• ফিচারড
  • ভ্রমণ
  • সব পোস্ট
অন্যান্য ধারাবাহিক ভ্রমণ ডায়েরির পাতা থেকে, সাইংপ্রা: পর্ব - ২

ভ্রমণ ডায়েরির পাতা থেকে, সাইংপ্রা: পর্ব – ২

-

সাইংপ্রা (২য় পর্ব)

ভ্রমণ_ডায়েরির_পাতা_থেকে (৬ অক্টোবর,২০১৮)

ভ্রমণ ডায়েরির পাতা থেকে, সাইংপ্রা (১ম পর্ব)

আমার মাথার ঠিক পিছনেই মুটামুটি বড়সড় একটা চারকোণা জানালা কাটা আছে!

একজনের স্লিপিং ব্যাগ সিংগেল লেয়ার বানিয়ে দুজন শেয়ার করার ফলে পা ঢাকতে গিয়ে মুখ ঢাকতে না পারা চোখে মিষ্টি রোদ আর কানে ঠান্ডা বাতাস ঢুকে জানান দিলো ‘মামণি, সকাল হয়ে গেছে এবার উঠে পড়ো!’

খুব কষ্টে আড়মোড়া ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে দেখি চারপাশে ঘন কুয়াশা!

তারপর বুঝে পেলাম না,আমরা আসলে মেঘের ভেতরে আছি। সবার ঘুম ভাঙ্গতে এখনো দেরী। ঘড়িতে প্রায় ৬ টা বাজে। দেখলাম আরিফ ভাই প্রাকৃতিক ডাকে সারা দিতে চলে যাচ্ছে বাহিরে!

এইখানে ঝোপঝাড় ই ভরসা।
কিন্তু আপনার প্রাকৃতিক কাজ সারার সময় যে আশেপাশের শুকর এসে আপনাকে বিরক্ত করবে না সে ভরসা দিতে পারছি না!!

একে একে উঠে পড়লাম সবাই!
ফ্রেশ হয়ে নাশতা করবো! ট্রেকিং জগৎ এ সবার প্রাণরক্ষাকারী সেই স্যুপি নুডুলস দিয়ে।

খেয়াল করলাম আমার পা দুটো দারুণ বিট্রে করে বসে আছে। যেন পা বলছে ঘুমা মা, তুই ঘুমা!
এতো শান্তির ওয়েদার ছেড়ে কোথাকার কি ক্রিসতং!

পা বিট্রে করলে তাও ঠিকাছে, কিন্তু জুতা!
জুতা বিট্রে করলে পাহাড়ি রাস্তা আরো বেশি কঠিন হয়ে যায়! আমার ট্রেকিং করতে হবে তাহমিদ ভাইয়ের জুতা দিয়ে যা কিনা আমার পা থেকে দু সাইজ বড়!

একবার তো দেবুদা কে বলেই বসলাম, দাদা সবাই ক্রিসতং ঘুরে আসুক, আমরা দুজন ল্যাটাই।
দেবুদা বললো সাইংপ্রা যেও না দরকার হলে, কিন্তু ক্রিসতং তো মাস্ট যেতে হবে।

ক্যামচাং পাড়া,যেখানে শান্তির ঘুম দিয়ে পরদিনের যাত্রা শুরু করেছিলাম!
ক্যামচাং পাড়া, যেখানে শান্তির ঘুম দিয়ে পরদিনের যাত্রা শুরু করেছিলাম!

সকল কল্পনা সল্পনার অবসান ঘটিয়ে আমরা রওনা দিলাম সকাল ৮ টায়।
গাইড দাদা বলেছে ২ ঘন্টা লাগে যেতে। আমরা আসা যাওয়াই ৫ ঘন্টা ধরে নিলাম।
ক্রিসতং থেকে পাড়ায় ফিরে তারপর ব্যাগ টা নিয়ে রওনা দিবো সাইংপ্রার উদ্দেশ্যে! রাতটা ওখানেই ক্যম্পিং করে থাকবো!!

এখন উদ্দেশ্য ক্রিসতং!

