে ফেলা যাবে, সময় লাগবে হাতেগোনা কয়েক মিনিট। অর্থাৎ এই সাপ আপনাকে হসপিটালে যাওয়ার সময়টুকুও দিবেনা। বলা বাহুল্য, অন্য সাপ বছরে ১০/১৫ টা ডিম দেয় তবে রাসেল ভাইপার বা চন্দ্রবোড়া ৪০ থেকে ৬০টি বাচ্চা দেয়। তবে কোনো কোনো চন্দ্রবোড়া সাপের ৭৫টি পর্যন্ত বাচ্চা দেয়ার রেকর্ড আছে।

দয়া করে এই ব্যান্ডেড ক্রেট সাপ টা মারবেন না, এটা উপকারী সাপ। সরকারের উচিত আইন করে এটা মারা বন্ধ করা। আপনার যদি সাপ মারতে বা বিরক্ত করতে ভালো লাগে, রাসেল ভাইপারকে চেষ্টা করে দেখতে পারেন।

আরেকটা কথা, রাসেল ভাইপার মানুষ দেখলেই আক্রমণ করতে পছন্দ করে। অনেকটা লোহা আর চুম্বকের মত। রাসেল ভাইপার পাহাড়ি এলাকার সাপ হলেও এখন বন্যার পানিতে সারা দেশে এদের বংশবৃদ্ধি হচ্ছে। দেশে ইদানীং অনেক মানুষ রাসেল ভাইপারের আক্রমণে মারা যাচ্ছে তার মূল কারন কমন ক্রেইটের সংখ্যা কমে যাওয়া। তাই শঙ্খিনি সাপকে মানুষের বন্ধু ভেবে এদের বংশবৃদ্ধি করতে সহায়তা করুন।

আসুন একটু ইকোলজিকাল ব্যালান্স নিয়ে চিন্তা করি এবং চারপাশের ইকোলজিকাল ব্যালান্স সংরক্ষন করি। দেখবেন প্রকৃতি আপনাকে দুহাত ভরে দিবে। হয়ত আজকের এই করোনা মহামারিও কোন ইকোলজিকাল ইমব্যালান্সের ফল।

তথ্যসূত্র : সাদা এপ্রোণ

এবার গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকতে দেখা মিললো তীব্র বিষধর ‘রাসেল ভাইপার‘ সাপ

গতকাল চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডের গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকতে রাসেল ভাইপারের দেখা মিলেছে।  পৃথিবীর ৫ম বিষধর সাপ এই রাসেল ভাইপার, আক্রমণে বিশ্বে ১ম ( মতান্তরে দ্বিতীয় )।

রাসেল ভাইপার

অর্থাৎ সামান্য বিরক্ত হলেই এরা নিজে থেকে ছুটে এসে টার্গেট কে আক্রমণ করে। বিষ প্রয়োগে সময় নেয় মাত্র ১/১৬ সেকেন্ড। দাঁত অনেক গভীর এবং সূঁচালো। তেমন কোনো কার্যকরী এন্টিভেনম নেই। মৃত্যুর কারণ – DIC, Thrombosis and necrosis. রক্তকে জমাট বাঁধিয়ে অতি দ্রুত মৃত্যু নিশ্চিত করে এই রাসেল ভাইপার।

রাসেল ভাইপার

আক্রান্ত ক্ষতস্হানে পঁচন ধরে অর্থাৎ muscle necrosis হয়ে যায়। এন্টিভেনম ফেল্যুর হবার মূল কারণ ভাইপারের হিমোটক্সিনের কারণে অতিদ্রুত রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়া।

বাংলাদেশে শঙ্খিনী সাপ ( ব্যান্ডেড ক্রেইট )কমে যাওয়া ( মানুষ কর্তৃক নিধন ) রাসেল ভাইপারের প্রাকৃতিক প্রজনন হুহু করে বাড়িয়ে দিয়েছে। শঙ্খিনী সাপের মূল খাদ্যই ছিলো এই রাসেল ভাইপার। বিগত ২৫ বছরে বাংলাদেশে রাসেল ভাইপার একপ্রকার বিলুপ্তই ছিলো বলে ধরা যায়।

