জলময়ূর জলাশয়ের পাখি। দেশের বড় বড় বিল-ঝিল কিংবা হাওর-বাঁওড় অঞ্চলে দেখা মিলে। এক সময়ে হাওরাঞ্চলে প্রচুর জলময়ূর দেখা যেত।
হালে সেই রকম নজরে পড়ে না। শিকারিদের দৌরাত্ম্যে প্রজাতির সংখ্যা দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। প্রজাতির বৈশ্বিক বিস্তৃতি বাংলাদেশ, ভারতসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ চীন পর্যন্ত।
পাখিটির ইংরেজি নাম : ‘ফেজান্ট টেইল্ড জাকানা, (Pheasant-tailed jacana) বৈজ্ঞানিক নাম: Hydrophasianus Chirurgus। প্রজাতির গড় দৈর্ঘ্য লেজসহ ৪০-৫৮ সেন্টিমিটার (লেজ ২৫ সেন্টিমিটার)। এর মাথা-গলা সাদা। ঘাড় রেশমি সোনালী হলুদ।
পিঠ চকলেট পাটকিলে। ডানার পাশ ধবধবে সাদা। দেহের তুলনায় লেজ বেশ লম্বা। কাস্তের মতো বাঁকানো। পেটের নিচ কালচে। শীতে রঙ বদলায়। চকলেট পাটকিলে তখন ফিঁকে পাটকিলে বর্ণ ধারণ করে; বুকের ওপরে ‘ভি’ আকৃতির কালো নেকলেসের মত দেখায়।
আরো কিছু পরিবর্তন শীতে নজরে পড়ে। যেমন: প্রজনন ঋতুতে লেজ থাকে লম্বা কিন্তু অন্য সময়ে লেজ তুলনামূলক খাটো দেখায়। স্ত্রী-পুরুষ পাখি দেখতে একই রকম। পার্থক্য শুধু আকারে। স্ত্রী পাখি পুরুষের তুলনায় খানিকটা বড়।
জলময়ূরের যৌনজীবন অন্য পাখিদের চেয়ে একটু আলাদা। বলা যায়, তেমন সুখকর নয়। প্রজনন ঋতুতে জলময়ূরী হন্যে হয়ে পুরুষ পাখিকে খুঁজতে থাকে।
এ সময় অন্য জলময়ূরীর সঙ্গে যে কোনো জলময়ূর কে ঘোরাফেরা করতে দেখলে ওদের হিংসা হয়। দুই ময়ূরীর মাঝে প্রচণ্ড ঝগড়া বাঁধে। দূর থেকে তা দাঁড়িয়ে দেখে জলময়ূর। পরিশেষে জিতে যাওয়া জলময়ূরীর সঙ্গে পুরুষ পাখির মিলন ঘটে।
ঘর বাঁধার সপ্তাহখানেক পরে জলে ভাসা লতাগুল্মের ওপর বাসা বানিয়ে জলময়ূরী ডিম পেড়ে পালিয়ে যায়। ওই এলাকা ত্যাগ করে পুনরায় অন্য পুরুষের সঙ্গে ঘর বাঁধে (অর্থাত্ জলময়ূরীদের মাঝে বহুগামিতা লক্ষ্য করা যায়)।
তথ্যসূত্রঃ ইন্টারনেট