আপস এন্ড ডাউন হিল আছে কিছু, এ ব্যাতীত রাস্তা কঠিন মনে হলো না কারো! ৪৫-৫০ মিনিট হাঁটার পর রেইন ফরেস্টের মতো একটা জায়গাতে এসে পড়লাম।

গা ছমছম করা অনূভূতি পাচ্ছিলাম কেমন যেন, বাশঝাড়, বৃষ্টিস্নাত মাটি, পাথুরে খাড়া উঁচু জায়গা, জোঁক আর অন্ধকারচ্ছন্ন জায়গা!

ক্রিসতং যাত্রার পথে আমাদের প্রিয় জায়গা,এখানে বসে বসে সবাই আলোচনা করছিলাম এখানে বানজি জাম্পের ব্যবস্থা করা যেতো আরামসে!
ক্রিসতং যাত্রার পথে আমাদের প্রিয় জায়গা,এখানে বসে বসে সবাই আলোচনা করছিলাম এখানে বানজি জাম্পের ব্যবস্থা করা যেতো আরামসে!

সব মিলিয়ে বলা যায় সে এক দারুণ রোমাঞ্চকর অনুভূতি! আমরা কোনরকম না থেমেই হাঁটতে থাকলাম!

ক্রিসতং চূড়ায় পৌছে গাইড দাদা ও দুয়েকজন বসে পড়াতে আমরা বুঝলাম সামিট পয়েন্টে পা রেখেছি!

না, জার্নিটা যতটা বেশি কষ্টসাধ্য মনে হয়েছিলো ততটা কষ্টসাধ্য হয় নি। গাইড দাদা বললো এখনো অব্দি যেকটা টিম নিয়ে এসছি আপনারা সবচে বেচি তাড়াতাড়ি এসছেন।।

মূলত টিম বড় হলে স্লো হয়ে যায়। আমাদের দশজনের টিম স্লো না হয়ে সবাই যথাসাধ্য ফাস্ট ট্রেক করে ২ ঘন্টায় ক্রিসতং সামিট পয়েন্টে এসে পৌছেছি এটা সত্যিই আনন্দের ছিলো!

আহ্, ক্রিসতং!
আহ্, ক্রিসতং!

ক্রিসতং চূড়ায় ৩০ মিনিট মতো রেস্ট প্লাস ছবি তুলে আমরা পাড়ায় ব্যাক করার উদ্দেশ্যে পা দিলাম!

আমরা ১ টায় পাড়ায় ব্যাক করলাম।
পাড়ায় পৌছে টেন্ট ব্যাগ পানি সব গুছিয়ে হালকা বিস্কিট খেজুর খেয়ে রওনা দিলাম সাইংপ্রার উদ্দেশ্যে!

সত্যি বলতে তখন এনার্জি লেভেল কিছুটা ডাউন হয়েই ছিলো যেহেতু সকাল থেকে রেস্ট বাবদ ৪ ঘন্টা ট্রেক হয়ে গেছিলো আমাদের!

পাহাড়ি রাস্তা ধরে হাঁটতে শুরু করারর ৩০-৩৫ মিনিটের মাথায় দেখা মিললো জুমঘরের!

ঐ দেখা যায় জুমঘর!
ঐ দেখা যায় জুমঘর!

আহা সেই এক অন্যরকম শান্তি!
আমরা সেখানে জিরিয়েয়ে নিলাম মিনিট ১৫। আর ডিসিশন নিলাম সাইংপ্রা থেকে ফিরে যদি সম্ভব হয় এখানে একটা রাত কাটাবো!

আবারো হাঁটা শুরু, আরো ১৫-২০ মিনিট হাঁটার পর এবার খাড়া উঁচু পাহাড় বেয়ে নামার পালা!

একে তো খাড়া, তারউপর পাথুরে ঝুরা মাটি, রাস্তা যেন প্রতি মুহূর্তে জানান দিচ্ছে এক কদম এদিক ওদিক মানে বড় রকমের দুর্ঘটনা!

পাহাড় বেয়ে নামতে নামতে চলে এললাম সেই পাহাড় ধ্বসের জায়গাটা। সম্ভবত পুরো ট্রেইলের সবচেয়ে কঠিনতম অংশ!
অদ্রির রিভিউ পোষ্টে পড়ছি এই জায়গাটা তারা রোপ ব্যবহার করে র‍্যাপলিং করে নেমেছিলো।

আমাদের রোপ নেই, সম্পূর্ণ রিস্ক নিয়ে পাহাড় বেয়ে নামাটাই ভরসা! একপা ব্যালেন্স হারানো মানে হলো প্রায় খাড়া ২০০ ফিট নিচে তলিয়ে যাওয়া।

খুব সতর্কতার সহিত পার হয়ে যেন হাফ ছেড়ে বাঁচলাম। বসে পড়লাম ওই জায়গায়!

