• সব পোস্ট
Home Blog Page 5

থানচির গহীনে

নাফাখুম
নাফাখুম

থানচি মানেই এক অন্যরকম ভালোবাসা। দুর্গম ট্রেকিং রুট, দুই ধাঁরে উঁচু উঁচু পাহাড়ের সাথে সাঙ্গু নদীর অববাহিকা , এডভেঞ্চার প্রেমী যেকাউকে আকর্ষণ করতে বাধ্য।

আর বেশি ভূমিকা না দিয়ে, সরাসরি ট্যুরে চলে আসি।

ঢাকা থেকে আমরা ৯ জনের একটা গ্রূপ ১৬ই সেপ্টেম্বর বুধবার বান্দরবানের উদ্দেশে রওনা করি। কপাল করে এমন একটা বাস পাই, যেটা আমাদেরকে বান্দরবান যে পৌঁছাতে পেরেছিল , তাঁতেই হাজার শুকরিয়া।

ভোর ৬ টার দিকে বান্দরবান পৌঁছানোর কথা থাকলেও , বাসের অতি মানবীয় আচরণে আমরা সকাল ৭:৩০ এ নামতে পারি বান্দরবন।

দ্রুত সকালের নাস্তা শেষ করে, আমরা একটা চাঁদের গাড়ি ঠিক করে ফেলি , আর রওনা করি , থানচির উদ্দেশে।

এটা আমার দ্বিতীয় বার থানচি যাওয়া, বান্দরবন থেকে থানচি যাওয়ার রুট , যে কাউকে মুগ্ধ করতে বাধ্য।

দুই পাশের সারি সারি পাহাড়ে, মেঘ রোদ্রের খেলার সাথে , চাঁদের গাড়ির উপর দিয়ে মাথা বের করে দিয়ে চলতে থাকি থানচির পথে।

তবে সবাই একসাথে , চাঁদের গাড়িতে দাঁড়াবেন না , এতে গাড়ির ব্যালেন্স হারাতে পারে। যা পাহাড়ি পথে , খুবই বিপদজনক।

পথিমধ্যে, বিজিবি চেকপোস্টে আমাদের সবার নাম এন্ট্রি করে নেই। এখানে একটি সুন্দর ক্যাফেটেরিয়াও হয়েছে এখন, যা আমি আগেরবারে দেখিনি। তাঁদের আমড়ার জুসটা নাকি খুবই ফেমাস, তবে বাজেট ট্রাভেলর হিসাবে আমার আর ট্রাই করা হয়নি।

বেলা ১২ টা নাগাদ আমরা পৌঁছাই থানচি , সেখানে আগে থেকেই আমাদের জন্য অপেক্ষারত ছিল আমাদের গাইড, সিমিয়ান দাঁ।

থানচি থানায় দ্রুত নাম এন্ট্রি করে, আমরা আমাদের দুপুরের লাঞ্চ করে নেই, এবং ইঞ্জিন বোটে করে রওনা করি বড় পাথর-তিন্দুর উদ্দেশে।

দুইটা বোট নিয়েছিলাম, এক এক বোটে সর্বোচ্চ, পাঁচ জন বসতে পারে, এবং সবাইকে অবশ্যই লাইফ-জ্যাকেট পরে নিতে হবে।

আর হে, সবথেকে ইম্পরট্যান্ট , এখান থেকেই আপনার ফোনের নেটওয়ার্ক কমতে শুরু করবে, এবং কিছুক্ষনের মধ্যেই আপনি প্রবেশ করবেন নেটওয়ার্ক বিহীন এক অন্য রাজ্যে।

সাঙ্গুর বুকচিড়ে, দুপাশের উঁচু সবুজ পাহাড়ের মধ্য দিয়ে ঘণ্টাখানিকের মধ্যেই পৌঁছে গেলাম তিন্দু বড় পাথর । এখানকার , বিশাল বিশাল দৈত্যাকার পাথর গুলো আপনার নজর কাড়তে বাধ্য।

বোট থেকে নেমেই, ট্রেকিংয়ের প্রস্তুতি, ব্যাগ গুলো বোটে রেখে,

শুরু করলাম আমাদের ট্রেকিং।

গন্তব্য লীলুক ঝর্ণা , খারা পাহাড় বেয়ে উঠতে লাগলাম । উপরে উঠা যেন শেষ হচ্ছিলনা আর। আমাদের গাইড আমাদেরকে পথ দেইখিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল আমাদের গন্তব্যে।

খাড়া পাহাড় বেয়ে মোটামুটি যখন উপরে চলে এসেছি, তখনই ঝর্ণা আমাদের সামনে দেখা দিল, তবে দূর থেকে । ঝর্ণার পানি দূর থেকে পড়তে দেখে আবারো নতুন উদ্যমে শুরু করলাম সামনে এগুনো।

দুরথেকে দেখা, লীলুকের প্রথম রূপ
দুরথেকে দেখা, লীলুকের প্রথম রূপ

এবার শুধু নামার পালা,

তাই আগের থেকে কষ্ট কম হচ্ছে । সর্বমোট ঘন্টা দুয়েকের ট্রেকিং শেষে আমরা লীলুক ঝর্ণার সামনে এসে হাজির।

ঝর্ণায় পর্যাপ্ত পানি ছিল, এবং সেই সাথে ছিল প্রচুর বাতাস।

ঝর্ণার কাছাকাছি যাওয়া আগেই আমাদের পুরো শরীর ভিজে শেষ ।

লীলুক ঝর্ণা, বাংলাদেশের অন্যতম একটি উঁচু ঝর্ণা। ঝর্ণার মায়াবী কান্নায় সিক্ত হয়ে আসতেই মনচাচ্ছিলো না সেখান থেকে । কিন্তু সন্ধ্যা হয়ে আসছে , তাই আমরা রওনা করে দিলাম ।

দানবীয় লীলুক ঝর্ণা
দানবীয় লীলুক ঝর্ণা

পূর্বের নেয় , ট্রেকিং করে ফিরে আসলাম তিন্দু, যেখানে আমাদের বোট অপেক্ষা করছিল। এবার রেমাক্রি যাওয়ার পালা ।

সন্ধ্যা হয় হয়, এমন মুহুর্তের এই বোট জার্নিটা ছিল খুবই রোমাঞ্চকর। কিছুক্ষনের মধ্যে আমরা পৌঁছে গেলাম রেমাক্রি।

আমরা আজ রাতে এখানেই থাকব, সবাই ফ্রেস হয়ে কটেজে উঠে পড়লাম। কটেজটা বেশ সাজানো গুছানো ছিল ।

আমরা আমাদের গাইডের সাথে কথা বলে , আগে থেকেই এই কটেজ এবং এখানে খাওয়ার বিষয়টি ঠিক করে রেখেছিলাম।

কটেজে রেস্ট নিয়ে , বেরিয়ে পড়লাম রাতের রেমাক্রি ঘুরে দেখতে । কয়েকটি ছোট ছোট দোকান রয়েছে , সেখানে চা – বিস্কুট খেয়ে চললো রাতের আড্ডা।

আমাদের সাথে যোগ দিলো , আমাদের গাইড সহ আরো লোকাল কয়েকজন , বেশ ভালো একটা আড্ডা শেষে , রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ি। কারণ পরদিন খুব ভোরে উঠা লাগবে ।

