এক অদ্ভুত, অপূর্ব সুন্দর পাখি – হরিকল।
ভাল করে বলতে চঞ্চুমোটা হরিকল। ইংরেজি নাম Thick Billed Green Pigeon. বৈজ্ঞানিক নাম – Treron curvirostra. আরেকটি নাম…
এক অদ্ভুত, অপূর্ব সুন্দর পাখি – হরিকল।
ভাল করে বলতে চঞ্চুমোটা হরিকল। ইংরেজি নাম Thick Billed Green Pigeon. বৈজ্ঞানিক নাম – Treron curvirostra. আরেকটি নাম…
দুঃসাহসী-লড়াকু ও বদমেজাজি এই জলাজমির পাখিটির নাম কালিম। ফকিরহাট-বাগেরহাট তথা বৃহত্তর খুলনায় এটি ‘বুরি’ নামে ব্যাপকভাবে পরিচিত। ইংরেজি নাম purple swamphen। বৈজ্ঞানিক নাম porphyrio porphyrio। দৈর্ঘ্য ৪৫ সেন্টিমিটার। ওজন ৬৫০ গ্রাম। মারকুটে এই পাখিরা একনজরে চকচকে নীলচে-বেগুনি। রোমান যোদ্ধাদের মতো কপাল-মাথা জোড়া আলতা রঙের দর্শনীয় বর্ম। লালচে রঙের পা ও পায়ের লম্বাটে আঙুল। লেজের তলা কার্পাস তুলোর মতো সাদা। চোখের পাশে বৃত্তাকারে সাদাটে ছোপ। গ্রীষ্ম-শরতে ভাসমান জলজ উদ্ভিদ-গুল্ম-কচুরিপানা ও ঝোপঝাড়ের তলায় ডাল-লতা দিয়ে বাসা বানিয়ে ডিম পাড়ে। একেকটি কালিম তিন (০৩) থেকে সাত (০৭) টি ডিম পাড়ে। ছানা ফোটে ১৮ থেকে ২৩ দিনে। ছানারা হয় শ্লেটি-কালো। তাতে ধূসরের আভা ছড়ানো থাকে৷
বাংলাদেশ, ভারত ছাড়াও দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, ওশেনিয়া, আফ্রিকা আর ইউরোপের বিভিন্ন দেশে দেখা যায় পাখিটা । সারা পৃথিবীতে এক বিশাল এলাকা জুড়ে এদের আবাস, প্রায় ১ কোটি ৮৪ লক্ষ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে এদের আবাস। বাংলাদেশের সর্বত্র এখন আর দেখতে পাওয়া যায় না। এরা সাধারণত হাওর, বিল, নলবন ও তৃণপূর্ণ স্রোতহীন জলাভূমিতে বিচরণ করে। যেসব জায়গায় ভাসমান বা অর্ধভাসমান পানা, গুল্ম, লতা, শাপলা ইত্যাদি প্রচুর পরিমাণে রয়েছে সেসব জলাশয় এদের পছন্দের বিচরণস্থল।
দেশে চলমান লকডাউনের কারনে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে মানুষের আনাগোনা কমে গেছে। সেই সুযোগে প্রকৃতি আস্তে আস্তে ফিরে পাচ্ছে তার বুনো রুপ ৷ সাগরপাড়ে ফিরে এসেছে সবুজ সাগরলতা , প্রকৃতি তার বিস্তার ঘিটিয়েছে সৈকতের পাড় জুড়ে। উদ্ভিদ আর প্রাণিতে ভরপুর সৈকতে ফিরে এসেছে প্রাণচাঞ্চল্য।
যে সাগরলতা সৈকতে বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে চলে এসেছিল তা আজ সর্বত্র। এই সুযোগে সাগরলতার বেষ্টনীতে ঘর বানিয়েছে লারকোয়া পাখি (স্থানীয় নাম)। পাখিটার ভাল নাম কালিম পাখি ৷ শুধু বাসা নয় এর মধ্যে ডিমও পেড়েছে পাখিটি।
প্রকৃতির নিজস্ব ধারা বজায় থাকলে এমন জিনিস দেখতে পাব আরো বহু ৷ এখনই সময় এগুলো নিয়ে ভাবার ৷ যে প্রাকৃতিক পরিবেশ ফিরে এসেছে সাগড় পাড়ে এত বছর পর তা আর নষ্ট হতে দেয়া যাবেনা ৷ করতে হবে উপযুক্ত রক্ষনাবেক্ষন ৷ তাহলেই বাঁচবে প্রকৃতি৷
