পাহাড়ে সকাল হয় একদম ভোরে। পাহাড়ের মানুষজন মোরগ ডাকা ভোরেই ঘুম থেকে উঠে কাজে লেগে যান।
গতদিন রাতে আমরা যখন খ্যামচং পাড়ায় প্রবেশ করি তখন পাড়ার বেশীরভাগ লোকেই ঘুমিয়ে পড়েছিলো। পাহাড়ের লোকজনের সুস্বাস্থ্যের অন্যতম মূল কারণ সময়মত ঘুম, এটা আমার ধারণা।
খ্যামচং পাড়ার লোকজন মুরং জাতি। এদের মেয়েরা সব কাজ করে। জুমে কাজে করা থেকে শুরু করে ঘরের যাবতীয় কাজ মেয়েরাই করে। পুরুষেরা বসে শুধু ঝিমায়!
সকাল ৬ টায় ঘুম ভেঙ্গে গেছে আমার। আগের দিনের বেশ খানিকটা শারীরিক ধকল যাওয়াতে ঘুমটা খুব ভালো হয়েছে। একদম ফ্রেশ ঘুম যাকে বলে।
অপু ভাই, শাকিল ভাইরা রাতে বারান্দায় খোলা আকাশের নীচে রাতে ঘুমাতে গিয়েছিলো কিন্তু ঠান্ডার জন্য মাঝরাতে ঘরের ভিতরে চলে আসতে বাধ্য হয়! আমার স্লিপিং ব্যাগটাকে খুব মিস করেছি এই ট্যুরে।
পাহাড়ে দিনে অনেক গরম লাগে কিন্তু রাতে আবার ঠান্ডা অনেক। কম্বল ছাড়া ঘুমানো যায় না। ঘরগুলোর মেঝে বাঁশের বেড়া দিয়ে তৈরী তাই ফাঁক থাকাতে নীচ দিয়ে ঠান্ডা লাগে বেশ। গত বছর থুইসা পাড়ায় প্যাডেড জ্যাকেট গায়ে দিয়ে তার উপর ৪ টা কম্বল গায়ে দিয়েছে ঘুমিয়েছিলাম। অনেক ঠান্ডা ছিলো তখন।
রাসেল তো রাতে জ্যাকেট পড়েই ঘুমাইছে। অর নাকি ঠান্ডার ফোবিয়া আছে। আমারো হালকা শীত লেগেছিলো কিন্তু আমি আবার একবার ঘুম দিলে দুনিয়ার কোনো খবর আমার থাকে না!
চোখ খুলে দেখি সবাই বেঘোরে ঘুমাচ্ছে শুধু হিমন দা ছাড়া। উনি মেইবি পাখির খোঁজে গেছেন।
পড়ে পড়ে ঘুমানো আমার আদতে নেই। তাছাড়া পাহাড়ের সকাল অনেক সুন্দর লাগে তাই সেটা মিস করতে চাই না।
ঘুম থেকে উঠার পরেই প্রাকৃতিক ডাকের আওয়াজ পেলাম। এই তো পরলাম এক মহা ঝামেলায়। গতবার এইটা নিয়ে একবার খুবই বাজে অভিজ্ঞতা হয়েছিলো ভাগ্যিস তখন তপন দা’র কাছে ওয়েট ইস্যু ছিলো কোনো রকমে বাঁচছিলাম। পূর্বের অভিজ্ঞতা থেকে তাই এবার ওয়েট টিস্যু নিয়ে আসছি।
খ্যামচং পাড়ায় টয়লেট আছে কিন্তু খুব একটা পদের না। হাতে বদনা নিয়ে নীচে নামার সময় কয়েকটা শুকর পিছু নিলো। শুরুতে তাদের এই পিছু নেয়াটা বুঝতে না পারলেও পরে বুঝলাম কেনো তারা পিছু হাঁটছে।
নাহ! এভাবে যাওয়া পসিবল না। তার উপর তিনদিকেই খোলা। কী যে বাজে অবস্থা! তাই ফেরত চলে আসলাম।
এসে অপু ভাইকে বলার পর উনি বললো লাঠি নিয়ে যান একটা। অপু ভাইয়ের বুদ্ধিতে কাজ হলো এবার। তবে শুঁচিবায়ু স্বভাবের কেউ থাকলে অবস্থা দেখলে তার নাওয়া খাওয়া বন্ধ হয়ে যাবে!