আজ আমাদের শেষ দিন, খুব ভোরে উঠেই কটেজ থেকেই দেখতে পাচ্ছি পাহাড়ের চূড়ায় মেঘের খেলা ।

আজকে আমরা নাফাখুম যাবো ।

আমাদের পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী, আমাদের ট্রেকিং করেই নাফাখুম যাওয়ার কথা, এবং সেভাবেই আমরা আমাদের ট্রেকিং শুরু করলাম।

সাথে করে লাইফ-জ্যাকেট নিয়ে নিলাম, এবং হালকা নাস্তাও করে নিলাম।

ট্রেকিং শুরুর প্রথম দিকে , বেষকয়কজন লোকাল লোকজন বললো, বোট নিয়ে যেতে, পানি কিছুটা বেশি । কিন্তু আমরা আমাদের আগের সিদ্ধান্ততেই অনড়, এবং ট্রেকিং করেই চলতে থাকলাম ।

এখানে বলে রাখা ভালো, রেমাক্রি থেকে নাফাখুম রুটে, সবসময় বোট পাওয়া যায় না । যখন পানি কিছুটা বেশি থাকে , তখনই আপনি অনেকখানি পথ বোটে করে পাড়ি দিতে পারবেন ।

যাইহোক, আমরা আমাদের ট্রেকিং টা খুব ভালোই, উপভোগ করতে থাকলাম। ভোরের ঠান্ডা হিমেল বাতাস , এবং ঝিরিপথের পানির কল কল শব্দ আপনাকে অন্য এক জগতে নিয়ে যেতে বাধ্য ।

ঘন্টা দেড়েক ট্রেকিং করার পর, একটা ছোট ঝর্ণা পেলাম, সুড়ঙ্গের মতো ছোট একটা পথ, আর সেটার শেষেই ঝর্ণাটর অবস্থান । এখানে কিছুক্ষন শীতল হয়ে, ঝর্ণার পাশেই একটা ছোট পাহাড়ি দোকান ছিল, সেখানে কিছু চা-নাস্তা শেষ করে, আবার রওনা করি ।

ঘন্টা তিনেকের ট্রেকিং শেষে আমরা পৌঁছাই , বাংলার নায়াগ্রা খেত নাফাখুমে ।

নাফাখুম
নাফাখুম

প্রচুর পানি ছিল ঝর্ণায়, আমরা লাইফ-জ্যাকেট পরে খুমের পানিতে নেমে পড়লাম , অনেকে আবার ঝাঁপও দিচ্ছিল।

বেশ কিছুটা সময় , এখানে আমরা আমাদের ঝর্ণা বিলাস শেষ করে রেমাক্রির উদ্দেশে রওনা করি।

এবার গ্রূপের সবাই , মোটামুটি বেঁকে বসেছে, হেঁটে আর যাবো না, তাই ফিরার পথে বোটে করে ফিরে আসি রেমাক্রি ফলসে।

প্রায় ঘন্টা দুয়েক বসে রইলাম মধ্য দুপুরের রোদ্রুল খোলা আকাশের নিচে, রেমাক্রি ফলসটাই যে এমন, কখন যে দুই ঘন্টা পার হয়ে গেল বোঝা মুশকিল।

ঠান্ডা পানির প্রবাহে হয়তো তখন কোনকিছু টের পাইনি, কিন্তু বোটে করে যখন থানচির উদ্দেশে রওনা করি, তখনি সবাই মোটামুটি হাত এবং নাক জ্বালাপোড়া অনুভব করি।

বুঝতে বাকি রইল না , সূর্যি মামা আমাদের চামড়ার বারবিকিউ করে ফেলেছে।

যাইহোক , আমরা থানচি চলে আসি, এবং দুপুরের খাবার খেয়ে , চাঁদের গাড়িতে করে বান্দরবান বেক করি। আগে থেকেই ঢাকার বাসের টিকেট করা ছিল, তাই রাতের খাবার শেষ করেই ঢাকার উদ্দেশে রওনা করি।

আর এভাবেই ইতি টানলাম এবারের থানচি অভিযানের ।

সাবধানতা :

বর্ষা মৌসুমে এই রুটে না অসাই উত্তম, তবে আপনি যদি এডভেঞ্চার প্রেমী হন, তাহলে আপনাকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা প্রস্তুতি নিয়েই এই রুটে যেতে হবে। অবশ্যই লাইফ জ্যাকেট পরে নিবেন, আপনি সাঁতার পারলেও লাইফ জ্যাকেট পরিধান করে থাকবেন।

এবং গাইডের সাথে কথা না বলে, কোথাও নেমে পড়বেন না, সর্বদা গাইডকে অনুসরণ করুন।

যা যা অবশ্যই সাথে রাখবেন :- জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি,

দরকারি ঔষুধ ।

খরচ :

বাস টিকেট – ১১,১৬০ (আসা-যাওয়া)

চাঁদের গাড়ি- ৩,৩০০ (আসা-যাওয়া)

ইঞ্জিন বোট- ১০,০০০ (২ টা বোট এবং নাফাখুম থেকে ফেরার সময় আলাদা একটা বোট।)

গাইড – ৩,০০০

কটেজ- ১,৫০০

এবং দুই দিনের খাবার দাবার সহ, আমাদের জনপ্রতি ৩৮০০ টাকা করে খরচ হয় ।

পরিশেষে , যেখানেই যান, অবশ্যই সবসময় খেয়াল রাখবেন, আপনার দ্বারা যেন পরিবেশের ক্ষতি না হয় । তাই আপনার সাথে করে নিয়ে যাওয়া অপচনশীল দ্রব্য , ফেলে রেখে আসবেন না ।

হ্যাপি এন্ড সেফ ট্রাভেল।

Courtesy: MD Shahadat Hossen

সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণা, জাফলং, সিলেট

জাফলং এর জিরো পয়েন্ট থেকে মাত্র ১৫-২০ মিনিটের রাস্তার দূরত্বে অবস্থিত এই সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণা। পাহাড়ের নিকটে গেলেই এর আসল সৌন্দর্য সম্মুখে আসে৷ সবুজ গাছপালা আর পাথর ঢাকা এই ঝর্ণা৷
সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্না, জাফলং সিলেট

সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণা, জাফলং সিলেট

ঘন সবুজ গাছপালা আর পাথুরে পাহাড়ের এর মাঝে বেড়ে ওঠা এক সৌন্দর্যের নাম মায়াবীঝর্ণা। মায়াবী ঝর্ণার অপর নাম সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণা।

সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্না, জাফলং সিলেট
সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্না, জাফলং সিলেট

ভারত সীমান্তে অবস্থিত এই ঝর্ণার দেখতে বি এস এফ এর সাহায্য নিয়ে তবেই পৌঁছানো যায়৷ পাহাড়, ঝর্ণা, চা বাগান আর জল জঙ্গলের কাব্যের পসরা সাজিয়ে অপরূপ সিলেট এমনিতেই সকলের নজর কেড়েছে।

বিশেষ করে বর্ষায় এটি সাজে নবতর রূপে আর মাধুর্যে। সিলেটের এমন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে বেশ কয়েকবছর যাবত বাড়তি আমেজ সৃষ্টি করেছে সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণা। বর্ষাকাল এখানে ঘোরার উপযুক্ত সময়।

