জুম ঘর
পাহাড়ি জনগোষ্ঠী ,জুমের ফসল উৎপাদনের সুবিদার্থে এই জুমঘর খুবই কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
আমরা যারা পাহাড়ের আনাচে-কানাচেতে ট্রেকিং করতে ভালবাসি তাদের কাছে জুম ঘরের দেখা পাওয়া মানেই শান্তির এক পরশ, ক্ষুদা, ক্লান্তি ও আশ্রয় এর সম্ভাবনা! আর জুমঘরের নৈসর্গিক সৌন্দর্য কম বেশী সবাইকেই আচ্ছন্ন করে দেবে ক্ষনিকের জন্য, হয়তো হয়ে উঠবেন কবি অথবা গায়ক।
পাহাড়ি জুমঘরে বসে পাহাড়ের অপূর্ব নিসর্গশোভা দেখতে দেখতে জুমিয়াদের জীবন ও জীবন ধরনের একটা ধারণা পাওয়া যায়।
বান্দরবানে পাহাড়ে বেড়াতে গেলে এমন জুমঘরের দেখা মিলবে জুমক্ষেতে হরহামেশাই। বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটির পাহাড়ি অঞ্চল গুলোতেই মূলত জুমচাষি পাহাড়িরা দের বসবাস। প্রায় প্রতিটি জুমখেতে ছোট-বড় একটি – দুইটি অস্থায়ী জুমঘর থাকে। স্থানীয় উপকরণ দিয়েই মুলত বানানো হয় এ-ই জুমঘর। এ-ই জুমঘরকে আবার অনেক নাম আছে যেমন – বমেরা জুমঘরকে টলাম, মারমারা বহ্কচাং, চাকমারা মৌনোঘর বলে থাকে।
এ-ই জুমঘরকে কেন্দ্র করে জুম চাষের ধান ও অন্যান্য ফসলের বীজ বপন, খেতের পরিচর্যা, ফসল আহরণসহ সবকিছু করা হয়।
জুমঘর পাহাড়ে জুমিয়া ও জুম সংস্কৃতির ঐতিহ্যের প্রতীক।জুম সংস্কৃতি বুজতে হলে জুমঘর কে খুব কাছে থেকে দেখতে হবে। ভাদ্র-আশ্বিন মাসে জুমের ধান পাকলে জুমঘরেরও আনন্দ উল্লাস বয়ে যায়। জুমিয়ারা সবাই আনন্দ-উল্লাসে ধান কাটে। নবান্ন উৎসব পালন করে। পাড়া থেকে অনেক জুমচাষি কয়েক মাসের জন্য পরিবার নিয়ে জুমঘরে থাকেন। এবং ফসল না উঠা পর্যন্ত জুমঘরেই অস্থায়ী নিবাস স্থাপন করেন।
উঁচু নিচু পাহাড়ের ঢালে ফসল ফলানোর জন্য জুম চাষ খুবই উপযোগী পদ্ধতি। যুগ যুগ ধরে পাহাড়ি জনগষ্ঠী এ পদ্ধতিতে চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। যদিওবা জুমচাষ নিয়ে অনেক মতভেদ থাকলেও জুমঘরের সৌন্দর্য নিয়ে কারোই কোনো মতভেদ নেই।
ছবিগুলো বান্দরবান থেকে নেয়া হয়েছে
কৃতজ্ঞতা: হাদী মুন
কপি রাইট: ব-দ্বীপ