দূর থেকে দেখলেই মনে হবে বিশাল আকৃতির একটি বটগাছ। কাছে না গেলে বোঝা যাবে না এটি বটগাছ নয়, আমগাছ।
প্রায় তিন একর জমিতে ডালপালা ছড়িয়ে ২২৫ বছরের বেশি সময় ধরে দাড়িয়ে আছে এশিয়ার সর্ববৃহৎ সূর্যপুরী জাতের আমগাছটি।
এশিয়ার সর্ববৃহৎ সূর্যপুরী জাতের আমগাছটি
এশিয়ার সর্ববৃহৎ সূর্যপুরী জাতের আমগাছটি
এশিয়ার সর্ববৃহৎ সূর্যপুরী জাতের আমগাছটি
এশিয়ার সর্ববৃহৎ সূর্যপুরী জাতের আমগাছটি
এশিয়ার সর্ববৃহৎ সূর্যপুরী জাতের আমগাছটি
এশিয়ার সর্ববৃহৎ সূর্যপুরী জাতের আমগাছটি
ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার আমজানখোর ইউনিয়নের হরিণমারী এলাকায় অবস্থিত এ আমগাছটিকে এক নজর দেখার জন্য প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে স্বজনদের সাথে ছুটে আসছেন এখানে সরকারী কর্মকর্তা, কর্মচারী, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ নানা পেশার মানুষ। বাদ পড়েননি বিদেশিরাও।
দেশে চলমান লকডাউনের কারনে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে মানুষের আনাগোনা কমে গেছে। এই সুযোগে প্রকৃতি তার বিস্তার ঘিটিয়েছে সৈকত জুড়ে। উদ্ভিদ আর প্রাণিতে ভরপুর সৈকতে ফিরে এসেছে প্রাণচাঞ্চল্য।
যে সাগরলতা সৈকতে বিলুপ্তির দ্বাপ্রান্তে চলে এসেছিল তা আজ সর্বত্র। এই সুযোগে সাগরলতার বেষ্টনীতে ঘর বানিয়েছে লারকোয়া পাখি (স্থানীয় নাম)। শুধু বাসা নয় এর মধ্যে ডিমও পেড়েছে পাখিটি।
সেইন্ট মার্টিন দ্বীপ বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের উত্তর-পূর্বাংশে অবস্থিত একটি প্রবালদ্বীপ। এটি কক্সবাজার জেলার টেকনাফ হতে প্রায় ৯ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং মায়ানমার-এর উপকূল হতে ৮ কিলোমিটার পশ্চিমে নাফ নদীর মোহনায় অবস্থিত।
প্রচুর নারিকেল পাওয়া যায় বলে স্থানীয়ভাবে একে নারিকেল জিঞ্জিরাও বলা হয়ে থাকে। প্রায় ৫০০০ বছর আগে টেকনাফের মূল ভূমির অংশ ছিল জায়গাটি। কিন্তু ধীরে ধীরে এটি সমুদ্রের নিচে চলে যায়। এরপর প্রায় ৪৫০ বছর আগে বর্তমান সেন্ট মার্টিন দ্বীপের দক্ষিণ পাড়া জেগে উঠে। এর ১০০ বছর উত্তর পাড়া এবং পরবর্তী ১০০ বছরের মধ্যে বাকি অংশ জেগে উঠে।
২৫০ বছর আগে আরব বণিকদের নজরে আসে এ দ্বীপটি। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাথে বাণিজ্যের সময় আরব বণিকরা এ দ্বীপটিতে বিশ্রাম নিতো বলে জানা যায় । তখন তারা এ দ্বীপের নামকরণ করেছিল ‘জাজিরা’। পরবর্তীতে যেটি নারিকেল জিঞ্জিরা নামে পরিচিত হয়।
দেশী উদ্ভিদ তত্ববিদদের মতে প্রায় ৩৩ হাজার বছর আগে সে এলাকায় প্রাণের অস্তিত্ব ছিল। বিভিন্ন কার্বন ডেটিং-এ এর প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে বলে তারা জানতে পেরেছেন ৷ ১৮৯০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে কিছু বাঙালি এবং রাখাইন সম্প্রদায়ের মানুষ এই দ্বীপের বসতি স্থাপনের জন্য আসে। এরা ছিল মূলত মৎস্যজীবি।
