দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ কৃত্রিম লেক কাপ্তাই লেক। কৃত্রিম লেক হলেও এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য হার মানায় যেকোন লেককে। এর সৌন্দর্য যেকোন ব্যক্তির হৃদয় কে ছুঁয়ে যাবে। ২৫০০ বর্গকিলোমিটারের আয়তনের এ লেক জুড়ে আছে অসংখ্য বিনোদন কেন্দ্র। এরকম দুটি বিনোদন কেন্দ্র হলো লেক প্যারাডাইস ও লেকশোর পিকনিক স্পট।
বানৌজা শহীদ মোয়াজ্জম নৌ ঘাঁটি পরিচালিত লেক প্যারাডাইস পিকনিক স্পটটি বিশাল এলাকা জুড়ে অবস্থিত। এর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে আছে নৌবাহিনী।
পাহাড়ঘেরা লেকের মধ্যে এর অবস্থান। এখানে প্রায় ২০ টি বিনোদন কেন্দ্র রয়েছে। আছে খেলাধূলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা। লেক প্যারাডাইসের অন্যতম আকর্ষণ হলো পর্বতিয়া গ্রীণহল স্পটটি।
লেক প্যারাডাইসে এসে সুসজ্জিত আকর্ষণীয় সিঁড়ি ভেঙ্গে অনেক গভীরে নামলে ভাসমান রেস্টুরেন্টের দেখা পাওয়া যাবে। চারদিকে মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশ থাকায় অনেক সিঁড়ি বেয়ে উঠানামা করলেও ক্লান্তি অনুভব হয় না। বিভিন্ন রকম খাবারের ব্যবস্থা আছে রেস্টুরেন্টে।
পর্যটকরা ইচ্ছা করলে কাপ্তাই লেকে সাঁতার কেটে সময় কাটাতে পারেন। প্যাডেল বোটে চড়ে যে কেউ লেক ভ্রমণ করতে পারেন। দল বেঁধে কাপ্তাই লেকে নৌ বিহার করার সুযোগও রয়েছে এখানে।তার সাথে আছে পাহাড়ের ফাঁকে সূর্যাস্ত দেখা।
জীবতলী সেনানিবাসে লেকশোর পিকনিক স্পটের অবস্থান। কাপ্তাই লেকের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখার জন্য এটি সমাদৃত। পিকনিক স্পটের পাশে রয়েছে অসংখ্য গাছপালা সমৃদ্ধ পাহাড়। পাহাড় আর লেকের এ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য যেকোন মানুষের মনকে ছুঁয়ে যাবে। শিশুদের জন্য খেলাধুলার ব্যবস্থাও আছে এখানে।
এর পাশেই আছে সেনাবাহিনীর হেলিপ্যাড। ইচ্ছা করলে হেলিপ্যাড থেকেও ঘুরে আসতে পারেন। হেলিপ্যাডের চারপাশের মনোমুগ্ধকর পরিবেশ আপনাকে বিমোহিত করবেই। দ্বীপ সদৃশ পাহাড়ের সৌন্দর্য ভাষায় প্রকাশ করার মত না।
লেকশোর পিকনিক স্পটের পরে পাহাড়ের উপরে চাকমাদের একটি গ্রাম আছে। উপজাতিদের কালচারের প্রতি আগ্রহ থাকলে ঘুরে আসতে পারেন পাহাড়ি গ্রাম থেকে।
লেকপ্যারাডাইস ও লেকশোর পিকনিক স্পট দুটিই সামরিক বাহিনী দ্ধারা পরিচালিত। সাধারণ পর্যটকদের জন্য কোন ফি নেই। কিন্তু আপনি যদি বড় পরিসরে পিকনিক করতে চান তাহলে লেকপ্যারাডাইসে স্পট ভাড়া নিতে হবে। কিন্তু লেকশোর পিকনিক স্পট ভাড়া নেওয়ার দরকার নেই। অনুমতি নিয়েই পিকনিক করতে পারবেন।
বিশেষ দ্রষ্টব্য :এ স্পট দুটিতে যাওয়ার পথে কয়েকটি এলিফ্যান্ট ক্রসিং আছে। হাতিরা সাধারণত সন্ধ্যার পর বের হয়। তাই সন্ধ্যার আগেই এ স্থান ত্যাগ করা উত্তম।
লিখা: জাহিদ হাসান