জাফলং এর জিরো পয়েন্ট থেকে মাত্র ১৫-২০ মিনিটের রাস্তার দূরত্বে অবস্থিত এই সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণা। পাহাড়ের নিকটে গেলেই এর আসল সৌন্দর্য সম্মুখে আসে৷ সবুজ গাছপালা আর পাথর ঢাকা এই ঝর্ণা৷

এর বেশ কয়েকটি ধাপ রয়েছে এবং প্রায় সবগুলোই বিপজ্জনক এবং পিচ্ছিল৷ প্রথম দ্বিতীয় ধাপ ফেরিয়ে তৃতীয় ধাপে উঠলেই দেখা পাওয়া যায় একটি সুড়ঙ্গের। এই সুড়ঙ্গের উৎস কিংবা ব্যাপ্তি সম্পর্কে তেমন কোন ধারণা পাওয়া যায় না।

অল্প কিছু দূর যাওয়ার পরই আর প্রবেশের উপযুক্ত থাকে না সুড়ঙ্গটি৷ এখানে জল দুভাগ হয়ে এক ভাগ সুড়ঙ্গের দিকে আরেকভাগ নিচে নামতে থাকে।

পাহাড়ের গা বেয়ে কয়েকটি ধারায় নেমে আসে ঝর্ণার দুধ সাধা পানি৷ প্রথমে বড় পাথর দিয়ে আলাদা দুভাগ হয়ে যায় ঝর্ণার ধারা, পরে ৪ ভাগ এবং নিচে নামতে নামতে আরো বেশ কয়েকটি ধারা দিয়ে জল বইতে থাকে। পাথর এবং গাছপালা ঝর্ণাটিকে দিয়েছে আলাদা সৌন্দর্য।

কখনো দেখবেন সবুজ গাছগাছালির মাঝ দিয়ে বেয়ে আসছে পানির স্রোত, কখনো বা পাথরের মাঝ দিয়ে৷ ঝর্ণার পানি পড়ে নিচে পুকুরের মতো গর্তের সৃষ্টি হয়েছে৷ শীতল এই অমিয় ধারায় নিজেকে পবিত্র করে নিতে পারেন সহজেই৷

কিভাবে যাবেন 👇

দেশের যেকোন প্রান্ত থেকে পৌছাতে হবে সিলেট এ। সিলেট থেকে লোকাল বাস কিংবা লেগুনায় করে জাফলং বাজারে৷

ঢাকা থেকে বাসে কিংবা ট্রেনে সিলেট পৌঁছানো যায়। নন এসি বাস ভাড়া ৪০০-৫০০ আর এসি বাসে খরচ পড়বে ৮০০-১২০০ টাকা। ট্রেনে খরচ পড়বে ৩০০-৩৫০ টাকা। জাফলং বাজার থেকে জাফলং জিরো পয়েন্টে কয়েক মিনিট হেঁটেই পৌছাতে পারবেন৷

জিরো পয়েন্ট থেকে সংগ্রামপুঞ্জি যেতে পারেন দু ভাবে। জিরো পয়েন্ট পার হয়ে সোজা মিনিট বিশেক হাঁটলে সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণা দেখতে পাবেন। এই পথ শর্টকাট।

এছাড়া মামার বাজার থেকে জাফলং জিরো পয়েন্টের দিকে কিছু রাস্তা হেঁটে মা রেস্টুরেন্টের সামনে দিয়ে বাঁয়ে মোড় নিতে হবে। ওখান থেকে নৌকা নিয়ে সংগ্রামপুঞ্জি বাজার জনপ্রতি ১০ টাকা ভাড়া নেবে।

এ পথ দিয়ে গেলে খাসিয়া পল্লী বাগান দেখতে পাবেন, ঘন লম্বা সুপারি ও নাম না জানা আরো অনেক বৃক্ষ জড়িয়ে বেয়ে উঠছে পানের গাছ।

এই বাগানের ভেতরের রাস্তায় ১০ মিনিটের মতো হাঁটলেই সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণা। ভালো হয় যাওয়ার পথে খাসিয়া পল্লী হয়ে এবং ফেরার পথে সরাসরি চলে আসলে। তাতে দুটি পথের সৌন্দর্যই দেখা হয়ে যাবে।

কার্টেসী: Sakhawat Nishan

টাউন হল, রংপুর জেলা

টাউন হল, রংপুর জেলা
টাউন হল, রংপুর জেলা

টাউন হল, রংপুর জেলা

রংপুর বাংলাদেশের রংপুর বিভাগের অন্যতম প্রধান শহর এবং ১৮৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের প্রাচীনতম পৌর কর্পোরেশনের একটি। রংপুর শহর ১৭৬৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিভাগীয় সদর দপ্তর হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে।

১৮৮৫ সালে একটি রঙ্গ মঞ্চ বানানোর উদ্যোগ থেকেই গড়ে উঠেছিলো রংপুর টাউন হল। সেখানে নাট্যচর্চা ও সংস্কৃতি বিকাশের জন্য রঙ্গপুর নাট্য সমাজ (রংপুর ড্রামাটিক অ্যাসোসিয়েশন) এ উদ্যোগ নেয়। তাদের এ উদ্যোগে সাড়া দিয়ে এগিয়ে আসেন কাকিনার রাজা মহিমা রঞ্জন রায়।

টাউন হল, রংপুর জেলা

দীর্ঘ ছয় বছর অপেক্ষা শেষে নাটক পাগলদের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডকে বিকশিত করতে ১৮৯১ সালে রাজা মহিমা রঙ্গ মঞ্চ প্রতিষ্ঠার জন্য প্রায় ৩শ ৪০ শতক (১০ বিঘা ৩ কাঠা) জমি ইংরেজ সরকারের কাছে লিখে দেন।

এর পাঁচ বছর পর ১৮৯৬ সালে সেক্রেটারি অফ স্টেট ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ও রঙ্গপুর নাট্য সমাজের মধ্যে একটি দলিল সম্পাদিত হয়। সেই দলিল অনুযায়ী নাট্য সমাজ ওই জমির মালিকানার অধিকারী হয়।

টাউন হলটি শুধু আনন্দ, চিত্ত বিনোদন বা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সূতিকাগার নয়। অনেক বেদনা ও কষ্টের স্মৃতিও মিশে আছে এর সাথে । হলের ইট পাথরের রন্ধ রন্ধ্রে জড়িয়ে আছে ৭১’র স্মৃতিকথা। বীরাঙ্গনাদের আর্ত চিৎকার। গুমোট চাপা ধর্ষিতার কান্না। পাক হানাদার বাহিনী ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় এই টাউন হলকে বানিয়েছিল ‘নারী নির্যাতন’ কেন্দ্র। যুদ্ধের বিভীষিকায় অসংখ্য নারী এখানে সম্ভ্রম হারিয়েছে। এখানে হত্যা করা হয়েছে অনেক মুক্তিকামী নিরাপদ মানুষকে। আর সেই বিভীষিকাময় দিনের স্মৃতি ধারণ করে এখনও দাঁড়িয়ে আছে রংপুর টাউন হল।

বর্তমানে টাউন হল ক্যাম্পাস জুড়ে রয়েছে ভারতের অন্যতম প্রাচীন লাইব্রেরিগুলির একটি। যা রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি নামে পরিচিত। রংপুর টাউন হল প্রতিষ্ঠার প্রায় ৪২ বছর পূর্বে ১৮৫৪ সালে লাইব্রেরিটি স্থাপিত হয়েছিল।