যতটুকু জানা যায়, প্রথম অধিবাসী হিসাবে বসতি স্থাপন করেছিল ১৩টি পরিবার। এরা বেছে নিয়েছিল এই দ্বীপের উত্তরাংশ। কালক্রমে এই দ্বীপটি বাঙালি অধ্যুষিত এলাকায় পরিণত হয়।
ব্রিটিশ শাসনামলে ১৯০০ সালে ভূমি জরিপের সময় এ দ্বীপটিকে ব্রিটিশ ভারতের অন্তর্ভুক্ত করে নেয়া হয়। যদিও সে সময়টিতে বার্মা ব্রিটিশ শাসনের আওতায় ছিল। কিন্তু তারপরেও সেইন্ট মার্টিন দ্বীপকে বার্মার অন্তর্ভুক্ত না করে ব্রিটিশ-ভারতের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল ৷
বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনে ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, খ্রিস্টান সাধু মার্টিনের নাম অনুসারে দ্বীপটির নামকরণ করা হয়। কিন্তু আসলে দ্বীপটিকে যখন ব্রিটিশ ভারতের অন্তর্ভুক্ত করা হয়, তখন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মার্টিনের নাম অনুসারে দ্বীপটির নামকরণ করা হয় বলে যে তথ্য আছে তা বেশি নির্ভরযোগ্য ৷
সেইন্ট মার্টিন দ্বীপটি বর্তমানে একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। পর্যটন মৌসুমে এখানে প্রতিদিন ৫টি লঞ্চ বাংলাদেশের মূল ভূখন্ড টেকনাফ হতে আসা যাওয়া করে। সম্রতি কক্সবাজারের ৬ নম্বর জেটি থেকে সরাসরি এম ভি কর্নফুলি নামে একটি জাহাজ চালু হয়েছে ৷ লোকাল ট্রলারে করেও সেইন্ট মার্টিন যাওয়া যায় ৷
সেইন্ট মার্টিন দ্বীপে বর্তমানে অনেক ভালো আবাসিক হোটেল রয়েছে। একটি সরকারি ডাকবাংলো আছে। জনপ্রিয় কথা সাহিত্যিক মরহুম হুমায়ূন আহমেদের ‘সমুদ্র বিলাস’ নামে একটি বাড়ি রয়েছে সেইন্ট মার্টিন দ্বীপের দক্ষিণ বীচে ৷ আগে তেমন তা থাকলেও এখন সমুদ্রের তীর ঘেঁসে বহু ইকো কটেজ ও তৈরি হয়েছে পর্যটকদের থাকার জন্য বেসরকারি উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে ৷ তারা সেখানে বিভিন্ন মেয়াদে স্থানীয় মানুষদের জমি লিজ নিয়ে এইসব তৈরি করেছে ৷
সেইন্ট মার্টিন দ্বীপের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভাল। পর্যটকদের ও স্থানীয় মানুষের নিরাপত্তার জন্য দ্বীপে পুলিশ ও বিজিবি মোতায়েন করা আছে ৷ তাদের নিজস্ব কার্যালয় আছে দ্বীপে ৷ রাতে বিজিবি টহল দেয় নিয়মিত ৷ আর সমুদ্রে নিরাপত্তার জন্য কোস্টগার্ডের পেট্রল ভেসেল সবসময় নিয়োজিত থাকে ৷ রাতে সেখানে বাড়তি নিরাপত্তা যোগ করে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর দুটি বিশেষ জাহাজ ৷
শ্রীনগরের আড়িয়াল বিল সম্পর্কে কিছু কথোপকথন।
আপনি যদি শ্রীনগরের হয়ে থাকেন, অজানা তথ্য দিচ্ছি! মাত্র চার মিনিট চেয়ে নিচ্ছি..