গাইড দূর পাহাড়ে সাইংপ্রা দেখিয়ে দিলো!
ভেবেছিলাম লক্ষ্যের অনেক কাছে!
কিন্তু রাস্তা তখনো অনেক বাকি!

আবারো পাহাড়ের গা ঘেষে নামা শুরু। মিনিট ১৫-২০ এক নামার পর দেখা পেলাম ঘন বাশ ঝাড়ের!
এভাবে অনেক্ষন বাশঝাড়ের জঙ্গল দিয়ে নামতে নামতে একপর্যায়ে সত্যিকার অর্থে ক্লান্ত ও বিরক্ত হয়ে গেছি সবাই!
এ রাস্তা যেন শেষ হয় না।

মনে হচ্ছিলো ঝিরিপথের দেখা পেলেই মনে শান্তি জাগবে। এক পর্যায়ে অপেক্ষার অবসান হয়ে ঝিরিপথে এসে নামলাম!
কিন্তু না! বিপত্তির তো সবে শুরু!
সে খবর তখনো আমাদের জানা ছিলো না…

শুনেছি ঝিরিতে বড় বড় কাঁকড়া পাওয়া যায়!
চিন্তা করলাম ডিনারটা কাঁকড়া দিয়েয়ে ই সারবো।
তাই গাইড দাদাকে বলে রাখলাম পথিমধ্যে পাওয়া কাঁকড়া ধরতে।

ঝিরিতে পৌছে কিছুক্ষন রেস্ট করে সম্ভবত ৫ টাই রওনা দিই। ঝিরপথে রওনা দেওয়ার পর প্রথম বড় বোল্ডারটার দেখা পেলাম। বোল্ডারটাতে না উঠা অব্দি বাকি ঝিরিপথের দৃশ্য দেখা যাচ্ছিলো না!

বোল্ডারে উঠার পর ঝিরিপথের যে দৃশ্য দেখলাম তাতেই আমার কলিজার পানি অর্ধেক শুকিয়ে গেছে!

মাত্র ২০ দিন আগে হেঁটে আসা পদ্মঝিরির দৃশ্যে চোখে ভেসে উঠলো কয়েক সেকেন্ডের জন্য। ঝিরিপথ মানেই এক অন্যরকম স্বস্তি! তাই আশা করছিলাম ঝিরিপথে নামলে এবার আরামসে পৌছে যাবো গন্তব্যে!

কিন্তু এই ঝিরিপথের চেহেরা দেখে ঝিরিপথ সম্পর্কে ধারণা ই পাল্টে গেলো। এই ঝিরিপথের যে দৃশ্য দেখলাম তাতে মনে হলো সম্ভবত ঐ পাহাড় বেয়ে উঠা নামাই ভালো ছিলো! এ দূর্গম্য ঝিরিপথ আর হাঁটতে চাই না!

আলো প্রায় কমে এসেছে!
পিচ্ছিল বড় বড় বোল্ডার। চারপাশে জঙ্গল যেন চিম্বুল ঝিরিকে আরো বেশি ওয়াইল্ড আর অতিপ্রাকৃতিক রুপ এনে দিয়েছে!

বোল্ডার,বোল্ডার আর বোল্ডার!
বোল্ডার, বোল্ডার আর বোল্ডার!

পুরোটা টাইম জুড়ে শঙ্কা ছিলো যে কোন মুহূর্তে বোল্ডার থেকে পা পিছলে বড় অঘটন ঘটবে! (শেষ পর্যন্ত ঘটেছিলো ও বটে!)