রংপুর পাবলিক লাইব্রেরিকে কেন্দ্র করেই লাইব্রেরি ভবনের একাংশে প্রতিষ্ঠিত হয় রঙ্গপুর সাহিত্য পরিষদ, যা কলকাতার বাইরে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের প্রথম শাখা। পাশেই রয়েছে স্থপতি তাজউদ্দিন চৌধুরীর ডিজাইনে করা আধুনিক স্থাপত্য শৈলীর অপূর্ব নিদর্শন রংপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার।

এদিকে রংপুর টাউন হলের ফলকে এখনও কাকিনার রাজা মহিমা রঞ্জন রায়ের নাম লেখা রয়েছে। যিনি শিক্ষাগত যোগ্যতায় পিছিয়ে থাকলেও, ছিলো শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিত্ব। শিক্ষার প্রতি তার অগাধ ভালোবাসা থেকে অনগ্রসর বাঙালিকে সুশিক্ষার আলোয় আলোকিত করার জন্য বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, লাইব্রেরির জন্য জমি দান করেন তিনি। রংপুরের অনেক স্থাপনার সাথে মিশে আছে স্মৃতি। এ কারণে রংপুর টাউন হলসহ কৈলাশরঞ্জন স্কুল, রংপুর পাবলিক লাইব্রেরির নাম ফলকে তার মহিমার গৌরব গাঁথা স্মরণ করিয়ে দেয়।

যারাই রংপুর আসবেন টাউন হল ঘুরে আসতে পারবেন।

লিখা ও ছবি: রবিন ফয়সাল

” মিরিঞ্জা “, লামা, বান্দরবান

মিরিঞ্জা, লামা, বান্দরবান
মিরিঞ্জা, লামা, বান্দরবান

A place where you will be able to watch the Ocean of the fog

ভাবুন তো,মেইন রোড থেকে জাস্ট ১৫ মিনিটের মতোন হেঁটেই যদি এমনটা দেখতে পাওয়া যায়, এমন বিশাল বড় কুয়াশার সমুদ্র, তবে কেমনটা ফিল পাওয়া যাবে?

অথচ এই সুন্দর জায়গা টা ঢাকা – লামা আলীকদম সড়কের মিরিঞ্জা পাড়া জায়গাতে। জাস্ট মিরিঞ্জা পাড়ায় নেমে হাতের বামে থাকা মাটির রাস্তা ধরে ১৫ মিনিট হাঁটলেই দেখা যাবে এই মুগ্ধকর পরিবেশ।

মিরিঞ্জা, লামা, বান্দরবান, কুয়াশার সমুদ্র
মিরিঞ্জা, লামা, বান্দরবান, কুয়াশার সমুদ্র

আমি গিয়েছিলাম ঠিক ৭ টার দিকে।

আপনি যদি ঢাকা – লামা আলীকদমে বাসে আসা কোন যাত্রী হয়ে থাকেন তবে এই ভিউ দেখতে পাওয়ার কথা।
কিন্তু বাস থেকে দেখা আর এমন উন্মুক্ত জায়গা থেকে চোখ জুড়িয়ে তাকিয়ে থাকা দুটি ভিন্ন বিষয়।

জায়গাগুলো কোন টুরিস্ট স্পট না বিধায় এখনো অনেক পরিস্কার পরিচ্ছন্ন।

ঘুরতে গিয়ে এই জায়গার পরিবেশ নষ্ট না করার অনুরোধ করছি।

স্থান – ঢাকা – লামা/ আলীকদম ( হানিফ / শ্যামলী এন আর ট্রাভেলস চলে) – মিরিঞ্জা পাড়া – স্বাগতম লামা পৌরসভা লেখা অমন একটা বিলবোর্ড আছে। ওটার পাশেই থাকা মাটির রাস্তা ধরে এগিয়ে যাওয়া।যেতে যেতে একটা মোবাইল সেলুলার টাওয়ার দেখা যাবে। ওটা পার করে আর ৫ মিনিট হাঁটলেই এই পরিবেশ।

মিরিঞ্জা, লামা, বান্দরবান, কুয়াশার সমুদ্র
মিরিঞ্জা, লামা, বান্দরবান, কুয়াশার সমুদ্র

হ্যাপি ট্রাভেলিং। ❤ — at Mirinja, Lama, Bandarban.

সৌজন্যে: Avishek Sharma Pranto

হরিপুর বড়বাড়ি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলাস্থ হরিপুর ইউনিয়নে অবস্থিত। ১৮শ শতাব্দীতে প্রাসাদটি জমিদার কৃষ্ণপ্রসাদ রায় চৌধুরী (১৮৭০-১৯৩৬) কর্তৃক নির্মিত হয়েছিল।

হরিপুর বড়বাড়ি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলাস্থ হরিপুর ইউনিয়নে অবস্থিত। ১৮শ শতাব্দীতে প্রাসাদটি জমিদার কৃষ্ণপ্রসাদ রায় চৌধুরী (১৮৭০-১৯৩৬) কর্তৃক নির্মিত হয়েছিল।

হরিপুর বড়বাড়ি
হরিপুর বড়বাড়ি

হরিপুর বড়বাড়ি তিতাস নদীর পূর্ব পারে অবস্থিত। বাড়িটি ‘হরিপুর জমিদারবাড়ি’ বা ‘হরিপুর রাজবাড়ি’ নামেও পরিচিত। এটি গ্রামের পশ্চিম পার্শে এবং নাসিরনগর সদর হতে ১৫কিমি দক্ষিণপূর্বে তথা নাসিরনগর উপজেলা ও মাধবপুর উপজেলার সংযোগ পথে অবস্থিত।

বিশেষত, বর্ষা মউসুমে যখন পানিতে চারদিক ভরে উঠে তখন এর সৌন্দর্য অনেকাংশে বেড়ে যায়।

এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য চলচিত্র প্রযোজকগনের দৃষ্টি আকর্ষণ করায় হরিপুর বড়বাড়িতে অনেক ছবি নির্মিত হয়েছে।

কিভাবে যাবেন – ঢাকা হতে সিলেটগামী যেকোনো বাসের মাধ্যমে মাধবপুর বাসস্ট্যান্ডে। সেখান থেকে সিএনজি নিয়ে বললেই চলবে ‘ হরিপুর বড়বাড়ি যাবো ‘ !

পান্তুমাই: এ যেন একখণ্ড স্বর্গ!

পান্তুমাই, ছবি : পল্লব বিশ্বাস

পান্তুমাই : এ যেন একখণ্ড স্বর্গ !

