• ফিচারড
  • সব পোস্ট
অন্যান্য অভিজ্ঞতা পূর্ণ চন্দ্রিমায় ট্রাভেলার্স ক্যাম্পিং

পূর্ণ চন্দ্রিমায় ট্রাভেলার্স ক্যাম্পিং

-

পূর্ণ চন্দ্রিমায় ট্রাভেলার্স ক্যাম্পিং

কেমন হয় যদি একটা চন্দ্রিমা রাতে আপনি অনেকগুলো বিখ্যাত ট্রাভেলারের সাথে ক্যাম্প করেছেন কোন একটা নদীর পাড়ে, একপাশে ক্যাম্প আরেক পাশে ক্যাম্পফায়ার করে গোল হয়ে বসে আপনারা ভ্রমণের গল্প করতেছেন, খাচ্ছেন, আড্ডা দিচ্ছেন। জীবনে গল্প বলার মত এমন ড্রিম ট্রাভেল করার সুযোগ খুব কমই আসে, আমার জীবনে একবারই এসেছিল। সুযোগটা আমি মিস করিনি।

জানুয়ারীর হাড় কাপানো শীতের সপ্তাহে আমার পরিকল্পনা ছিল নেত্রকোনা যাব ক্যাম্পিং করতে। পরিকল্পনা মোতাবেক আমি আমার বহুদিনের বিশ্বস্ত এবং পুরানো ট্রাভেলার ভাই ইয়াশ এর সাথে যোগাযোগ করলাম। নেত্রকোনা যাচ্ছি তাও চিপ বাজেটে ক্যাম্পিং করতে এটা শুনে ইয়াস লাফিয়ে পড়লো। কোন চিন্তাভাবনা না করে হ্যা বলে দিল। আমি ম্যাসেঞ্জারে জানিয়ে দিলাম কি কি নিতে হবে।

দুপুর হওয়ার আগেই ইয়াস বারবার তাগাদা দিচ্ছিল। ভাই আমি রেডি কখন বের হবেন আমি রেডি এসব বলে পাগল করে দিচ্ছিল বেচারা। অফিস করে ধীরেসুস্থে সন্ধ্যাবেলা বাসায় আসলাম। ব্যাকপ্যাক গোছালাম, ইয়াশকে বলা ছিল আমরা রাত এগারোটার সময় মিরপুর 10 নাম্বারে দেখা করব, ওখান থেকে আমাদের ভ্রমণ শুরু যথাসময়ে ইয়াশ মিরপুর 10 নাম্বারে পৌঁছে গেছে এবং আমাকে বারবার ফোন দিচ্ছে। আমি আমার শেওড়াপাড়ার বাসা থেকে হেলেদুলে বের হলাম ১১ টায়।

আমাদের টার্গেট ছিল এই ভ্রমনটা সবচেয়ে কম ব্যায়ে করার। সেজন্য আমরা বেছে নিয়েছিলাম বলাকা কমিউটার। ঢাকা থেকে বলাকা কমিউটার প্রতিদিন রাত চারটার সময় ময়মনসিংহ হয়ে নেত্রকোনা জারিয়া ঝাঞ্জাইল স্টেশন পর্যন্ত যায়। ভাড়া নেয় দূরত্বভেদে 20 টাকা থেকে 75 টাকা। আমাদের যেহেতু জারিয়া পর্যন্ত যাওয়ার প্ল্যান ছিল সেজন্য 75 টাকা করে দুইটি টিকিট কেটে নিলাম। রাত ১২ টার ভেতরেই স্টেশনে চলে এসেছি, এখন আমাদের রাত পার করতে হবে বিধায় আমি আর ইয়াশ ষ্টেশনে চা খেতে খেতে সময় কাটাতে লাগলাম।

রাতটা যেন গড়িয়ে গড়িয়ে কাটতে লাগলো। একটা সময় প্লাটফর্মে আমি আর ইয়াশ পাশাপাশি হেলান দিয়ে বসে ঘুমিয়ে গেলাম। ঠিক 4 টার সময় ট্রেন কমলাপুর থেকে আসলো আর আমরা ট্রেনে চড়ে বসলাম।