আস্তে আস্তে সন্ধ্যা ঘনালো।
বলা যায় আলো প্রায় ফুরিয়ে এসেছে।
ঝিরিপথে আমরা হাঁটা শুরু করেছি প্রায় ১.৫ ঘন্টা হয়ে গেলো, কিন্তু না! এই রাস্তা শেষ হওয়ার কোনো নামম নেইই।
উল্টা সময়ে সময়ে বোল্ডারের সাইজ ও পরিমান আরো  দ্বিগুন হতে লাগলো।

এবার মনে সত্যি সত্যি অনেক ভয় চেপে আসলো। একটা ওয়াই জংশনে এসে বোল্ডারে বসে পড়লাম আমরা। না,আর কিঞ্চিত পরিমান ও দিনের আলো অবশিষ্ট নেই।গাইড দাদা বললো আরো আধাঘন্টা রাস্তা বাকি!

১০ জন টিম মেম্বার অন্ধকারে চিম্বুল ঝিরিতে ট্রেক করেছিলাম ওটা ভাবলে এখনো আমার শরীরের পশম দাড়িয়ে যায়!

মানসিক ভাবে দূর্বল হওয়া যাবে না এটাই ট্রেকিং এর প্রথম রুল। কিন্তু না,এইভাবে চলা সম্ভব না। আমরা সবাই সত্যিকার অর্থে মানসিক দৃঢ়তা হারাবো। ৪ জনের কাছে হেডলেম্প ছিলো বাকি ৬ জনের কাছে নেই।

চার হেডলেম্প দিয়ে পথ চলতে হবে দশ জনকে!
ওইটা জ্বালিয়ে আবার ট্রেক শুরু করলাম।

আমি এর আগে ও রাতে ট্রেক করেছি বেশ কয়েকবার।কিন্তু এ রাতের অনূভুতি আর রাস্তা,সেটা কোনো কিছুর সাথে তুলনা চলে না!

পিচ্ছিল বোল্ডার একে অন্যকে যতখানি সম্ভব সাপোর্ট দিয়ে চলতে লাগলাম, আমরা কজন সামনে গাইড দাদার সাথে, আরিফ ভাই মাঝখানে এবং আলী সবার শেষে এইভাবে পথ চলছিলাম, (আমাদের টিমের একজন অল্রেডি পথ চলা থামিয়ে দিয়েছিলো ক্লান্তি আর ভয়ে, তাকে পুরোপুরি সামাল দিচ্ছিলো আলী)..

এরমধ্যে ঘটে গেলো অঘটন!
এক বোল্ডার হয়ে আরেক বোল্ডার উঠার সময় ব্যালেন্স হারিয়ে আরিফ ভাই পড়ে গেলো খাড়া প্রায় ২০ ফুট নিচে।

আমরা সবাই একসাথে সজোরে চিৎকার! একবারের জন্য সবাই ভয় পেয়ে ভেবেছিলাম মানুষটাকে হারিয়ে ফেলেছি!
তবে সৃষ্টিকর্তা আমাদের সহায় ছিলেন! মাথা ফাটা, শরীরে বিভিন্ন অংশে ছিড়ে যাওয়া আর গুমোট ব্যথা পেয়ে এ যাত্রায় বেঁচে গেলেন তিনি।

তাড়াতাড়ি করে ২-৩ জন গিয়ে তাকে নিচ থেকে নিয়ে আসলেন, আর সাথে থাকা ফার্স্ট এইড/মেডিসিন দিয়ে যতটা সম্ভব থাকে সাময়িক ভাবে সুস্থ করে, বেশ কিছুক্ষণ রেস্ট নিয়ে আবারো পথ চলা শুরু।

এইভাবে আরো কতক্ষন বড় বড় পিচ্ছিল বোল্ডারে শরীরের ভারসাম্য বজায় রেখে ট্রেক করেছি জানিনা। একটা সময় পানির প্রবল শব্দ পেয়ে বুঝতে পারলাম সাইংপ্রার প্রথম ধাপ (ক্যাসকেডে) চলে এসেছি!

না শরীর আর মানতে চাইছে না! পারলে এখুনি টেন্ট গেড়ে এখানে শুয়ে পড়তে চাই!
কিন্তু না,সেটা সম্ভব না, সেই ওয়ে নাই।।

আমাদের আবার উঠতে হবে পাশের খাড়া পাহাড় বেয়ে!
যেতে হবে সাইংপ্রা আপার স্ট্রিমে। গাইড দাদা বললো বেশি না আরো ১৫ মিনিট!