আড়িয়ল বিল দেশের মধ্যাঞ্চলের সবচেয়ে বড় ও প্রাচীন বিল। এর প্রতিবেশ ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে হাজার বছর ধরে। ধারণা করা হয়, অতি প্রাচীন কালে এ স্থানে গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্রের সঙ্গমস্থল ছিল, পরে উভয় নদীর প্রবাহ পরিবর্তনের ফলে এই স্থান শুষ্ক হয়ে বিলে পরিণত হয়। ঢাকা ও মুন্সীগঞ্জ জেলা এবং পদ্মা নদীর মাঝখানে একটি ছিটমহলসম জলাভূমি এ আড়িয়ল বিল।
ইতিহাসবিদ যতীন্দ্র মোহন রায় তার ‘ঢাকার ইতিহাস’ (১৯১২) গ্রন্থে বিল অধ্যায়ে বলেন, ‘সম্ভবত ঢাকা জেলার বিলগুলোর মধ্যে আয়তন ও প্রসস্থতায় আড়িয়ল বিল সর্বপেক্ষা বৃহৎ।
টেইলার সাহেব উহাকে চূড়াইন বিল বলিয়াও অভিহিত করিয়াছেন।’ এ সু-প্রসস্থ বিলটি পূর্ব-পশ্চিমে ১২ মাইল দীর্ঘ এবং উত্তর-দক্ষিণে প্রায় ৭ মাইল প্রস্থ।
এ বিলের দক্ষিণ প্রান্তে দয়হাটা, শ্যামসিদ্ধি, প্রাণীমণ্ডল, গাদিঘাট, উত্তর রাঢ়ীখাল; উত্তরে শ্রীধরপুর, বাড়ৈখালী, শেখরনগর, মদনখালী, আলমপুর, তেঘরিয়া; পূর্বপ্রান্তে হাঁসাড়া, ষোলঘর, কেউটখালী, মোহনগঞ্জ; পশ্চিমে কামারগাঁও, জগন্নাথপট্টি, কাঁঠালবাড়ি, মহতপাড়া প্রভৃতি।’
মুন্সীগঞ্জ ও ঢাকা জেলার ৩টি উপজেলায় বিস্তৃত রয়েছে দেশের প্রাচীন জলাভূমি আড়িয়ল বিল। তবে উত্তর-পূর্বাংশে সিরাজদিখান উপজেলার কেয়াইন, শেখরনগর, চিত্রকোট ও রাজানগর ইউনিয়নের কিছুটা অংশে বিস্তৃত। এ বিলটি মূলত পূর্ব-পশ্চিমে বিস্তৃত। পশ্চিমে একেবারে শেষ প্রান্তে গিয়ে পশ্চিম-উত্তর অনেকটা বেঁকে গেছে।
২৬ মাইল দৈর্ঘ্য এবং ১০ মাইল প্রস্থের এ জলাভূমির আয়তন ১ লাখ ৬৬ হাজার ৬০০ একর। শ্রীনগর, নবাবগঞ্জ ও দোহার উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নের প্রায় ৭০টি গ্রাম নিয়ে ঐতিহাসিকভাবে গড়ে উঠেছে আড়িয়ল সভ্যতা ও এর জীবনধারা।
তিনটি উপজেলার মধ্যে শ্রীনগরে রয়েছে ৮টি ইউনিয়ন, ভাগ্যকূল ইউনিয়নের জগন্নাথপট্টি ও কামারগাঁও মৌজা, বাঘড়া ইউনিয়নের পূর্ব মৌড়া মৌজা, শ্যামসিদ্ধি ইউনিয়নের মত্তগ্রাম ও গাদিঘাট মৌজা, শ্রীনগর ইউনিয়নের দয়হাটা মৌজা, ষোলঘর ইউনিয়নের বিল আড়িয়ল ও ষোলঘর মৌজা, বাড়ৈখালী ইউনিয়নের বাড়ৈখালী, বিল আরৈ, শ্রীধরপুর, দাসের চক ও পূর্ব মরিচপট্টি মৌজা, হাঁসাড়া ইউনিয়নের আলমপুর, লস্করপুর ও হাঁসাড়া মৌজা, রাঢ়ীখাল ইউনিয়নের রাঢ়ীখাল ও মাইজপাড়া মৌজা; দোহার উপজেলার মধ্যে রয়েছে ৪টি ইউনিয়ন, নারিশা ইউনিয়নের হাঁসী, ঝনকী ও শিমুলিয়া মৌজা, সুতার পাড়া ইউনিয়নের ঘাটা, সুতার পাড়া, দামুয়া ও মুন্সিকান্দা মৌজা, মুকসুদপুর