পাড়াটা একটু ঘুরে দেখলাম। খ্যামচং পাড়ায় পানির বেশ সংকট। নীচের ঝিরি থেকে পানি আনতে হয়৷ সত্যি বলতে পাহাড়ের জীবন আমাদের জন্য যতোটা এডভেঞ্জারাস লাগে পাহাড়িদের জন্য তা অনেক কষ্টকর।
বিগত কয়েক বছর ধরে ঝিরি থেকে নির্বিচারে পাথর উঠানোর কারণে ঝিরিগুলো এখন শুকনো মৌসুমে পানি থাকে না তেমন। এভাবে চলতে থাকলে অদূর ভবিষ্যতে বান্দরবানের ইকো সিস্টেম শেষ হয়ে যাবে।
আজকে রিলাক্স ডে। গতকালের ধকল সামলাতে সবাই একটু লম্বা সময় ধরে ঘুমাচ্ছে।
পেটে ক্ষুধা লাগছে বেশ। অপু ভাই আগের রাতের খিচুড়ি গরম করতে বসালো। সাথে ডিম মামলেট।
আমরা আজকে ক্রিসতং এর বনে ঘুরবো। সামিট করার কোন প্ল্যান নেই আমাদের। আমাদের পাশের রুমে ১২ জনের একটা দল ছিলো। তারা ক্রিসতং সামিট করতে যাবে। তারপরও অপু ভাই সবাইকেই বললো কেউ যদি ক্রিসতং সামিট করতে চায় তারা যেনো ঐ দলের সাথে যায়।
কেউই তেমন রেস্পন্স করলো না। তবে রাসেল যেতে চায় কিন্তু সে আমাকে ছাড়া ওদের সাথে যাবে না। আমি সামিট করবো না!
আমার এসব সামিট টামিট করা নিয়ে মাথাব্যাথা নেই। এসব সামিট আমার কাছে অহেতুক একটা মানসিক যন্ত্রণার মতো লাগে। আমার কাছে নিজের মানসিক শান্তি খুব জরূরী ইস্যু।
আমাকে এটা করতেই হবে, ঐটা করতেই হবে এমন বিলাসী মানুষ আমি কখনোই ছিলাম না। সাথের অনেকেই যখন দেখছি আরেকজনের সাথে কম্পিটিশান করে এগিয়ে যাচ্ছে, নিজেকে অমুক জায়গায় নেয়ার প্রতিযোগিতা করছে আমি তখন এসব থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখতাম সব সময়েই।
আমার কাছে সাকসেসফুল জীবনের চেয়ে সুখী জীবন বেশী গুরুত্বপূর্ণ। আর আমি মনে করি সুখী হতে গেলে খুব বেশী টাকার প্রয়োজন নেই, এতো প্রতিযোগিতারও কিছু নাই। বেশীরভাগ মানুষেই আরেকজনেরটা দেখে সুখে সুখী হতে চায়।
সুখ স্বতন্ত্র বস্তু। আমি যেটায় খুশি হবো অন্যজনের সেটা ভালো নাই লাগতে পারে। বেশীরভাগ মানুষের অসুখী হবার অন্যতম প্রধান কারণ অন্যের সুখ দেখে তার মতো করে সুখী হতে চাওয়া!
বান্দরবানে অনেকেই আসে পাহাড় সামিট করার জন্য। এই ক্রিসতং এ যারা আসে তাদের ৯০ ভাগেই আসে এজন্য। আমার ভাই ক্রিসতং এর বনেই ভালো লাগে। বিশাল গাছ আর এর বৈচিত্র্য দেখেই আমার সুখ।
আসিফ ভাই আর পাপ্পু দিদি পাড়াতেই থাকবে। তারা ক্রিসতং এর বনে যাবে না বললো। যেহেতু আমরা ক্রিসতং সামিট করবো না তাই আস্তে ধীরেই বের হলাম।
নাস্তা করে ডনের দোকানে বসে কিছুক্ষণ আড্ডা দিলাম। এক কাপ বার্মিজ কফি খেলাম। ডন আসলেই ডন। তা পরের দিন ম্যানিয়াং পাড়ার এক ঘটনায় টের পেলাম!