বাংলাদেশ – ভারত সীমান্তে মেঘালয় এর কোলে এক অসম্ভব সুন্দর গ্রাম – পান্থুমাই।

পান্তুমাই, ছবি : পল্লব বিশ্বাস

এটি সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলার পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের একটি গ্রাম। পেছনে মেঘালয় পাহাড় এবং বয়ে চলা পিয়াইন নদীর পাড়ে এই গ্রামটি সম্ভবত বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর গ্রামগুলোর একটি। এই গ্রামের পাশেই বিশাল ঝর্ণা যার স্থানীয় নাম ফাটাছড়ির ঝর্ণা যা আমাদের কাছে পান্থুমাই / পাংথুমাই / পানতুমাই ঝর্ণা (Panthumai Waterfall) হিসেবে পরিচিত। কেউ কেউ আবার বড়হিল ঝর্ণা বলেও ডাকেন। ঝর্ণাটি ভারতের মধ্যে পড়লেও পিয়াইন নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে খুব কাছ থেকে দেখা যায়। পাশেই বিএসএফের ক্যাম্প। বরইগাছের সারি দিয়ে এখানে দুই দেশের সীমানা ভাগ করা। এখানে বিজিবির কোনো চৌকি নেই। তাই সীমানার কাছাকাছি যাওয়া বিপদজনক।

ছবি: ইন্টারনেট

শাঁ শাঁ শব্দে কয়েক শত ফুট উঁচু পাহাড় থেকে নেমে আসছে শুভ্র জলধারা। পাহাড়ের গা বেয়ে নেমে আসা জলরাশিকে দূর থেকে দেখলে মনে হবে যেন কেউ বিছিয়ে রেখেছে সাদা শাড়ী। কাছে গেলে ঝর্ণার শব্দে ভুল ভাঙবে পর্যটকের। বিমুগ্ধ হয়ে আপনি চেয়ে থাকতে হবে পাহাড় আর জলের এই মিতালির দিকে। মন চাইবে ঝর্ণাধারা দিয়ে নেমে আসা শীতল পানিতে পা ভিজিয়ে নিতে। তবে জলপ্রপাতের সৌন্দর্য্য উপভোগের জন্য আপনাকে সীমানার ওপারে পা রাখতে হবে না। বাংলাদেশের সীমানায় দাঁড়িয়েই আপনি নয়নজুড়ে উপভোগ করতে পারবেন পাংথুমাই রূপ-লাবণ্য। জলপ্রপাত দিয়ে নেমে আসা জলে ভিজিয়ে নিতে পারবেন শরীর।

‘বিছনাকান্দি–লক্ষনছড়া-পান্থুমাই’ এই তিনটি জায়গা ঘুরিয়ে আনতে নৌকার খরচ পরবে ক্ষেত্র বিশেষে প্রায় ১১০০-১৫০০ টাকা। লক্ষনছড়া মাঝি চিনে কিনা সেটা আগেই জিজ্ঞেস করে শিওর হয়ে নিবেন। তিনটি জায়গা মোটামোটি ভাবে ঘুরে হাদারপাড় ফিরে আসতে সময় লাগবে প্রায় ৫ ঘন্টা। তাই সিলেট থেকে আসার পথে গোয়াইনঘাট বাজারেই দুপুরের খাবার খেয়ে নিতে অথবা প্যাক করে নিতে পারেন। গোয়াইন ঘাট থেকে আপনাকে যেতে হবে হাদারপাড়। গোয়াইন ঘাট বাজার থেকে সিএনজি নিয়ে সহজেই হাদারপাড় যাওয়া যাবে। ভাড়া নিবে জনপ্রতি ৪০ টাকা। কেউ যদি সিলেট শহরের আম্বরখানা থেকে সিএনজি নিয়ে সরাসরি হাদারপার চলে আসেন, তাহলে হাদারপারের গনি মিয়ার ভূনা খিচুড়ি খেতে ভুলবেন না।

বিঃদ্রঃ আপনি এক নৌকা ভাড়া করে পান্থুমাই, বিছানাকান্দি ও লক্ষনছড়া ঘুরে আসবেন। এগুলো সব এক রুটে হওয়ার কারনে এক নৌকা দিয়ে এক দিনে কভার করা যায়।

কখন যাবেন

সিলেট নগরীর সৌন্দর্জ্যটা আসলে বর্ষাকালেই বেশী উপভোগ করা যায়। আর তা ছাড়া বর্ষার সময়ে পান্থুমাই ও ফুলে ফেপে উঠে পুরোদমে।

কিভাবে যাবেন

বাসে সিলেট

ঢাকা থেকে সিলেট এর উদ্দেশ্যে বাস ছেড়ে যায় গাবতলী এবং সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে৷বাস গুলো সকাল থেকে রাত ১২.৪৫ পর্যন্ত নির্দিষ্ট সময় পরপর ছেড়ে যায়৷ঢাকার ফকিরাপুল, সায়দাবাদ ও মহাখালী বাস স্টেশন থেকে সিলেটের বাসগুলো ছাড়ে। এ পথে গ্রীন লাইন পরিবহন, সৌদিয়া এস আলম পরিবহন, শ্যামলি পরিবহন ও এনা পরিবহনের এসি বাস চলাচল করে। ভাড়া ৮শ’ থেকে ১ হাজার ১শ’ টাকা। এছাড়া শ্যামলী পরিবহন, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, ইউনিক সার্ভিস, এনা পরিবহনের পরিবহনের নন এসি বাস সিলেটে যায়। ভাড়া ৪শ’ থেকে সাড়ে ৪শ’ টাকা। এনা পরিবহনের বাসগুলো মহাখালী থেকে ছেড়ে টঙ্গী ঘোড়াশাল হয়ে সিলেট যায়।

ঢাকা থেকে ট্রেনে সিলেট

ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে মঙ্গলবার ছাড়া সপ্তাহের প্রতিদিন সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে ছেড়ে যায় আন্তঃনগর ট্রেন পারাবত এক্সপ্রেস। সপ্তাহের প্রতিদিন দুপুর ২টায় ছাড়ে জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস এবং বুধবার ছাড়া সপ্তাহের প্রতিদিন রাত ০৯টা ৫০ মিনিটে ছাড়ে উপবন এক্সপ্রেস। শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন বিকাল ৪টায় ছাড়ে কালনী এক্সপ্রেস। ভাড়া দেড়শ থেকে ১ হাজার ১৮ টাকা। ট্রেনে গেলে রাত ৯.৫০ এর উপবন এক্সপ্রেসে জাওয়াটাই সব থেকে ভালো কারন আপনার যেতে যেতে সকাল হয়ে যাবে আর আপনি যদি রাতে ট্রেনে ঘুমিয়ে নিন তাহলে সকালে ট্রেন থেকে নেমেই আপনার ভ্রমন শুরু করতে পারেন আর সময় লাগবে ৭-৮ ঘন্টা।

চট্টগ্রাম থেকে ট্রেনে সিলেট

চট্টগ্রাম থেকে সোমবার ছাড়া প্রতিদিন সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে যায় পাহাড়িকা এক্সপ্রেস এবং শনিবার ছাড়া প্রতিদিন রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে উদয়ন এক্সপ্রেস। ভাড়া ১৪৫ থেকে ১ হাজার ১৯১ টাকা।ট্রেন এর টিকেট এর দাম: এসি বার্থ ৬৯৮ টাকা, এসি সিট ৪৬০ টাকা, ফার্স্ট ক্লাস বার্থ ৪২৫ টাকা, ফার্স্ট ক্লাস সিট ২৭০ টাকা. স্নিগ্ধা ৪৬০ টাকা, শোভন চেয়ার ১৮০ টাকা, শোভন ১৫০ টাকা, সুলভ ৯৫ টাকা।

ট্রেনের সময়সূচি এখানে দেখে নিন

(Bangladesh Railway/Train Time Schedule)