ঢাকা শহর ছাড়তে ছাড়তে ততক্ষনে ভোর হয়ে গেছে। ট্রেন যখন গাজীপুরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল সে সময় ভোরের আলো ফুটেছে চারিদিকে। ঘুম পেলেও কিসের ঘুম? আমি আর ইয়াশ দুজন ট্রেনের দরজায় দাঁড়িয়ে গল্প করতে করতে কিছু ছবি তুললাম। ইয়াশ কিছু ভিডিও শুট করে নিল।

ভোরের আলোয় অনিন্দ্যসুন্দর গাজীপুরকে দেখতে দেখতে ধীরে ধীরে আমরা গাজীপুর পার হচ্ছিলাম। ট্রেন মোটামুটি যখন ময়মনসিংহের কাছে চলে এসেছে তখন চ্যাটিং শুরু হয়েছিল ট্রাভেলার্স অফ বাংলাদেশ (টিওবি) এর এডমিন জুয়েল রানা ভাইয়ের সাথে। উনি ময়মনসিংহের জামাই, শশুরবাড়িতে বেড়াতে গিয়েছেন। উনারা ময়মনসিংহে ব্রহ্মপুত্র নদীর পাড়ে একটা ক্যাম্পিং করবেন। জুয়েল রানা ভাই আমাদেরকে চ্যাটেই দাওয়াত দিলেন আমরা যেন ময়মনসিংহে নেমে যাই এবং উনাদের সাথে একরাত ক্যাম্পিং করি। কথাটা ইয়াশকে খুলে বললাম, ইয়াশ খুব আনন্দের সাথেই রাজি হয়ে গেল, কারন আমরা দুই বোহেমিয়ান ইচ্ছামত ঘুরতে বের হয়েছি। যেখানে রাত সেখানে কাত এভাবে ট্রাভেল করা আমাদের মূল উদ্দেশ্য।

ময়মনসিংহ স্টেশনে ট্রেন আসামাত্র আমরা নেমে গেলাম। তখনো প্রচন্ড শীত ময়মনসিংহে, সূর্য তার মুখ দেখায়নি। চারিদিকে ঘন কুয়াশা। এর ভেতরে আমি আর ইয়াশ স্টেশন থেকে নেমে একটা অটো রিকশা নিয়ে চলে গেলাম ময়মনসিংহ জয়নুল আবেদিন পার্কে। পার্কে ওয়াশরুম থেকে ফ্রেস হয়ে নিলাম। এরপর আমি আর ইয়াশ কুয়াশাচ্ছন্ন পার্কে ঘোরাঘুরি করতে লাগলাম। এর মধ্যে কয়েকবার জুয়েল রানা ভাইয়ের সাথে ফোনে কথা হয়েছে। উনি জানালেন উনারা পুরা টিম কয়েকভাগে ভাগ হয়ে আসবেন। আমি আর ইয়াশ সকালের নাস্তা করে নিলাম। এভাবে বেশ কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি পরে ইয়াশ বলল ভাই চলেন ওপারে যাই ক্যাম্প করে ফেলি।

এপারে এসে জুয়েল রানা ভাইয়ের সাথে ফোনে কথা বলে উনারা যে লোকটিকে ঠিক করে রেখেছিল তাকে খুঁজে বের করলাম। তাকে খুঁজে বের করে তার সাথে কথা বলে ক্যাম্প সাইট ঠিক করে একটা নৌকার পাশে তাবু ফিট করলাম। কারন ততক্ষনে দুপুর হয়ে যাচ্ছিল। আমাদেরকে লাঞ্চ করতে হবে, রান্না করতে হবে। আমরা ক্যাম্পসাইটস ঠিক করে বসা মাত্র এসে হাজির হলেন জুয়েল ভাই। একটু পর উনার সাথে গল্প করতে করতে আমি আর ইয়াশ রান্নাবান্নায় হাত লাগালাম। আমাদের প্ল্যান ছিল দুজনের জন্য ডিম খিচুড়ি রান্না করবো, কিন্তু যেহেতু জুয়েল রানা ভাই চলে এসেছেন স্বাভাবিকভাবেই উনি আমাদের মেহমান হয়ে গেলেন। আমি আর ইয়াশ কাজ ভাগ করে নিলাম।