পাড়া থেকে বের হতে ৫ জনের একটা দলের সাথে দেখা। তারা নাকি রাত ১২ টায় পাড়ায় পৌঁছাইছে!!! এরাও ক্রিসতং সামিট করতে বের হইছে।
হেলেদুলে পথ চলা শুরু হলো। গতদিনের এতোটা পথ হাঁটার পরেও শরীরে তেমন একটা ব্যাথা নেই বলে আল্লাহর কাছে শুকুরিয়া আদায় করলাম।
ক্রিসতং মানেই আমার কাছে বিশাল সব মাদার ট্রি’র ছবি চোখে ভাসে। কত যে ভিডিও ব্লগ দেখেছি, লেখা পড়েছি ক্রিসতং নিয়ে তার হিসাব নেই।
অপু ভাই বললো ক্রিসতং এ এখন তেমন বড় গাছেই নেই। ২/৩ ভাগেই গাছেই কেটে ফেলছে গাছ খেকোরা। যা আছে তাই দেখবো এটাই মনের সাত্ত্বণা।
যত ভিতরে ঢুকছে তত জঙ্গল ঘন হচ্ছে। একটা বিশাল উঁচু মাদার ট্রির সামনে সবাই ছবি তুললাম। গাছটা এতো উঁচু যে বেশীক্ষণ ঘাড় বাঁকা করে দেখা যায় না, ঘাড় ব্যাথা হয়ে যায়।
কিছুক্ষণ পর একটা ভিউ পয়েন্ট এর কাছে আসলাম। এখানে প্রায় ৩০ মিনিট বসে বিশ্রাম নিলাম। মজার ব্যাপার হচ্ছে এখানে ৪ জি নেটওয়ার্ক পাওয়া যাচ্ছিলো। ভিউ পয়েন্টের নীচে হাজার ফুট খাঁড়া খাদ। দূরে বুসিং পাড়া দেখা যাচ্ছে। এক জোড়া জুম ঘর দেখতে পেলাম। বেশ সুন্দর। সচারাচর জোড়া জুমঘর দেখা যায় না।
বড় গাছ দেখতে হলে আরো ভিতরে যেতে হবে। তাই করলাম আমরা।
যত ভিতরে যাচ্ছি তত মুগ্ধ হচ্ছি। দুনিয়ার সৌন্দর্যে এত্ত মুগ্ধ হই জান্নাত দেখলে জানি কি করবো!
আমি ঠিক করে রাখছি জান্নাতে আল্লাহর কাছে একটা বিশাল বড় গাছ চাইবো যেই গাছের ডাল ছড়ানো থাকবে। সে গাছের কান্ডে একটা উড হাউজ বানাবো। উড হাউজে বসে বসে বই পরবো আর দূরের ঝরনার দিকে চশমার ফাঁক গলে মাঝে মাঝে তাকিয়ে পানির পড়ার শব্দ শুনবো।
এদিকে রাসেলের মন খারাপ! বেচারা ক্রিসতং সামিট করতে পারছে না। বাসায় নাকি বউয়ের কাছে ইজ্জত থাকবে না সামিট করতে না পারলে!!!