ইউনিয়নের পশ্চিম মোড়া মৌজা, রাইপাড়া ইউনিয়নের লস্কর কান্দা ও ইউসুফপুর মৌজা; নবাবগঞ্জ উপজেলার মধ্যে রয়েছে ৪টি ইউনিয়ন, বক্সনগর ইউনিয়নের বড় বক্সনগর, ছোট জাফরপুর, দীঘিড়পাড়, টুকনিকান্দা, ছোট বক্সনগর, বর্দ্ধন পাড়া ও কোমরগঞ্জ মৌজা, চূড়াইন ইউনিয়নের বড় গোবিন্দপুর, দুর্গাপুর, চূড়াইন, তিলখোলা, কামারখোলা, মনসুরনগর, সেরাজুদ্দীনপুর ও পশ্চিম মরিচপট্টি মৌজা, গালিমপুর ইউনিয়নের সুরগাঁও ও গালিমপুর মৌজা, কলাকোপা ইউনিয়নের বড় জাফরপুর ও বারৈখোলা মৌজা।
এ বিলকে ঘিরে চার থানার ১০ লাখ লোকের জীবন-জীবিকা চলে। শত শত বছর ধরে বিলে বসবাস করছে এ অঞ্চলের আধিবাসী।
আড়িয়ল বিলের প্রাচীন নাম ছিল চূড়াইন বিল। তবে আড়িয়ল বিল নামেই সর্বত্র পরিচিত, কি ভাবে বিলের নাম আড়িয়ল হলো তা এখন আর স্পষ্ট নয়; তবে ইতিহাস পাঠ এবং লোকমুখে শুনে জানা যায়, আড়িয়াল খা নদী ব্রহ্মপুত্রের একটি শাখা নদী হিসেবে বিক্রমপুরের ভেতর দিয়ে উত্তর-দক্ষিণমুখী প্রবাহিত ছিল। আর পদ্মার একটি শাখা পূর্ব-পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয়ে আড়িয়াল খাঁ নদীর সঙ্গে এসে মিলিত হয়, দুটি নদীর স্রোত যেখানে এসে মিলিত হয় সেখানে তীব্র আড়াআড়ি হতে প্রচণ্ড ঘূর্ণায়মানের সৃষ্টি হয়; এ ঘূর্ণায়মান হতে প্রচণ্ড কূমের সৃষ্টি হয়, সে কূম হতেই কালে কালে জায়গাটি শুষ্ক হয়ে বিলে পরিণত হয়, আর এ বিলের নাম হয় আড়িয়ল বিল।
বর্তমান মাদারীপুরের কাছে আড়িয়াল খাঁ নদীর একটি অংশ দেখা যায়। অন্য যে কথা শোনা যায় তা হল, আড়িয়ল অর্থ জলজ ভূমির আধার, যে স্থানটিকে প্রচুর মৎস্য সম্পদের অভয়ারণ্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। আড়িয়ল বিলে প্রচুর মৎস্য ও জলজ উদ্ভিদের অভয়ারণ্য বিধায় স্থানীয়দের কাছে জায়গাটি ‘আড়িয়াল’ হিসেবে চিহ্নিত, আড়িয়াল> আড়িয়ল শব্দের উদ্ভব হয়েছে, আর আড়িয়ল ও বিলের সমন্বয়ে বিলের নাম হয় আড়িয়ল বিল।
কিভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে মুন্সিগঞ্জ জেলার অন্তর্গত শ্রীনগর উপজেলার আড়িয়াল বিলের দূরত্ব প্রায় ৪২ কিলোমিটার। ঢাকার গুলিস্থান, আবদুল্লাপুর বা মিরপুর থেকে মাওয়াগামী যেকোন বাসে চড়ে মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরে যাওয়া যায়। শ্রীনগরের বাজার থেকে রিকশা নিয়ে গাদিঘাট যেতে হবে। ঘাট থেকে হাতে টানা বা ইঞ্জিনচালিত নৌকায় শ্রীনগর থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত আড়িয়াল বিলে যেতে পারবেন। চাইলে কয়েকজন মিলে ১০০০-১৫০০ টাকার মধ্যে নৌকা ভাড়া করে সারাদিন আড়িয়াল বিল ঘুরতে পারবেন।