প্রথমেই ইয়াশ চুলা বানাতে বসলো, আমি পানি নিয়ে আসলাম এবং সমস্ত কাটাকাটি করে চালডাল সব ধুয়ে রেডি করে দিলাম। চুলা বানাতে ইয়াসের একটু সময় লাগছিল তাই আমি ব্যাগ থেকে আমার ম্যাশেটি বের করে কাঠের সন্ধানে বের হলাম। এদিকে বিকেলবেলা ঘোরাঘুরি করার জন্য উত্তম তাই প্রচুর মানুষ ঘুরতে আসে, পিকনিক করে তাই এদিকে শুকনা কাঠ ডালপালা এসবের অভাব বেশ প্রকট। একটা শুকনা গাছ পেলাম যেটা মরে গিয়ে লাকড়ি হয়ে গেছে, আমি ওখান থেকে বেশ কষ্ট করে কিছু কাঠ কেটে নিয়ে আসলাম। ইয়াশ বলল এতেই হয়ে যাবে। আসলে রান্নাবান্নার সেগমেন্টে আমি সবসময় ইয়াশ এর উপরে নির্ভরশীল কারণ ও রান্না-বান্না আমার চেয়ে ভালো করে এবং বেশ গুছিয়ে করে। তো জুয়েল রানা ভাই ও একটু হেল্প করতে লাগলো, আমরা রান্না চড়িয়ে দিলাম। তিনজন মিলে টুকটুক করে গল্প, আড্ডা ও নিজেদের ভ্রমণকাহিনী শেয়ার এসব করতে করতে আমাদের রান্না করে ফেললাম।

রান্না শেষ করেই আমরা খেতে বসলাম। জুয়েল রানা ভাইয়ের সাথে ক্যাম্পিঙের রান্নাবান্নার চুলা, পাতিল এগুলো ছিল সেখান থেকে উনি প্লেট বের করে খাওয়া-দাওয়া শুরু করলেন। আমরা ৩ টা প্লাস্টিকের চেয়ার জোগাড় করলাম এবং গল্প করতে করতে মজা করে দুপুরে লাঞ্চ শেষ করলাম। আমরা লাঞ্চ শেষ করে সবে মাত্র বিশ্রাম নিচ্ছি এমন সময় হাজির হলেন রাজন ভাই। অদ্ভুত একজন ফটোগ্রাফার এবং এডিটর।

পূর্ণ চন্দ্রিমায় ট্রাভেলার্স ক্যাম্পিং

রাজন ভাই আসার পর পরিচিত হয়ে আমি লুঙ্গি পড়ে নেমে গেলাম হাড় কাঁপানো শীতে ব্রহ্মপুত্র নদীতে গোসল করতে। পাশেই নদী আর আমি একটু দাপাদাপি করব না আমি এটা হয় না। ইয়াশ বারণ করল ঠাণ্ডা পানিতে গোসল না করার জন্য, কিন্তু আমি নেমে গেলাম। গোসল করে রান্নার সরঞ্জাম গুলো ধুয়ে মুছে উঠে আমি,ইয়াশ, রাজন ভাই আর জুয়েল ভাই আড্ডা দিচ্ছিলাম। সে সময় সপরিবারে দেখা করতে আসলেন আমাদের কেওকারাডাং ভ্রমণের মিল্টন ভাই।

মিল্টন ভাইয়ের সাথে সেই কেউকারাডং ভ্রমণের পর এই প্রথম দেখা হল। মিল্টন ভাই অনেক মজার মানুষ, আমাদের কেউকারাডং ট্রিপে অনেক মজা করেছে। তিনি আমাদের সাথে ভাবির পরিচয় করিয়ে দিলেন, বেশ হ্যাপি কাপল উনারা। ভাইয়ের দুইটা ছোট কিউট মেয়ে আছে তাদের সাথে পরিচয় হলাম। আমরা একসাথে একটু হাঁটাহাঁটি করতে বের হলাম। একসাথে চা খেলাম, একটু ঘোরাফেরা করে রাতে আসার কথা দিয়ে মিল্টন ভাই সপরিবারে বিদায় নিলেন।

ততক্ষণে সন্ধ্যা নেমে এসেছে, নদীর এপার থেকে ওপারে ময়মনসিংহ শহরে বাতি গুলো এক এক করে জ্বলতে দেখছি। মনে হচ্ছে আমরা সমুদ্রের মাঝে নাবিক, জাহাজে বসে সমুদ্রতীরবর্তী কোন নগরীর দৃশ্য দেখছি। কিছুক্ষণ পর একটা বাইকার দল আসলো।