সিলেট বাই এয়ার / প্লেনে সিলেট

ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমান বাংলাদেশ, ইউনাইটেড এয়ার, রিজেন্ট এয়ার, নভো এয়ার এবং ইউএস বাংলা এয়ারের বিমান প্রতিদিন যায় সিলেটের ওসমানী বিমানবন্দরে।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এর অভ্যন্তরীণ রুট ঢাকা-সিলেট এর টিকেট মুল্যঃ

Super Saver: ৩২০০ টাকা

Economy Saver: ৩৭০০ টাকা

Economy Flexible: ৪২০০ টাকা

Business Saver: ৫৯০০ টাকা

Business Flexible: ৬৯০০ টাকা

সিলেট থেকে পান্থুমাই যাওয়ার উপায়

পান্থুমাই যেতে হলে সর্বপ্রথম আপনাকে সিলেট নগরীর আম্বরখানা পয়েন্ট যেতে হবে। সেখানে বিমানবন্দর রোডের দিকে সিএনজি স্টেশন আছে। সিএনজি রিজার্ভ করে হাদারপার নামক জায়গা পর্যন্ত গেলে ভাল হয়। পাঁচজন মিলে ১০০০টাকায় সাধারণত ভাড়া নেওয়া হয়। তবে মানুষ কম থাকলে ৮০-২০০ টাকা জনপ্রতিও যাওয়া যায়। হাদারপার বাজারটি খুব একটা বড় না আবার ছোটও না। মোটামুটি সবকিছুই পাবেন। খাবার, পানি, কাপড় সবই কিনতে পাওয়া যায়। হাদারপার বাজারেই বিছানাকান্দি/পান্থুমাই যাওয়ার নৌকা পাওয়া যায়। সুন্দর বেশভুষা দেখে মাঝিরা ২০০০টাকা চেয়ে বসতে পারে। ভুলেও রাজি হবেন না। নৌকা ভাড়া আসা-যাওয়া সর্বোচ্চ ১১০০-১৫০০ টাকা হলে ভাল। দরাদরি করে এর চেয়ে কমে পেলে ভাল তবে অবশ্যই এর বেশি দামে যাবেন না। এক নৌকায় বিছানাকান্দি, পান্থুমাই ও লক্ষনছড়া ঘুরে দেখাবে বলে নিবেন।

কোথায় থাকবেন

পান্থুমাই একটি গ্রাম, এখানে থাকার তেমন কোন ভালো জায়গা নেই। যেতে আসতে সময় না লাগার কারনে আপনাকে আর ওখানে থাকার চিন্তা করতে হবে না। সিলেটে থাকার মত অনেকগুলো হোটেল আছে,সিলেটে আপনি আপনার প্রোয়োজন ও সামর্থ অনুযায়ী যে কোন ধরনের হোটেল পাবেন। কয়েকটি পরিচিত হোটেল হল – হোটেল হিল টাউন, গুলশান, দরগা গেইট, সুরমা,কায়কোবাদ ইত্যাদি। লালা বাজার এলাকায় কম ভাড়ায় অনেক মানসম্মত রেস্ট হাউস আছে৷ হোটেল অনুরাগ – এ সিঙ্গেল রুম ৪০০টাকা (দুই জন আরামসে থাকতে পারবেন), তিন বেডের রুম ৫০০টাকা(নরমালই ৪জন থাকতে পারবেন)। রাত যাপনের জন্য দরগা রোডে বিভিন্ন মানের আবাসিক হোটেল রয়েছে। রুম ভাড়া ৫০০/- টাকা থেকে ৫০০০/- টাকা পর্যন্ত।

শহরের শাহজালাল উপশহরে হোটেল রোজ ভিউ (০৮২১-৭২১৪৩৯)।

দরগা গেইটে হোটেল স্টার প্যাসিফিক (০৮২১-৭২৭৯৪৫)।

ভিআইপি রোডে হোটেল হিলটাউন (০৮২১-৭১৬০৭৭)।

বন্দরবাজারে হোটেল মেট্রো ইন্টারন্যাশনাল (০৮২১-৭২১১৪৩)।

নাইওরপুলে হোটেল ফরচুন গার্ডেন (০৮২১-৭১৫৫৯০)।

জেল সড়কে হোটেল ডালাস (০৮২১-৭২০৯৪৫)।

লিঙ্ক রোডে হোটেল গার্ডেন ইন (০৮২১-৮১৪৫০৭)।

আম্বরখানায় হোটেল পলাশ (০৮২১-৭১৮৩০৯)।

দরগা এলাকায় হোটেল দরগাগেইট (০৮২১-৭১৭০৬৬)।

হোটেল উর্মি (০৮২১-৭১৪৫৬৩)।

জিন্দাবাজারে হোটেল মুন লাইট (০৮২১-৭১৪৮৫০)।

তালতলায় গুলশান সেন্টার (০৮২১-৭১০০১৮) ইত্যাদি।

তামাবিল/জৈন্তাপুর এর দিকে বেশ কিছু রিসোর্ট আছে। আপনার থাকার ব্যবস্থা যদি এইদিকে কোথাও হয়ে থাকে তাহলে আপনাকে হাদারপাড় থেকে আবার আগের মতই গোয়াইনঘাটে আসতে হবে। গোয়াইন ঘাট থেকে যেতে হবে সারি ঘাট। সিএনজি/লেগুনাতে করে যেতে পারেন। ভাড়া জনপ্রতি ৬০টাকা।

কোথায় খাবেন

খাওয়ার জন্য সিলেটের জিন্দাবাজারে বেশ ভালো তিনটি খাওয়ার হোটেল আছে। হোটেল গুলো হচ্ছে পাঁচ ভাই,পানশি ও পালকি। এগুলোতে প্রায় ২৯ প্রকারের ভর্তা আছে।

লিখা: ব-দ্বীপ এডিটরস্ প্যানেল

রাজবাড়ী জেলা

যে কোন রাজার বাড়ীর নামানুসারে নামকরণ করা হয়েছে রাজবাড়ী। রাজবাড়ীর সেই রাজা নেই। কিন্তু রাজবাড়ী জেলা রাজার সেই ঐতিহ্য ধারণ করে আছে আজো। পদ্মা, হড়াই, গড়াই, চন্দনা, কুমার আর চত্রা পলিবাহিত এক কালের ‘বাংলার প্রবেশদ্বার’ বলে পরিচিত গোয়ালন্দ মহকুমা আজকের রাজবাড়ী জেলা। ১৯৮৪ সালের ১ লা মার্চ গোয়ালন্দ মহকুমা রাজবাড়ী জেলায় রুপান্তরিত হয় ।

রাজবাড়ী রেল স্টেশনটি ১৮৯০ সালে স্থাপিত হয়। উল্লেখ্য, বর্তমানে যে স্থানটিতে রাজবাড়ী রেল স্টেশন অবস্থিত উক্ত জমির মালিকানা ছিল বানিবহের জমিদারগণ। তাদের প্রতিবাদের কারণেই স্টেশনের নাম রাজবাড়ীই থেকে যায়। এ সকল বিশ্লেষণ থেকে ধারণা করা হয় যে, রাজবাড়ী নামটি বহু পূর্ব থেকেই প্রচলিত ছিল।