রাসেলের দিকে তাকিয়ে অপু ভাইকে উনার খুব অনিচ্ছা সত্ত্বেও রাজি করালাম ক্রিসতং যাওয়ার জন্য। অপু ভাইয়ের প্ল্যান ছিলো আমরা শুধু বনে ঘুরবো! আমারও তাই প্ল্যান ছিলো।
জুমের পথ ধরে ক্রিসতং সামিট করতে হাঁটা শুরু করলাম। রাসেলকে শর্ত দিলাম আমি তার সাথে যাবো ঠিক আছে তবে দ্রুত হাঁটতে হবে।
পথে আরেকটা চমৎকার ভিউ পয়েন্ট পরলো। মন চাইছিলো ওখানেই বসে সময় পার করে দেই। কিন্তু তা সম্ভব না। ক্রিসতং সামিট করে আবার ম্যানিয়ং পাড়ায় যেতে হবে। সময় কম।
যাবার সময় প্রথম দলের সাথে দেখা হলো। তারা মাত্র সামিট পয়েন্ট থেকে ফিরছে। অপু ভাই আর শাকিল ভাই সামিট করবে না। আমরা বাকী ৪ জন দ্রুত পা চালালাম।
শুকনো পাতার পা মাড়ানো খসখসে আওয়াজকে উপেক্ষা করে দ্রুত হাঁটছি। ক্রিসতং সামিট থেকে অল্প কিছু দূরেই একটা বিশাল মাদার ট্রি পরলো। ক্রিসতং এর এসব মাদার ট্রি’র বয়স ১০০/২০০ বছর ভাবা যায়। এটাই এই বনে আমার দেখা সবচেয়ে উঁচু গাছ।
অবশেষে ক্রিসতং চূড়ায় উঠলাম। ২৯০০ ফুট উঁচু প্রায়। কিছুক্ষন থেকে ছবি তুলে নামা শুরু করলাম।
অপু ভাইদের রেখে ওই ভিউ পয়েন্ট থেকে ক্রিসতং এর চূড়ায় আসতে ৪৫ মিনিট লেগেছিলো। আসতে লাগছে মাত্র ২০ মিনিট।
এবার সবাই মিলে খ্যামচং পাড়ার পথ ধরলাম। ক্রিসতং কে ছেড়ে আসতে খুব খারাপ লাগছিলো। এখনো অনেক সুন্দর সে। জানি না আর কতদিন সে এমন থাকতে পারবে।
পাড়ায় এসে বাকীরা দুপুরে খিচুড়ী খেলেও আমি খেলাম না। খিচুড়ি খেয়ে ট্রেকিং করা কষ্টের।
এবার উদ্দেশ্য ম্যানিয়ং পাড়া। রওনা দিতে দিতে বিকাল ৫ টা বেজে গেছে। দুই পাড়ার মাঝের পথ অনেএএক সুন্দর। অনেক!
রুংরং পাহাড়কে হাতের বামে রেখে লাইন ধরে ট্রেকিং করছি আমরা। ইতিমধ্যে সূর্য ডুবে গেছে। হালকা আলো আছে।
রাসেল, হিমন দা, অমিক তারা রুংরাং সামিট করবে। আমাকে বলছিলো যাবো কিনা? আমি মানা করে দিয়েছি।
তাদের তিন জনকে তাই আগে পাঠিয়ে দিলাম। ম্যানিয়ং পাড়ার পথে রুংরাং চূড়া পরবে।
ওদের পিছনে আমরাও হাঁটতে লাগলাম। কিছুদূর হাঁটার পর ম্যানিয়ং পাড়ার গেটেই রাসেলদের সাথে দেখা হয়ে গেলো। অপু ভাই বললো এখান থেকে নাকি ৫ মিনিট লাগবে রুংরাং এর চূড়ায় উঠতে। একথা শুনে শাকিল ভাই আর আমিও গেলাম অপু ভাইদের রেখে। কিন্তু কিছুদূর যাবার পর অন্ধকার হয়ে গেছে প্লাস হেডল্যাম্পের চার্জ শেষ হয়ে যাওয়ায় আমি ব্যাক করে চলে আসি। চূড়ায় উঠে যদি কোন ভিউই না পাই সে চূড়ায় উঠার দরকার নাই!
রাত নেমে গেছে। ওয়াই জংশনে বসে আমরা যারা রুংরাং সামিটে যাই নি তারা মিলে গল্প জুড়ে দিলাম। ব্যাগের উপর ক্লান্ত শরীরটাকে ছেড়ে দিয়ে ঘোর অন্ধকারে দূর আকাশের মিটমিটি তারাগুলোকে দেখতে লাগলাম। মাঝে মাঝে মনে হয় কিছু সময়কে বেঁধে রাখতে পারতাম!