বাইকার দলে ছিল টিওবির এডমিন সবুজ ভাই, রিয়াদ ভাই, ভাবি সহ একগাদা সিনিয়র ফেলো ট্রাভেলার্স। সবার সাথে পরিচয় হলাম। উনারা ক্যাম্প সাইটে তাবু ফিট করলেন, ক্যাম্প ফায়ার করার জন্য লাকড়ি নিয়ে আসা হল কিন্তু ঠিক করা হলো ক্যাম্প ফায়ার করা হবে রাতের ডিনার এর পর।

রাতের ডিনার বানানোর দায়িত্ব পড়ল আমার আর রাজন ভাইয়ের উপরে। রাতের মেনুতে ছিল স্যুপ নুডুলস আর চা। ক্যাম্পিং এ আসলে হালকা এসব খাবার খেয়েই কাটানো হয়। আমি নুডুলস বানানোর জন্য আমাদের লোকাল গাইড এর বাসায় গেলাম, সেখানে গিয়ে রাজন ভাই আর আমি গল্প করতে করতে এক পাতিল স্যুপ নুডুলস রান্না করলাম। রান্না করে নিয়ে আসতে আসতে দেখি আমাদের কেওকারাডাং ট্রিপের ময়মনসিংহের প্রায় সবাই হাজির, শুধুমাত্র বকুল ভাই নাই। গত বছরের শুরুতে বকুল ভাই বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় আক্রান্ত হয়ে পরলোকে চলে গিয়েছেন।

অনেকদিন পর সবার সাথে দেখা হওয়া মাত্রই আমরা কেন যেন সবাই একটু শোকাচ্ছন্ন হয়ে গেলাম বকুল ভাইয়ের জন্য। বকুল ভাই খুব মজার মানুষ ছিলেন। আমি, মিল্টন ভাই, শাওন ভাই আর বকুল ভাই লালা বম এর কটেজে সারারাত আড্ডা দিয়েছিলাম কেওকারাডং এ। বকুল ভাইয়ের জন্য আমাদের কষ্ট হচ্ছিল। সে সময় মনে হচ্ছিল কিছু একটা নাই, একটা খালি খালি ভাব তবু আমরা অনেকক্ষণ গল্প করলাম। গল্প করতে করতেই পরিদর্শক টিম এবং আমরা ক্যাম্পাররা মিলে একসাথে ডিনার করলাম।

সেদিন আবার ছিল পূর্ণিমা রাত, চাঁদ উঠেছিল আকাশে। চাঁদের আলোয় অনেকক্ষণ গল্প করলাম। এরপর ময়মনসিংহ টিম বিদায় নিল। আমরা ক্যাম্প ফায়ার জ্বালালাম। ক্যাম্প ফায়ার করে তার চারপাশে গোল হয়ে বসে আমরা মেতে উঠলাম ভ্রমণ আড্ডায়। অনেকক্ষণ ধরে আমরা সকলেই আমাদের বিভিন্ন রকম ভ্রমণ অভিজ্ঞতা শেয়ার করলাম। আমি আর ইয়াশ বললামই কম, শুনলাম বেশি কারণ প্রায় সকলেই ছিল আমাদের চেয়ে অভিজ্ঞ এবং সিনিয়র ভ্রমণকারী। তাদের কাছ থেকে শোনার এবং শেখার অনেক কিছু ছিল, সেগুলো আমি আর ইয়াশ শুনতে লাগলাম। এভাবে আড্ডা দিতে দিতে কখন যে রাত 2 টা বেজে গেছে আমরা টের পাইনি। ততক্ষণে দু-একজন ঘুমাতে যাওয়ার জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠেছিল বিধায় আড্ডার হাট ভেঙে গেল। আমরা উঠে সকলেই যে যার যার তাবুতে চলে গেলাম। টুকটাক গল্প করতে করতে ঘুমিয়ে গেলাম।

সকালবেলা উঠে তাবুর ফ্লাপ খুলে সূর্যোদয় দেখা আমার অন্যতম একটা নেশা। পরদিন সকালবেলা ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে সূর্য উঠলো উজ্জ্বল রূপে। তাবুর ফ্লাপ খুলে শুয়ে শুয়ে অনেকক্ষণ ধরে সেই সূর্যোদয় দেখলাম। তাঁবুর ভেতর থেকে প্রতিটি সূর্যোদয় দেখতে আমার ভালো লাগে, প্রতিটি সূর্যোদয় অন্যরকম নেশা ধরায়। স্লিপিং ব্যাগের ভেতরে পা ডুবিয়ে সূর্য দেখছি, পাশে নাক ডেকে ঘুমাচ্ছে ইয়াশ।