এলাকার নাওয়ারা প্রধান, জমিদার, প্রতিপত্তিশালী ব্যক্তিগণ রাজা বলে অভিহিত হতেন। তবে রাজা সূর্য কুমার ও তার পূর্ব পুরুষগণের লক্ষীকোলের বাড়ীটি লোকমুখে রাজার বাড়ি বলে সমধিক পরিচিত ছিল। এভাবেই আজকের রাজবাড়ী।

লিখা ও ছবি: রবিন ফয়সাল

সাতলা, উজিরপুর, বরিশাল

শাপলা গ্রাম,
শাপলা গ্রাম, "সাতলা", ছবি: Shafiul Islam Razu

সাতলা, উজিরপুর, বরিশাল

শাপলা গ্রাম, “সাতলা” এক শাপলার রাজ্য। বরিশাল সদর থেকে সাতলা গ্রামের দূরত্ব ৬০ কিলোমিটার। বরিশালের উজিরপুর উপজেলার সাতলা গ্রামের বিলগুলো স্থানীয়দের কাছে শাপলার বিল নামে পরিচিত।

এখানে কবে থেকে শাপলা চাষ শুরু হয়েছে এ তথ্য পাওয়া না গেলেও জানা যায় এখানে লাল, সাদা আর বেগুনি এই তিন ধরণের শাপলা জন্মে। তবে লাল শাপলা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়।

শাপলা গ্রাম সাতলার প্রায় ১০ হাজার একর জলাভুমিতে শাপলার চাষ করা হয়। এই গ্রামের প্রায় ৭০% অধিবাসীই শাপলা চাষ এবং শাপলা বিপণনের সাথে যুক্ত। শাপলা গ্রাম সাতলা থেকেই সারা দেশের বিভিন্ন জায়গায় শাপলা ফুল সরবরাহ করা হয়। শাপলার ছবি তোলার জন্য ফটোগ্রাফারদের কাছে সাতলা একটি আদর্শ জায়গা।

শাপলা গ্রাম, "সাতলা" এক শাপলার রাজ্য। বরিশাল সদর থেকে সাতলা গ্রামের দূরত্ব ৬০ কিলোমিটার। বরিশালের উজিরপুর উপজেলার সাতলা গ্রামের বিলগুলো স্থানীয়দের কাছে শাপলার বিল নামে পরিচিত।
শাপলা গ্রাম, “সাতলা”, ছবি: Shafiul Islam Razu

শাপলা গ্রাম সাতলা কখন যাবেনঃ

সাধারণত আগস্টের শুরু থেকে অক্টোবর পর্যন্ত শাপলার মৌসুম।এই ৩ মাস এখানে শাপলা ফুটে। বছরের এই মাসগুলোতে শাপলা গ্রাম সাতলা গেলে হাজারো শাপলা দেখতে পাবেন। আর শাপলা দেখতে হলে অবশ্যই খুব সকালে যেতে হবে কারণ বেলা গড়ানোর সাথে সাথে শাপলা ফুল বুজে যায় কিংবা ব্যবসায়ীরা ফুল বাজারে বিক্রি করতে নিয়ে যায়। তাই সবচেয়ে ভালো হয় এক রাত গ্রামে থেকে ভোরে শাপলা বিলে চলে গেলে।

©Shafiul Islam Razu

কালচিতি / কালাচিতি / কালাচ / common krait

কালচিতি / কালাচিতি / কালাচ / common krait
কালচিতি / কালাচিতি / কালাচ / common krait

কালচিতি / কালাচিতি / কালাচ / common krait :

একে বলা হয় রহস্যময় সাপ। ফনাহীন মারাত্মক বিষধর এই সাপে বাংলাদেশে এবং পশ্চিমবঙ্গে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা যায়। common krait মারাত্মক নিউরোটক্সিন সমৃদ্ধ।
আলোচনা করছি এই কারণে যে বর্ষাকালে এই সাপের আক্রমণ তুলনামূলক বেড়ে যায়। মৃত্যুর কারণ – নিউরোটক্সিন।

কালচিতি / কালাচিতি / কালাচ / common krait
কালচিতি / কালাচিতি / কালাচ / common krait

কালাচ বা কালচিতি / কালাচিতি common krait এর কামড় আপনি নাও টের পেতে পারেন! মারাত্মক সূক্ষ্ম মিহি সরু দাঁত দিয়ে দংশন করে। কালাচ সাপ সাধারণত ঘুমন্ত মানুষকে বেশি দংশন করে। রাতে কালাচের আক্রমণ বেশি হয়।

কালচিতি / কালাচিতি / কালাচ / common krait এর দংশন চিহ্ন

বর্ষাকালে বিছানার পাশে, ফ্লোরে কিংবা বিছানার উপর কালাচ আশ্রয় নেয়। অনেক সময়ই আক্রান্ত ব্যক্তি মনে করেন কোনো ছোটো পোকা হয়তো তাকে কামড়েছে।
কালাচ বা common krait চিনবার উপায় হচ্ছে – ফনাহীন, তুলনামূলক ছোটো মাথা, শরীরের শুরু থেকে লেজের শেষ পর্যন্ত গোলাকৃতি চুড়ির মতো প্যাঁচ থাকে কালাচ বা common krait এর।

কালাচ / কালচিতি বা common krait কামড়ের লক্ষণ:

পেটে ব্যাথা (abdominal pain), ঝিমঝিমানি (headache and drowsiness), কথা জড়িয়ে আসা বা কথা বলতে সমস্যা হয় (dysarthria) আক্রান্ত ব্যক্তির। নিউরোটক্সিনের কারণে পরবর্তী ধাপে বুকে ব্যাথা (chest pain), শ্বাস নিতে সমস্যা (Respiratory paralysis) হয়। অনেক ক্ষেত্রেই প্রচন্ড পেটে ব্যাথা নিয়ে রোগী চিকিৎসকের কাছে আসে।

সাধারণত নিউরোটক্সিন শরীরে ছড়িয়ে পড়ে মারাত্মক বিষক্রিয়া করতে ৪-৮ ঘন্টা সময় নেয়।

মৃত্যুর কারণ respiratory paralysis, brainstem dysfunction – due to neurotoxic effect.

চিকিৎসকগণ অনেক ক্ষেত্রেই কনফিউশানে পড়ে যান – কারণ কোনো bite mark বা fang marks identity করা যায়না। তবে ক্লাসিকাল নিউরোলজীক্যাল সিম্পটম দেখে কালাচের কামড় ধারণা করা যায়।

রোগীকে যখন বলবেন – চোখ তুলতে উপরের দিকে রোগী চোখ উপরে তুলে তাকাতে পারেনা (unable to perform upward eye gaze)। চোখের পাতা পড়ে যায় / ptosis হয়। এই ক্লিনিক্যাল সাইন নিউরোটক্সিনের ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ন। সাথে পেট ফুলে যাওয়া (abdominal distention) এবং উপরে বর্ণিত ক্লিনিক্যাল ফিচার নিয়ে রোগী আসতে পারে।

Common krait বা কালাচিতি সাপের দংশনে আক্রান্ত ব্যক্তিকে সময়মতো Anti venom দিতে পারলে খুব ভালো রেসপন্স করে। Neurological symptom ইনপ্রুভ করে আসে।