কোথায় থাকবেন
ঢাকার কাছাকাছি হওয়ায় সকালে রওনা দিয়ে সন্ধ্যার মধ্যে ফিরে আসা যায়। তবে রাত্রিযাপনের প্রয়োজনে মুন্সিগঞ্জ জেলা সদরে হোটেল থ্রি স্টার ও হোটেল কমফোর্টের মতো বেশকিছু সাধারন মানের হোটেল পাবেন। এছাড়া মুন্সিগঞ্জে অবস্থিত আকর্ষণীয় রিসোর্টের মধ্যে পদ্মা রিসোর্ট, মাওয়া রিসোর্ট এবং মেঘনা ভিলেজ হলিডে রিসোর্ট বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
বর্ষা এলে আড়িয়ল বিল পানিতে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে ওঠে। বাংলা সাহিত্যে-সংস্কৃতির লীলাভূমি বিক্রমপুর। আর বিক্রমপুরের বর্ষা না দেখলে শিল্প, সাহিত্য আর সংস্কৃতির প্রেমিক হিসেবে নিজের পরিচয়টাই অসম্পূর্ণ থেকে যায়। বর্তমানে বর্ষায় বিক্রমপুরের আগের সেই সৌন্দর্য আর নেই, তবে আড়িয়ল বিলে বর্ষায় তার কিছুটা ছাপ এখনও পাওয়া যায়।
ঐতিহাসিক ষাট গম্বুজ মসজিদ, ধারণা করা হয় ১৪৫০ খ্রিস্টাব্দে মসজিদটি নির্মান করা হয়। এটি বাংলাদেশের তিনটি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের একটির মধ্যে অবস্থিত; বাগেরহাট শহরটিকেই বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের মর্যাদা দেয়া হয়েছে। ১৯৮৩ খ্রিস্টাব্দে ইউনেস্কো এই সম্মান প্রদান করে।
পূর্বে এই ষাট গম্বুজ মসজিদ থেকেই পুরো খুলনা অঞ্চলের প্রশাসনিক কার্যক্রম দেখভাল করা হতো।
প্লাস্টিক বিরোধী প্রচারণার জন্য বাংলাদেশের চিকিৎসক ডা: বাবর আলী পায়ে হেঁটে ৬৪ জেলা ভ্রমণ করছেন। ক্লান্তিবিহীন ছুটেছেন দেশপ্রেমিক এই চিকিৎসক। আমরা তাঁর ভ্রমণ অভিজ্ঞতার ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিয়েছি । সাথে থাকুন ব তে ব-দ্বীপের ।
গা এলিয়ে মহাসড়কে নির্ভাবনায় শুয়ে থাকা খানপাচেঁক কুকুরকে যখন পাশ কাটাচ্ছি,তখন সবে সকাল সাতটা। আজকের যাত্রা শুরু করেছি দিনাজপুরের দশ মাইল থেকে। সকাল ছয়টায় বিছানা ছেড়ে সাড়ে ছয়টায় বেরুবার আগেই মৌ ভাবী এই ভোরবেলাতেই নাশতা নিয়ে রেডি। মুইজ ভাইয়ের বাসা থেকে আমার যাত্রা শুরুর স্থল দশমাইল তথা গতকাল যেখানে শেষ করেছিলাম সেখানে এসে যাত্রা শুরু করতে সাতটা।
হাঁটা শুরু করতেই চোখে পড়ছিল প্রচুর হিমাগার। আজ এদিকটা বেশ কুয়াশাচ্ছন্ন। রাস্তাগুলোকে দূর থেকে দেখে মনে হচ্ছিল টানেল। টানেলের শেষ মাথা থেকে ক্ষীণ আলোর রেখা বেরিয়ে আসছে আর সেই আলোতে হেডলাইট জ্বালিয়ে আসা বাস-ট্রাকগুলো তাদের উপস্থিতি জানান দিচ্ছে। এদিকের রাস্তায় বিআরটিসির বাস চলে প্রচুর।