ওকে ডেকে তুললাম। ও ফোন নিয়ে বের হল এবং সুন্দর সুন্দর বেশ কিছু ছবি তুললো, কিছু ভিডিও শুট করল। এরপর আমরা আড়ামোড়া ভেঙে সবাই উঠে পড়লাম। জুয়েল রানা ভাইয়ের স্টোভ আর আমার কেটলিতে চা বসালাম। সবারই ব্যাকপ্যাক ঝাড়া দিয়ে কিছু বিস্কিট, কিছু, চিপস এসব বের হলো। এসব দিয়ে আমরা চা নাস্তা করলাম। এরপর পাশেই একটা ইসকন মন্দির ছিল সেখানে গিয়ে আমরা সবাই ফ্রেশ হলাম। ক্যাম্প সাইট গুছিয়ে ফেললাম।

পূর্ণ চন্দ্রিমায় ট্রাভেলার্স ক্যাম্পিং
পূর্ণ চন্দ্রিমায় ট্রাভেলার্স ক্যাম্পিং

সবাই একটু আড্ডা দিয়ে আমাদের গ্রুপ ফটোগ্রাফি করে যে যার মত বিদায় হওয়ার জন্য রেডি হলাম। আমাদের একটু তাড়া ছিল কারণ আমরা ময়মনসিংহ থেকে জারিয়াগামী বিখ্যাত মহানন্দা এক্সপ্রেস ট্রেনটি ধরবো। ওই ট্রেন ধরার জন্য আমাদেরকে একটু তাড়াতাড়ি যেতে হবে। যদিও আমরা ঠিকই বিখ্যাত সেই ট্রেন মিস করেছিলাম। তা সত্বেও ময়মনসিংহ থেকে সিএনজি দাবড়িয়ে শ্যামগঞ্জ থেকে ঠিকই মহানন্দায় চড়েছিলাম। বিখ্যাত এই সুপার স্লো ট্রেন ধরার সেই গল্প আরেকদিন লিখবো। আপাতত আজ এখানেই ফেলো ট্রাভেলারদের সাথে আমাদের ময়মনসিংহের পূর্ণিমা রাতে গল্পটি শেষ হলো।

পৃথিবীটা অনেক সুন্দর। এর প্রতিটি কোনায় দেখার জন্য, শেখার জন্য, জীবনের আনন্দ নেওয়ার জন্য লুকিয়ে আছে অনেক কিছু। পৃথিবীর প্রতিটা কোনায় পরতে পরতে লুকিয়ে আছে সৌন্দর্য, গল্প আর অভিজ্ঞতা।

যদিও গত কয়েক শতাব্দীতে মানুষের অত্যাচারে পৃথিবীর সৌন্দর্য অনেকটাই ম্লান হয়ে গিয়েছে, পরিবেশ হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে তবুও এখনো সুযোগ আছে পৃথিবী কে সুস্থ করে বাঁচিয়ে রাখার, বাঁচিয়ে তোলার। কয়েক শতাব্দী আগের সেই সুন্দর পৃথিবী আবার নতুন করে গড়ে তোলার জন্য আমাদেরকে সবার আগে পরিবেশের প্রতি নজর দিতে হবে। প্লাস্টিক বর্জন করতে হবে। আমাদের চারপাশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে এবং সর্বোপরি আমাদের চারপাশের সবাইকে এই পৃথিবী বাঁচিয়ে রাখার ব্যাপারে সচেতন করে তুলতে হবে।

ময়মনসিংহ ভ্রমণ সংক্রান্ত কোন তথ্য প্রয়োজন হলে নিচের কমেন্ট এ প্রশ্ন করতে পারেন। ভ্রমণ করুন বিশেষ করে একাকী নির্জনে ঘুরে নিজের দেশকে নিজের মত জানুন। দেশটা আপনার, প্রকৃতি আপনার, পৃথিবী আপনার। আপনার দেশ আপনার সম্পদ। আপনার সম্পদ কে নিজ দায়িত্বে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সুন্দর করে রেখে দিন।