সম্ভবত এই ১৫ মিনিট কথাটা গত ১ ঘন্টায় ১০ বার শুনেছি!
মনে মনে বললাম আপনার ১৫ মিনিটের গুষ্টিকিলাই!

এবার খাড়া উঁচু পাহাড় বেয়ে উঠতে থাকলাম সবাই!
অন্ধকার গহীন বুনো জঙ্গল! কোনো ট্রেইল নেই!
জোঁকে ভরপুর! মনে হচ্ছিলো আমাদের যেন বাই ওয়ান গেট ১০ টেনশন ফ্রি এর অফার দিয়েছিলো যেটা আমরা নির্বুদ্ধিতায় কিনে নিয়েছি।

প্রায় ৩৫-৪০ মিনিট খাড়া পাহাড় বেয়ে উঠে আবার নিচে নামার পর সাইংপ্রা চতুর্থ র্স্টেপের দেখা পেলাম!
পৌছার সাথে সাথে বসে পড়লাম বোল্ডারে পা ভিজেয়ে…

আমরা ৪ জন আমি আরিফ ভাই, পলাশ ভাই আর আন্নি!
রাতের তারা ভরা আকাশ আর সাইংপ্রা!
যেন এক স্বর্গীয় অনুভূতি!

পুরো টিম এখনো এসে পৌছায়নি। আমরা অপেক্ষায় আছি। আর সম্ভবত বাকিরা ও আমার মতো করে সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে নিচ্ছিলো মনে মনে!

হুট করে পলাশ ভাই আর আরিফ ভাই বলে উঠলো, ‘কংগ্রাচুলেশন! যদি ভুল করে না থাকি সম্ভবত বাংলাদশের প্রথম কোনো মেয়ে ট্রেকার হিসেবে তোমরা দুজন সাইংপ্রা স্পর্শ করেছো।

আহ্! এটা শুনেই সাইংপ্রা স্পর্শের আনন্দটা দ্বিগুন হয়ে গেছিলো আমার!

(অবশ্য পরে জানতে পারি আমাদের আগে আর একজন মেয়ে গেছিলেন)

আহ সা  ইংপ্রা!
এখন শুধু সকাল হলেই তোমায় স্বচক্ষে গ্রাস করার অপেক্ষা!!

বাকি টিমমেটদের নিয়ে আলী একটু পর হাজির হলো! আসার সাথে সাথেকাজে নেমে পড়লো ও!
কি খেয়ে যে এতো এনার্জি পায় ছেলেটা খোদা জানে!
সবাই যখন রেস্ট নিতে ব্যস্ত তখন সে টেন্ট বিছাতে ব্যস্ত!
ওখানে টেন্ট ফেলার মতো খুব একটা সুবিধাজনক জায়গা ছিলো না, তবুও রাতটা কাটাতে হবে!

আমরা বসে বসে রাতের সৌন্দর্য্য উপভোগ করছিলাম!
আমার কাছে চাঁদনী রাতের চেয়ে ও এই লক্ষ কোটি তারাদের আকাশ ই বেশি পছন্দ!

টেন্ট টাঙ্গানো হয়ে গেলে আমরা মুটামুটি সবাই চেঞ্জ করে টেন্টের ভেতর ঢুকে পড়লাম!

রাতের ক্যাম্পিং এর একমাত্র ছবি!
রাতের ক্যাম্পিং এর একমাত্র ছবি!

আলী সাথে আরো দুজন সম্ভবত রান্না করায় ব্যস্ত।
আমি টেন্টে চোখ বুজার সাথে সাথে ঘুম নেমে এলো চোখে!

একটু পর খেয়াল হলো ওরা আমাকে খেতে ডাকছে, কিন্তু না!আমি সাফসাফ বলে দিয়েছি খাবো না, আমি ঘুমাই। তোমরা খাও!

ঠিকিই না খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম। চোখ বুজতে বুজতে এটাই ভাবছিলাম কাল সকালে যখন ঘুম ভাঙ্গবে, না জানি আমার সকাল টা কতো স্বর্গীয় হবে!

টিক-টক-টিক-টক-টিক!
এখন অপেক্ষা এক স্বর্গীয় সকালের!