বন্যার কারণে উজান থেকে (ভারত) থেকে প্রচুর পরিমাণে রাসেল ভাইপার বাংলাদেশে চলে এসেছে। অন্যান্য সাপ যেখানে সর্বোচ্চ ২০-৩০ টা ডিম পাড়ে, সেখানে রাসেল ভাইপার ডিম তো পাড়েই না – উপরন্তু ৬০-৮০ টা বাচ্চা ফুটায় একসাথে। বিশেষ করে পদ্মা , মেঘনা এবং যমুনার অববাহিকায় , চর এলাকা এখন রাসেল ভাইপারের জন্য উপযুক্ত বংশবৃদ্ধির স্হান বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। ট্রাভেলার Adnan Jubaid ভাই নিশ্চিত করলেন – খাগড়াছড়িতেও এই রাসেল ভাইপারকে দেখেছেন তিনি।

রাসেল ভাইপার

যারা চরে, পাহাড়ে ট্রাভেল করেন, আগানে বাগানে ঘুরাঘুরি করতে পছন্দ করেন, তাঁবু টাঙিয়ে ঘুমিয়ে থাকেন যেখানে সেখানে – একটু সাবধানী হয়ে যান প্লিজ।

(ছবি – Al Rakib, গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত , সীতাকুন্ড থেকে)

পড়ুন: শঙ্খিনী সাপ মারবেন না

বটবৃক্ষ কালীগঞ্জ ঝিনাইদহ

এশিয়ার সবচেয়ে বড় বটবৃক্ষ ঝিনাইদহের মল্লিকপুরে।

ঝিনাদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলা শহর থেকে চিকন পিচের রাস্তা মল্লিকপুর ছুঁয়েছে। ১২ কিলোমিটার এগিয়ে গেলে চোখে পড়বে সবুজের পাহাড়। যে সবুজের শেষ নেই। এটি সুইতলা মল্লিকপুরের বটগাছ। ৮নং মালিয়াট ইউনিয়নের বেথুলী মৌজায় বর্তমানে ১১ একর জমি জুড়ে রয়েছে এর অস্তিত্ব। এর উচ্চতা আনুমানিক ২৫০ থেকে ৩০০ ফুট। বর্তমানে বটগাছটি ৫২টি বটগাছে রূপ নিয়েছে।

বিবিসির জরিপে ১৯৮৪ সালে এশিয়া মহাদেশের বৃহত্তম খ্যাত এ বটগাছের অবস্থান ও নামকরণ নিয়ে রয়েছে নানা জটিলতা এবং রয়েছে কিংবদন্তী। কারও কাছে সুইতলার বটগাছ, কারও কাছে সুইতলা মল্লিকপুরের বটগাছ আবার কারও কাছে বেথুলীর বটগাছ বলে এটি পরিচিত।

বিবিসির জরিপে একে এশিয়ার সবচেয়ে বড় বটগাছ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। আর ২০০৯ সাল থেকে সামাজিক বন বিভাগ যশোর এ বটগাছটির ব্যবস্থাপনা করে আসছে।

গাছটির উৎপত্তি সম্পর্কে স্থানীয়রা কোনো সুনিদির্ষ্ট তথ্য দিতে পারেনি, তবে প্রায় দুইশ’ থেকে তিনশ’ বছর পুরোনো বলে ধারণা করা হয়। গাছটি কে বা কারা লাগিয়েছে তার কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য কেউ না দিতে পারলেও জানা যায়, এখানে আগে কুমারদের বসতি ছিল। কুমার পরিবারের কোনো একটি কুয়োর মধ্যে আজকের বটগাছটির জন্ম। স্থানীয়দের মুখে গাছটি সম্পর্কে কথিত আছে ক’বছর আগে কুদরতউল্লা নামে একজন গাছের ডাল কাটলে অসুস্থ হয়ে পড়ে। শুরু হয় রক্তবমি। কুদরতের স্ত্রী বট গাছ আগলে ধরে কান্নাকাটি করে। স্বামীর প্রাণ ভিক্ষা চায়। অবশেষে তার স্বামী সুস্থ হয়ে ওঠে। এ রকম অনেক গল্প মল্লিকপুরবাসীদের কাছে শোনা যায়।

বিস্তৃত বটগাছটির দৃষ্টিনন্দন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, পাখির কলরব, ছায়াঘেরা শীতল পরিবেশ মুগ্ধ করে দর্শনার্থীদের।

