এক অদ্ভুত, অপূর্ব সুন্দর পাখি – হরিকল।
ভাল করে বলতে চঞ্চুমোটা হরিকল। ইংরেজি নাম Thick Billed Green Pigeon. বৈজ্ঞানিক নাম – Treron curvirostra. আরেকটি নাম দেখলাম ঠোটমোটা হরিয়াল, খুব সম্ভবত পশ্চিম বাংলার নাম।
হরিকলেরা চিরকাল ই লাজুক প্রকৃতির পাখি। কোন এক ভুলে মানুষের খুব কাছে বাসা বেঁধে ফেলেছিল এই পাখিদের এক জোড়া, আর যায় কোথায়? ঢিল ছুড়ে আর চিৎকার করে ওকে বাসা ছেড়ে দেওয়ার সব রকম আয়োজন করে ফেলল একদল মানুষ। কিন্ত মায়ের কি মমতা, এত কিছুর পরেও বাসা ডিম ছেড়ে যায় নি।
প্রাণিদের প্রতি মানুষের আচরন সংক্রান্ত লিফলেট বিতরণ খুব জরূরী৷ অনেকে জানেন ই না, পাতার ফাঁকে লুকিয়ে থাকা ডিমে তা দিতে থাকা মা পাখিকে বিরক্ত করা অত্যন্ত অনুচিত, আমি এক গ্রুপ ঘুরতে আসা মেয়েদের বোঝাতে সক্ষম হই অবশ্য, খুব সম্ভবত প্রচারণা আর সচেতনতা বাড়ালে অনেকেই এই অন্যায়গুলো আর করবেন না
চঞ্চুমোটা হরিকল কিংবা শুধুই হরিকল পাখি আকারে ২৫-৩০ সেমি, ওজন ১৭০-১৯০ গ্রাম। মার্চ থেকে আগস্ট এরা প্রজনন করে। সাদা রঙের দুইটা ডিম দেয়, পুরুষ এবং মেয়ে পাখি দুজনেই ডিমে তা দেয় ( সম্ভবত পালা করে)। এদের পুরুষ এবং স্ত্রী পাখি দেখতে আলাদা কিন্ত। পুরুষের পিঠে মেরুন রঙ, যা স্ত্রী পাখির থাকে না। এদের বেশ বড় বড় অনেকগুলি ঝাঁক দেখেছি, কিন্ত এতটাই দূরে সেসবের কোন ভাল ছবি তোলা সম্ভব হয়নি।
এই ছবিটি অবশ্য ওর বাসায় তোলা না। অন্য ডালে উড়ে এসে বসেছিল তখন তুলেছি। কেবল বৃষ্টি নামবে, আকাশ মেঘে মেঘে ছেয়ে গেছে, এরকম সময়েই ওর একটা ছবি তুলতে পেরেছি। ও উড়ে এসে বসেছিল এক ডালে, কৌতুহলি চোখে দেখছিল, আমি ক্যামেরা না ছুয়ে প্রাণভরে ওকে দেখলাম, সব মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দী করতে নেই, অনেক মুহূর্ত সুখের মত মনে গেঁথে নিতে হয়।
লিখা ও ছবিঃ নিসর্গ অমি