ছবি ও লিখা: আফরিন সানজিদ

১ম পর্ব

ব-দ্বীপ
শুধুমাত্র আমাদের প্রাণপ্রিয় বাংলাদশের জল, স্হল, জনপদ আর প্রকৃতিকে উপস্হাপন করাই আমাদের মূল লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য।

Leave a Reply

সর্বশেষ

পান ব্যবসায়ীর বাড়িতে চাকুরী হতে যে রাজ্যপাটের ভিতঃ বালিয়াটির জমিদার বাড়ি

পান ব্যবসায়ীর বাড়িতে চাকুরী হতে যে রাজ্যপাটের ভিতঃ বালিয়াটির জমিদার বাড়ি আশপাশে সাভার, ধামরাইয়ের মতো প্রাচীন বনেদী সব জনপদ থাকতে...

এক অদ্ভুত, অপূর্ব সুন্দর পাখি – হরিকল

এক অদ্ভুত, অপূর্ব সুন্দর পাখি - হরিকল। ভাল করে বলতে চঞ্চুমোটা হরিকল। ইংরেজি নাম Thick Billed Green Pigeon. বৈজ্ঞানিক নাম...

পালং খিয়াং (Palong Khiyang) ঝর্ণা, বান্দরবন

পালং খিয়াং (Palong Khiyang) ঝর্ণা বান্দরবন জেলার আলীকদমে অবস্থিত। বেশ দূর্গম পথ , তবে মারাত্মক লেগেছে। ফ্লাশ ফ্লাডে পাহাড়...

আজিজ মাস্টারের বাড়ি

‘মুন্সী’ ‘খাঁ’ টাইটেল যে হিন্দুদেরও হয় তা জানতাম, তবে খুব একটা common  নয়। Afterall ‘মুন্সী’ শব্দটি ফার্সি। হিন্দু মুন্সী পদবীধারীর...

ঝরঝরি ট্রেইল

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড রেইঞ্জের সবচাইতে বুনো ট্রেইল বলা হয় এই ঝরঝরি ট্রেইলকে। এই ট্রেইলে মোটামুটি দেখবেন জোঁক, বানর, সাপসহ নানা...

পাঠক প্রিয়

চর কুকরী মুকরি, ঢাল চর, চর মনতাজ ভ্রমণ

চর কুকরী মুকরি, ঢাল চর, চর মনতাজ ভ্রমণ অল্প খরচেই আপনি ঘুরে আসতে পারেন বাংলাদেশের দক্ষিনের নদী ও সাগর বেষ্টিত ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায়। হাতে ১...

এবার গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকতে দেখা মিললো তীব্র বিষধর ‘রাসেল ভাইপার‘ সাপ

গতকাল চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডের গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকতে রাসেল ভাইপারের দেখা মিলেছে।  পৃথিবীর ৫ম বিষধর সাপ এই রাসেল ভাইপার, আক্রমণে বিশ্বে ১ম ( মতান্তরে দ্বিতীয় )। অর্থাৎ...

মধুখাইয়া ট্রেইল ও ঝর্ণা, সীতাকুন্ড চট্টগ্রাম

২০১৭ সালের সেপ্টেমর মাস,কুরবানী ঈদের জাস্ট পরের দিন অপু নজরুল ভাইয়ের ফোন। আড়মোড়া ভেঙ্গে উঠলাম! ফোনে অপু ভাই বললো - ‘আসিফ ভাই! চলেন মধুখাইয়া...

কালচিতি / কালাচিতি / কালাচ / common krait

কালচিতি / কালাচিতি / কালাচ / common krait : একে বলা হয় রহস্যময় সাপ। ফনাহীন মারাত্মক বিষধর এই সাপে বাংলাদেশে এবং পশ্চিমবঙ্গে সবচেয়ে বেশি মানুষ...

ভ্রমণ ডায়েরির পাতা থেকে, সাইংপ্রা: পর্ব – ২

সাইংপ্রা (২য় পর্ব) ভ্রমণ_ডায়েরির_পাতা_থেকে (৬ অক্টোবর,২০১৮) ভ্রমণ ডায়েরির পাতা থেকে, সাইংপ্রা (১ম পর্ব) আমার মাথার ঠিক পিছনেই মুটামুটি বড়সড় একটা চারকোণা জানালা কাটা আছে! একজনের স্লিপিং ব্যাগ সিংগেল...
error: Content is protected !!