লিখা ও ছবি: রবিন ফয়সাল

মাধবকুণ্ড

জলপ্রপাত বলতে দেশে একটা সময় কেবল মাধবকুন্ড ঝর্ণার নামডাক ছিল। তবে বর্তমানে অনান্য কয়েকটি স্থানে বিশেষত পাবর্ত্য অঞ্চলে আরো বেশ কিছু ঝর্ণার সন্ধান পাওয়া গেছে। তবে এখনো মাধবকুন্ড দেশের অন্যতম বৃহৎ জলপ্রপাত। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি সিলেটে বেড়াতে এসে মাধবকুন্ডে ভ্রমণ করেননি এরকম লোকের সংখ্যা হাতেগোনা। পাথারিয়া পাহাড়ের বুক জুড়ে বয়ে চলা মাধবকুন্ড সহ এখানকার সুউচ্চ পাহাড়, পাহাড়ী অরণ্য, ঝিরি-ছড়া, কমলা-লেবু ও চা বাগানের শান্ত-স্নিগ্ধ ছায়াময় সুনিবিড় প্রকৃতি হাতছানি দেয় বারে বারে। ‘এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি’ মাধবকুন্ডে এসে মনে হবে কবির এই অনন্য চরন আসলেই সার্থক।

পাথারিয়া পাহাড়ের প্রায় দুই শতাধিক ফুট ওপর হতে অবিরাম বর্ষণে জলরাশি নিচে পতিত হওয়ার ফলে সৃষ্টি হয়েছে মাধবকুন্ড। এই কুন্ডের প্রবাহমান স্রোতধারা উচ্ছল বালিকার মত মাধবছড়া হয়ে ছুটে যাচ্ছে দূর হতে বহুদূরে। পৌরাণিক যুগে এই মাধবছড়া ও কুন্ডের নাম ছিল গঙ্গামায়া। সময়ের বিবর্তনে তা পরিবর্তিত হয়ে ওপরের ছড়ার নাম মাধবছড়া এবং নিচের দিকটা মাধবকুন্ড হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।

মাধবকুন্ডের নামকরণ নিয়ে নানান কথা প্রচলিত আছে। তবে সবচে’ নির্ভরযোগ্য তথ্যটি হল, শ্রীহট্রের রাজা গঙ্গাধ্বজ বা গোধ্বর্ন পাথারিয়া পাহাড়ে একটি বিশ্রামাগার নিমার্ণ করতে গেলে সেখানে মাটির নিচে ধ্যানমগ্ন একজন সন্যাসি দেখতে পান। ঐ সন্যাসী ঝর্ণায় বিসর্জিত হওয়া মাত্র তিনবার মাধব-মাধব-মাধব দৈববানী উচ্চারিত হয়। ধারণা করা হয় এই দৈববানী থেকেই মাধবকুন্ড নামের উৎপত্তি হয়েছে।

মৌলভীবাজার জেলার পাহাড়-অরণ্য, হাওর, চা বাগান অধ্যুষিত উপজেলা বড়লেখা। এর পূর্ব সীমান্তে মাথা উঁচু করে দাড়িয়ে পাথারিয়া পাহাড় দেয়ালের মত বড়লেখাকে প্রতিবেশী আসাম হতে আড়াল করেছে। পাথারিয়া পাহাড়ই মাধবকুন্ডের উৎসস্থল। পাহাড়ের গা জুড়ে গাছগাছালি, লতাগুল্ম ঢাকা সবুজের আচ্ছাদন। প্রকৃতির নিগূঢ় খেয়ালে এরই ভেতর দিয়ে বয়ে গেছে পাহাড়ী ঝর্ণা। মাধবছড়ার নিস্ক্রান্তি বা শেষ পতন অংশটিই মাধবকুন্ড জলপ্রপাত।

মাধবকুন্ডের প্রকৃত রূপ উদ্ভাসিত হয় বর্ষা মৌসুমে। এই সময়ে ঝর্ণার বিস্তৃতি থাকে সবচেয়ে বেশি। ঝর্ণার পতনস্থল থেকে ছুটে আসা শোঁ শোঁ শব্দ আর বিন্দু বিন্দু জলের কুঁয়াশা মিলে সৃষ্টি হয় এক স্বপ্নীল পরিবেশের। বিন্দু বিন্দু কুঁয়াশার বৃষ্টি যখন আপনাকে ভিজিয়ে দেবে তখন চোখ বুঁজে তন্ময় হয়ে চলে যাবেন অন্য কোন জগতে।