আগামী পর্ব- হিম সোমেশ্বরী আর দুই দুঃসাহসী

সৌজন্যে: Najmus Sakib

ব-দ্বীপ
শুধুমাত্র আমাদের প্রাণপ্রিয় বাংলাদশের জল, স্হল, জনপদ আর প্রকৃতিকে উপস্হাপন করাই আমাদের মূল লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য।

Leave a Reply

সর্বশেষ

পান ব্যবসায়ীর বাড়িতে চাকুরী হতে যে রাজ্যপাটের ভিতঃ বালিয়াটির জমিদার বাড়ি

পান ব্যবসায়ীর বাড়িতে চাকুরী হতে যে রাজ্যপাটের ভিতঃ বালিয়াটির জমিদার বাড়ি আশপাশে সাভার, ধামরাইয়ের মতো প্রাচীন বনেদী সব জনপদ থাকতে...

এক অদ্ভুত, অপূর্ব সুন্দর পাখি – হরিকল

এক অদ্ভুত, অপূর্ব সুন্দর পাখি - হরিকল। ভাল করে বলতে চঞ্চুমোটা হরিকল। ইংরেজি নাম Thick Billed Green Pigeon. বৈজ্ঞানিক নাম...

পালং খিয়াং (Palong Khiyang) ঝর্ণা, বান্দরবন

পালং খিয়াং (Palong Khiyang) ঝর্ণা বান্দরবন জেলার আলীকদমে অবস্থিত। বেশ দূর্গম পথ , তবে মারাত্মক লেগেছে। ফ্লাশ ফ্লাডে পাহাড়...

আজিজ মাস্টারের বাড়ি

‘মুন্সী’ ‘খাঁ’ টাইটেল যে হিন্দুদেরও হয় তা জানতাম, তবে খুব একটা common  নয়। Afterall ‘মুন্সী’ শব্দটি ফার্সি। হিন্দু মুন্সী পদবীধারীর...

ঝরঝরি ট্রেইল

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড রেইঞ্জের সবচাইতে বুনো ট্রেইল বলা হয় এই ঝরঝরি ট্রেইলকে। এই ট্রেইলে মোটামুটি দেখবেন জোঁক, বানর, সাপসহ নানা...

পাঠক প্রিয়

চর কুকরী মুকরি, ঢাল চর, চর মনতাজ ভ্রমণ

চর কুকরী মুকরি, ঢাল চর, চর মনতাজ ভ্রমণ অল্প খরচেই আপনি ঘুরে আসতে পারেন বাংলাদেশের দক্ষিনের নদী ও সাগর বেষ্টিত ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায়। হাতে ১...

এবার গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকতে দেখা মিললো তীব্র বিষধর ‘রাসেল ভাইপার‘ সাপ

গতকাল চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডের গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকতে রাসেল ভাইপারের দেখা মিলেছে।  পৃথিবীর ৫ম বিষধর সাপ এই রাসেল ভাইপার, আক্রমণে বিশ্বে ১ম ( মতান্তরে দ্বিতীয় )। অর্থাৎ...

মধুখাইয়া ট্রেইল ও ঝর্ণা, সীতাকুন্ড চট্টগ্রাম

২০১৭ সালের সেপ্টেমর মাস,কুরবানী ঈদের জাস্ট পরের দিন অপু নজরুল ভাইয়ের ফোন। আড়মোড়া ভেঙ্গে উঠলাম! ফোনে অপু ভাই বললো - ‘আসিফ ভাই! চলেন মধুখাইয়া...

কালচিতি / কালাচিতি / কালাচ / common krait

কালচিতি / কালাচিতি / কালাচ / common krait : একে বলা হয় রহস্যময় সাপ। ফনাহীন মারাত্মক বিষধর এই সাপে বাংলাদেশে এবং পশ্চিমবঙ্গে সবচেয়ে বেশি মানুষ...

ভ্রমণ ডায়েরির পাতা থেকে, সাইংপ্রা: পর্ব – ২

সাইংপ্রা (২য় পর্ব) ভ্রমণ_ডায়েরির_পাতা_থেকে (৬ অক্টোবর,২০১৮) ভ্রমণ ডায়েরির পাতা থেকে, সাইংপ্রা (১ম পর্ব) আমার মাথার ঠিক পিছনেই মুটামুটি বড়সড় একটা চারকোণা জানালা কাটা আছে! একজনের স্লিপিং ব্যাগ সিংগেল...
error: Content is protected !!