বর্ষাকাল চলছে, কালাচ সাপ বা common krait এর আক্রমণ থেকে সাবধান হউন।

নয়নাভিরাম সোনাদিয়া

ক্যাম্প সাইটে তাবুর ভিতর বসে

সোনাদিয়া কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ একটি দ্বীপ৷ এই দ্বীপটির আয়তন প্রায় ৯ বর্গ কিলোমিটার। অপরুপ সৌন্দর্যের আধার এই দ্বীপটি কক্সবাজার জেলা সদর থেকে ১৫ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে মহেশখালী উপজেলার কুতুবজোম ইউনিয়নে অবস্থিত৷

সোনাদিয়া দ্বীপ
সোনাদিয়া দ্বীপ

এটি ২১˙২৮˝- ২১˙৩৩˝উত্তর অক্ষাংশ ও ৯১˙৫০˝- ৯১˙৫৬˝পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত। একটি খাল দ্বারা সোনাদিয়া মহেশখালীর মূল দ্বীপ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছে৷ সোনাদিয়া অনেকের কাছে জীববৈচিত্রের দ্বীপ নামেও পরিচিতি এবং এ দ্বীপ সৌন্দর্য পিপাসুদের জন্য অন্যতম পর্যটন স্থান। চারদিকে গভীর সমুদ্রের সাগরের ঢেউ সমৃদ্ধ সোনাদিয়া মূলত একটি প্যারাদ্বীপ৷

বাংলাদেশের দক্ষিন-পূর্ব উপকূলীয় প্যারাবনের অবশিষ্টাংশ এখন মূলত শুধু সোনাদিয়া দ্বীপেই দেখা যায়। সোনাদিয়ার প্যারাবন বাইন বৃক্ষ সমৃদ্ধ। এছাড়া প্যারাবনে কেওড়া, গেওয়া, হারগোজা, নুনিয়া ইত্যাদি ম্যনগ্রোভ প্রজাতির উদ্ভিদ পাওয়া যায়। প্যারাবনের ভিতরে সুন্দর বনের মত ছোট ছোট নদীর দু’পাশে নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখা যায়। সোনাদিয়ার প্যারাবন, চর, খাল ও মোহনা নানা প্রজাতির মাছ ও অমেরুদন্ডী প্রাণীর গুরুত্বপূর্ন আবাসস্থল।

দ্বীপটির প্যারাবন সংলগ্ন খালে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ পাওয়া যায় যেমন-বাটা, কোরাল, তাইল্যা, দাতিনা, কাউন, পোয়া ইত্যাদি।

সোনাদিয়া দেশের প্রধান শুটকি মাছ উৎপাদন কেন্দ্র। এখানকার ম্যানগ্রোভ বন এবং উপকূলীয় বনভূমি, সাগরে গাঢ় নীল পানি, কেয়া বন, লাল কাঁকড়া, শামুক, বিভিন্ন প্রকারের সামুদ্রিক পাখি পর্যটকদের মনে দোলা দেয়।

সামুদ্রিক শামুক

এই দ্বীপটি বাংলাদেশের গভীর সমুদ্র বন্দর তৈরির জন্য নির্বাচিত হয়েছিল পরে তা মাতারবাড়ি তে স্থানান্তর করা হয়েছে বৃহত্তর স্বার্থে৷

মাতারবাড়ি এলএনজি টার্মিনালে সন্ধায়

 

প্রায় ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ প্রশস্থ সৈকত, সৈকত ঘেষে সারিবদ্ধভাবে দাড়িয়ে থাকা সূউচ্চ বালিয়াড়ি, জালের মতো ছোট-বড় অসংখ্য খাল বেষ্টিত ম্যানগ্রোভ বন, বিস্তির্ণ ল্যাগুন্যাল ম্যাডফ্ল্যাট, কেয়া-নিশিন্দার ঝোপ, বিচিত্র প্রজাতির জলচর পাখি সোনাদিয়া দ্বীপের প্রধান বৈশিষ্ট্য।

ছবি: রবি চন্দ্রবিন্দু

সমুদ্র সৈকতের পাশ ঘেষে অবস্থিত সোনাদিয়ার সূ-উচ্চু বালিয়াড়ির তুলনা বাংলাদেশে নেই। সমুদ্র এবং সৈকত থেকে বালিয়াড়ির দৃশ্য অপূর্ব মনে হয়। সোনাদিয়ার সৈকত এবং বালিয়াড়ি বিপন্ন জলপাই বর্ণের সামুদ্রিক কাছিমের ডিম পাড়ার উপযোগী স্থান। এখানে সামুদ্রিক সবুজ কাছিমও ডিম পাড়তে আসে। সমুদ্র সৈকতের বেলাভূমিতে পানির কিনারা ঘেষে বিচরন করে লাল কাঁকড়া এবং প্যারাবন এলাকায় শীলা কাঁকড়া দেখতে পাওয়া যায়৷

সোনাদিয়ার লাল কাঁকড়া

এই দ্বীপে ২টি মসজিদ, ১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১টি সাইক্লোন সেন্টার, আনুমানিক ১২টি গভীর নলকূপ রয়েছে। স্থানীয় অধিবাসীদের মতে সোনাদিয়া দ্বীপে মানব বসতির ইতিহাস আনুমানিক দেড়শত বছরের।

দ্বীপের মানুষেরা মূলত দুইটি গ্রামে বসবাস করে: সোনাদিয়া পূর্বপাড়া এবং সোনাদিয়া পশ্চিমপাড়া। দ্বীপটির বর্তমান লোকসংখ্যা প্রায় এক হাজার সাত শত। মাছ ধরা, মাছ শুকানো এবং কৃষিকাজ এই দ্বীপবাসীর মূল পেশা। অনেকেই আবার তাদের জীবিকার জন্য চিংড়ির পোনা ও শামুক-ঝিনুক সংগ্রহের মতো পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের জন্য ক্ষতিকর কাজে নিয়োজিত থাকতে দেখা যায়।

কিভাবে যাবেন:

কক্সবাজার ৬ নং ঘাট থেকে রিজার্ভ বোটে করে সরাসরি সোনাদিয়া চলে যাওয়া যায়৷ ৬০০০ টাকার মত লাগে৷ একটু দরদাম করে নিতে হয় বোট৷ আবার লোকাল স্পীড বোটে করে মহেশখালী গিয়ে সেখান থেকে সিএনজি বা টমটমে করে ঘটি ভাঙ্গা ঘাটে গিয়ে লোকাল গামবোটে করেও সোনাদিয়া যাওয়া যায়৷

কক্সবাজার থেকে স্পীড বোটে বর্তমানে জনপ্রতি ১০০ টাকা করে নেয়৷ আর রিজার্ভ টমটম ২৫০-৩০০ টাকা নেয় ঘটি ভাঙ্গা পর্যন্ত৷ একটা টমটমে ৭ জন বসতে পারে৷ পিছনে ৬ জন আর সামনে ড্রাইভারের পাশে ১ জন ৷ ঘটি ভাঙ্গা ঘাট থেকে লোকাল গামবোটে সোনাদিয়া পর্যন্ত জনপ্রতি ৩৫-৪০ টাকার মত নেয় ৷

বিঃ দ্রঃ : যেখানেই ঘুরতে যান , পরিবেশের প্রতি সচেতন থাকুন ৷ যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলে পরিবেশ নোংরা করবেন না ৷ আপনার আমার প্রচেষ্টাই পারে দেশটাকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে৷

error: Content is protected !!