মাধবকুন্ডও তৎসংলগ্ন এলাকায় এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি থাকে। বার্ষিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৩৯০০ মি.মি. হয়ে থাকে। এ সময় কখনো কখনো ঝর্ণার স্ফীতি এত বড় আকার ধারণ করে যে, আপনার মনে হবে নায়াগ্রার পাশে দাড়িয়ে আছেন কিনা! ঝর্ণার পূর্ণ যৌবন পর্যটকদের জন্য অনাবিল আনন্দ, তৃপ্তি আর অ্যাডভেঞ্চার বয়ে আনে।

মাধবকুণ্ড
মাধবকুণ্ড, ছবি – শেখ রাফি

মাধবকুন্ডের একটি অন্যতম আর্কষণ হচ্ছে এর পাথরের গুহা। প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট এই পাথরের গুহাটি কুন্ডের ডানপাশে অবস্থিত। স্থানীয় অধিবাসীরা এ গুহাকে ‘কাব’ বলে থাকে। আলো-আঁধার মাখা গুহার ভেতরে সাহস করে ঢুকে গেলে মনে হবে পাথারিয়ার হাজার হাজার টন পাথর বুঝি এই চাপা দিল!

ফ্লাইওভার এর মত গুহাটি ওপরের মত ওঠে গেছে। অনেকের কাছেই অজানা আরেকটি ঝর্ণা আছে মাধবকুন্ডের ওপরে পাথারিয়ার জঙ্গলে। এর নাম পরীকুন্ড ঝর্ণা। নামের সাথে পরী থাকলেও পরীরা ওই ঝর্ণায় নামতো কিনা তা অবশ্য জানা যায়নি!

দূর্গম অবস্থান ও গহীন জঙ্গলের কারণে সাধারণের পক্ষে পরীকুন্ডের সন্ধান খোঁজ করা দুরুহও বটে। তবে অতি উৎসাহী অ্যাডভেঞ্চার প্রিয়রা স্থানীয় গাইডের সাহায্য নিতে পারেন। শ্যাওলা ঢাকা পিচ্ছিল ট্রেইল বলে সাবধান! মাধবকুন্ডের এই সংরক্ষিত বনাঞ্চলের কিছু এলাকা নিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে মুরাইছড়া ইকোপার্ক। মাধবকুন্ডে যাবার পথে পাহাড়-টিলাময় সবুজ অরণ্যের মাঝে চোখ জুড়াবে খাসিয়া আদিবাসীদের পুঞ্জি। জয়ন্তিয়া পাহাড় থেকে আগত খাসিয়ারা সিলেটের অনান্য পাহাড়ী এলাকাার মত এখানে ও বসত গড়ে তোলেছে। পুঞ্জিতে গিয়ে পরিচিত হতে পারেন তাদের জীবন-জীবিকা, সংস্কৃতি ও আচার-অনুষ্টানের সাথে। তবে এক্ষেত্রে নম্রতা ও ভিন্ন জীবনধারা ও সংস্কৃতির প্রতি সম্মান প্রদর্শন অবশ্য কাম্য।

মাধবকুন্ডে যাবার পথে রাস্তার পার্শ্ববর্তী টিলাগুলোতে রয়েছে তরে তরে সাজানো চোখ জুড়ানো চা বাগান। জলপ্রপাতের পাশাপাশি চা বাগানও বেড়ানোর অন্যতম উপকরণ। মাধবকুন্ড সংলগ্ন এলাকায় কমলা বাগানও রয়েছে। সংখ্যায় কম হলেও এই কমলা বাগানগুলো যে কোন ভ্রমণার্থীর চোখ জুড়াতে সক্ষম।

পর্যটনের পাশাপাশি মাধবকুন্ড ধর্মীয় ক্ষেত্রেও সমগুরুত্বপূর্ণ। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে মাধবকুন্ড অত্যন্ত পবিত্র স্থান। এখানে প্রায় ৬০০ বছরের প্রাচীন দুইটি শিবমন্দির রয়েছে। প্রতি বছর ফাল্গুন মাসে শিব চতুর্দশী পূর্ণিমা ও চৈত্র মাসের ৭-৮ তারিখ বারণীকালে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন এখানে উৎসব পালন করেন। শিবপুজা, মধুকৃষ্ণ, ত্রয়োদশী স্নান ও মেলা এই উৎসবের মূল্য উপজীব্য।