প্রায় ৩০ মিনিট পর রাসেলরা ব্যাক করলো। এদিকে ব্যস ঠান্ডা বাতাস গা ছুঁয়ে যাচ্ছিলো। গায়ের পাতলা টিশার্ট তা ঠেকানোর ক্ষমতা নাই। আর ব্যাগ থেকেও জ্যাকেট বের করতে ইচ্ছে হচ্ছিলো না।
খুব দ্রুত পা চালালাম। আমি আর অপু ভাই সবার আগে। এখন শুধু নীচে নামা। মোবাইলের ফ্ল্যাশ লাইট জ্বালিয়ে খুব দ্রুত দুজনে নামছি। প্রায় ২০/২৫ মিনিট নামার পর পাড়ার ঘরের আলো দেখতে পেলাম।
আগে থেকেই অপু ভাই রাতে থাকার জায়গায় ঠিক করে রেখেছিলেন। আমরা ম্যানিয়ং পাড়ার কারবারী ছেলে “খনরুই” এর ঘরে রাতে থাকবো।
খনরুইয়ের ঘরে ঢুকেই তাজ্জব হয়ে গেলাম!! ২২ ইঞ্চি এলইডি টিভি দেখে! তাতে চাইনিজ মুভি দেখেছে পাড়ার লোকজন! সম্ভবত পেন ড্রাইভে করে দেখছে!
শরীর ক্লান্ত! বেড়ার মেঝেতে গা এলিয়ে শুয়ে পরলাম। বাকীরা আসুক। অপু ভাই গেছে মুরগীর খোঁজে।
মিনিট বিশেক পর দলের বাকীদের গলার শুনে বাইরে এসে ডাক দিলাম। সবাই আসার পর সিদ্ধান্ত নিলাম আমরা পাশের ছোট রুমে থাকবো।
আজকে রান্নার প্যারা পুরোটাই পাপ্পু দিদি নিজে করবেন বলে ঘোষনা দিলেন! যাক বাঁচা গেলো!
আগেই বলেছিলাম পাপ্পু দি’র হাতে ঝাড়ি খায় নি এমন কেউই নাই। যথারীতি রান্না করতে গিয়ে অপু ভাই একদফা উনার ঝাড়ি হজম করলেন! বেচারা! আসিফ ভাই পুরো ট্যুরে পাপ্পু দি’কে এটা সেটা বলে খোঁচাখুঁচি করছেন! রান্না করতে যেয়েও এর ব্যাতিক্রম হয় নি!
রান্না ঘরের পরিবেশ বেগাতিক দেখে হাতমুখ ধুয়ে পাড়ার দোকানে আড্ডা দিতে চলে গেলাম। পাড়ার দোকানগুলো আমার ভীষণ পছন্দের জায়গা। কত আলাপ, কত গল্প যে হয়! এসব দোকানের কাস্টমার সাধারণত ট্রাভেলাররাই।
ঐদিকে পাপ্পু দি হাঁকডাক শুরু করে দিলেন চুলার আগুন নিভে গেছে। উনি কাঠের চুলার আগুন ধরাতে পারছেন না! ধোঁয়া দিয়ে পুরো ঘর ভরিয়ে ফেলেছেন। অপু ভাইকে ডাকছেন কিন্তু উনাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
ঐদিকে হিমন দাদা এ অবস্থার মধ্যেও সমানে নাক ডেকে ঘুমাচ্ছেন! মানুষ বড়ই বিচিত্র!
যাক অবশেষে অপু ভাইয়ের খোঁজ পাওয়া গেলো। উনি এসে চুলায় আগুন ধরায়ে দিলেন!
রাতের খাবার প্রস্তুত। জুমের ভাত, মুরগী আর ডাল। রান্না চমৎকার হয়েছে। গলা পর্যন্ত খেলাম!
খনরুই দাদাকে আগেই বলে রেখেছিলাম খাওয়া,দাওয়া করে দোকানে আসবো। চা খাবো, আড্ডা দিবো।
দোকানে বসে কিছু সময় আড্ডা দিয়ে সবাই আগুন পোহানোর জন্য কাঠ জ্বালালাম।
আস্তে আস্তে রাত বাড়ছে। আড্ডার মানুষও কমছে।
ক্লান্ত শরীর চায় ঘুম। আড্ডায় তার সায় নেই।
পরের দিন অনেক লম্বা পথ ট্রেকিং করতে হবে। পাহাড় থেকে নামা, ঝিরি ধরে হাঁটা আবার উপরে উঠা।
ঘরে চলে আসলাম। কাল আমরা ফিরে যাবো। মন খানিকটা বিষন্ন।
২য় দিন
১৮ ই ফেব্রুয়ারী, ২০২৩ ইং
আরো ছবির জন্য 👇
খ্যামচং পাড়া থেকে ম্যানিয়ং পাড়া
লিখাঃ Safa Uddin Ahmed