মাধবকুন্ডের উত্তর দিকে পাথারিয়া পাহাড়ে রয়েছে একটি তেলকূপ। বার্মা অয়েল কোম্পানী (বিওসি) এই পাহাড়ে গড়ে তোলেছিল একটি তেল উৎপাদনকেন্দ্র। কিন্তু উৎপাদন করতে গিয়ে অদক্ষতার কারণে তারা এর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। পরে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি দিয়ে মুখ বন্ধ করে রাখা হয়। বর্তমানে এটি পরিত্যক্ত হিসেবে পড়ে আছে।

মাধবকুন্ডে বেড়াতে যেতে চাইলে সবচেয়ে সহজ পথ ঢাকা হতে বিয়ানীবাজারগামী বাসের যাত্রী হওয়া। নেমে যেতে হবে বড়লেখার কাঁঠালতলী বাজারে। এছাড়া ট্রেনে কুলাউড়ায় নেমেও বাকি পথ বাসে বা সিএনজি অটোরিক্সাতে যাওয়া যাবে।

এক সময়ের দূর্গম, অরণ্য ঢাকা হিংস্র জন্তুর হুংকারে প্রকম্পিত মাধবকুন্ড এখন রুপ নিয়েছে নতুন এক মাধবকুন্ডে। এখানে রয়েছে ইকোপার্ক, ওয়াচ টাওয়ার, ডাকবাংলো, হোটেল-রেস্টহাউজ সহ পর্যটনের নানান সুবিধা। পাহাড়ি আঁকাবাঁকা পথে ঝর্ণার গান শুনতে চাইলে যেতে পারেন মাধবকুন্ডে। ঝর্ণার স্রোতের উচ্ছাসময় আহবানে হাতছানি দিয়ে ডাকছে মাধবকুন্ড।

লেখাঃ শিমুল খালেদ
ছবিঃ শেখ রাফি

ইদ্রাকপুর কেল্লা, মুন্সীগঞ্জ

ইদ্রাকপুর কেল্লা মুন্সীগঞ্জ জেলার মুন্সীগঞ্জ শহরে অবস্থিত একটি মোঘল স্থাপত্য। বাংলার সুবাদার ও সেনাপতি মীর জুমলা ১৬৬০ খ্রীস্টাব্দে বর্তমানে মুন্সীগঞ্জ জেলা সদরে তদানীন্তন ইছামতি নদীর পশ্চিম তীরে ইদ্রাকপুর নামক স্থানে এই দুর্গটি নির্মাণ করেন।

দুর্গটি নারায়নগন্জের হাজীগঞ্জ ও সোনাকান্দা দুর্গের চেয়ে আয়তনে কিছুটা ছোট। ৮২ মি.×৭২ মি. আয়তাকার নির্মিত ইটের তৈরি এই দুর্গটি তৎকালীন মগ জলদস্যু ও পর্তুগিজ আক্রমণের হাত থেকে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জসহ সমগ্র এলাকাকে রক্ষা করার জন্য নির্মিত হয়।

সুরঙ্গপথে ঢাকার লালবাগ দুর্গের সাথে এইদুর্গের যোগাযোগ ছিল বলে একটি জনশ্রুতি প্রচলিত আছে। সুউচ্চ প্রাচীরবিশিষ্ট এই দুর্গের প্রত্যেক কোনায় রয়েছে একটি বৃত্তাকার বেষ্টনী।

দুর্গাভ্যন্তরথেকে শত্রুর প্রতি গোলা নিক্ষেপের জন্য প্রাচীরের মধ্যে অসংখ্য চতুষ্কোনাকার ফোঁকর রয়েছে একমাত্র খিলানাকার দরজাটির অবস্থান উত্তর দিকে।

মূলপ্রাচীরের পূর্ব দেয়ালের মাঝামাঝি অংশে ৩৩ মিটার ব্যাসের একটি গোলাকার উঁচু মঞ্চ রয়েছে। দূর থেকে শত্রুর চলাচল পর্যবেক্ষণের জন্য প্রায় প্রতি দুর্গে এই ব্যবস্থা ছিল।

এইমঞ্চকে ঘিরে আর একটি অতিরিক্ত প্রাচীর মূল দেয়ালের সাথে মিলিত হয়েছে। দুর্গের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সূদৃঢ় করার জন্য এটি নির্মিত হয়েছিল।

কেল্লাটিরতিন কিলোমিটারের মধ্যেই ইছামতী, ধলেশ্বরী, মেঘনা এবং শীতলক্ষা নদীর অবস্থান। মোঘল স্থাপত্যের একটি অনন্য কীর্তি হিসেবে ইদ্রাকপুর দুর্গটি ১৯০৯ সালে সংরক্ষিত পুরাকীর্তি হিসেবে ঘোষিত হয়।

লিখা ও ছবি: অরণ্য তন্ময়

ঐতিহাসিক সুরা মসজিদ ঘোরাঘাট উপজেলা, দিনাজপুর

৫৫০ বছরের পুরোনো ঐতিহাসিক সুরা মসজিদ, ঘোরাঘাট উপজেলা, দিনাজপুর।

স্থাপত্যশৈলী অনুযায়ী এটি হোসেন শাহী (খ্রি. ষোল শতক) আমলের নিদর্শন। সুরা মসজিদ অনেকে বলেন সুজা মসজিদ। এক গম্বুজবিশিষ্ট বর্গাকার মসজিদটি একটি উঁচু চত্বরের উপর নির্মিত। ইমারতটির বহির্গাত্রে গোলাপ ও অন্যান্য লতাপাতার নকশাখচিত পোড়ামাটির কারুকাজ আছে।

৫৫০ বছরের পুরোনো ঐতিহাসিক সুরা মসজিদ, ঘোরাঘাট উপজেলা, দিনাজপুর
৫৫০ বছরের পুরোনো ঐতিহাসিক সুরা মসজিদ, ঘোরাঘাট উপজেলা, দিনাজপুর।

ঘোড়াঘাট হিলি সড়কের ওসমানপুরের কাছেই চরগাজা মৌজায় মসজিদটি অবস্থিত। এই চরগাছাই/চোরগাছায় আছে প্রাচীন কুন্দারনগর। তথ্যানুসারে এখান রয়েছে বেশ কিছ প্রাচীন দিঘি। ধারণা করা হয় কুন্দারনগর নগরীটি সম্ভবত গুপ্তযুগের অর্থাৎ প্রায় দেড় হাজার বছর আগেকার । বলা হয়ে থাকে কুন্দারনপুর ছিলো গ্রীক ইতিহাসে বর্ণিত পেন্টাপলিস বা পঞ্চনগরীর একটি।

**ভ্রমন হোক পরিস্কার পরিচ্ছন্ন। যেখানে সেখানে ময়লা ফেলবেন না।**

লিখা ও ছবি: শহীদ আহমেদ রিমন

——একটা ডাক বাক্স ——-

——একটা ডাক বাক্স ——-

তাজরীনা সোহেলী

 

বুকের ভেতর ডাক বাক্সে জমা পড়ে আছে অনেকগুলো চিঠি…….

অসংখ্য অনুভূতি বাসা বেধেছে সেই চিঠিগুলোয়।
কখনো কালো, কখনো ধুসর
আবার কখনো রক্তাক্ত লাল সে রঙ।

চিঠিগুলো দিন দিন ফ্যাকাসে হয়ে যাচ্ছে
রঙ হারাচ্ছে প্রতিনিয়ত
অথবা যথার্থ মূল্যায়নের অভাবে আজ তারা নির্বাক।

ডাকবাক্সের সেই চিঠি প্রাপকের হাতে পৌছেনি আজও
হয়তো পৌছাবেও না কোনও দিন….
অথবা চিঠিরা খুঁজে পায়নি ঠিকানা।

বুকের ডাকবাক্সে পৌছানোর মতো মন
এখনো খুজে পাওয়া হয়ে ওঠেনি, অথবা—
চিঠি পড়ার মতো ধৈর্য্য হয়তো কারো মাঝে নেই।

এখন মানুষেরা আবেগহীন,অনুভূতিহীন দৈহিক আকারে সৃষ্টি….
আবার বলার ভাষা অথবা
বোঝার ভাষাগুলো হয়তো বদলে গেছে সময়ের সাথে সাথে।

তাই নোনাজলে লেখা চিঠির সঠিক মূল্যায়ন আদৌ হবে কিনা প্রশ্নটা না হয় রেখেই দিলাম…!!!

error: Content is protected !!