রাস্তার ডানের ইক্ষু ক্ষেত দেখতে দেখতে চলে এলাম দিনাজপুর টেক্সটাইল মিলসের বিশাল এলাকায়। রাস্তার দু’পাশ জুড়েই এর বিস্তৃতি। রামডুবি মোড়ে আসতেই চোখে পড়ল জাল ঘেরা এক স্থানে প্রচুর হাঁস।
প্যাক প্যাক শব্দে সরগরম জায়গাটা। খানিক পরেই কাহারোল উপজেলার সীমানা শেষ হয়ে গেল। ঢুকে পড়লাম দিনাজপুর সদর উপজেলায়। ব্যাংকালী বাজারের সাথেই একটা স্কুল, নাম সুন্দরবন প্রাথমিক বিদ্যালয়।
নতুন ভূষির বন্দর থেকে খানিক এগিয়েই আত্রাই নদী। বিশাল সব চর পড়ে গেছে নদীর বুক জুড়ে। নদীর এপাড়ে সদর উপজেলা শেষ, ওপাড়ে চিরির বন্দর উপজেলা। আত্রাই নদীর উপরের সেতু পেরুতেই কৌতূহলী একদল বাচ্চার সাথে দেখা। দলবেঁধে ওরা ক্রিকেট খেলতে যাচ্ছে পাশের পাড়ায়। প্রিয় দল,প্রিয় ক্রিকেটার এসব নিয়ে গল্প করতে করতেই চলে এলাম পুরাতন ভূষির বন্দর। বাজার পেরিয়ে অল্প এগুতেই এক ছাপড়া দোকানের দোকানি নাম-ঠিকুজি জিজ্ঞেস করতে করতে দু’কাপ চা পান করাল। রাণীর বন্দর বাজার ছাড়িয়ে যেতেই হাইওয়ে পুলিশের একটা গাড়ী ঘিরে বেশ কোলাহল। এক গাদা পুলিশ গাড়ী থেকে নেমে ধুপধাপ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার তার কেটে দিল। এই মহাসড়কে সম্ভবত ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা নিষিদ্ধ। ছলছল চোখে কাটা তারের দিকে চালকদের দৃষ্টি চোখ এড়াল না।
একটা জিনিস খেয়াল করলাম, এইদিকের মোটামুটি সব বাজারের নামের শেষেই আছে বন্দর। দেশের আর কোন জায়গায় এত বন্দর আছে কিনা কে জানে। বেকিপুল, চম্পাতলী হয়ে ফতেজংপুরের কাছেই পড়ল বিশাল এক কারখানা। শ্রমিকদের ভিড় আশেপাশের এলাকাজুড়ে। পাশেই উচ্চেঃস্বরে গান বাজনা শুনে সেদিকে চোখ ফেরাতেই দেখলাম রক্তদান শিবির চলছে। এরকম গান বাজিয়ে রক্তদান শিবির এবারই প্রথম দেখলাম।
আজকের রাস্তায় ছায়া কম। তাও অল্প যে ক’টা গাছ আছে, তাতে সংখ্যাগরিষ্ঠ ইউক্যালিপটাস গাছ। সোনাপুকুর নামক বাজারে এসে ঢুকে পড়লাম পার্বতীপুর উপজেলায়। রাবেয়া বাসস্ট্যান্ড পেছনে ফেলে কুন্দল থেকে শুরু নীলফামারী জেলা। দুই জেলাকে পৃথক করেছে খড়খড়িয়া নামক একটা নদী। ফোনে কথা বলছিলাম দেখে বেশ কিছুক্ষণ ম্যাপে চোখ রাখা হয়নি। এর মাশুল দিতে হল একটু পর। সৈয়দপুরের মূল শহরের রাস্তা না ধরে আমি বাইপাস রোড ধরে নিয়েছিলাম। প্রায় কিলোমিটার দুয়েক এগিয়ে ম্যাপে চোখ পড়তেই মাথা খারাপ হবার জোগাড়। ওই দুই কিলোমিটার ওই তীব্র রোদে চরম পরীক্ষা নিল।
আকাশে উড়োজাহাজ এত নিচু দিয়ে উড়ে যেতে দেখে ধরে নিলাম সৈয়দপুর সন্নিকটে। মূল শহরে ঢুকতেই পড়ল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। দেশের অন্যান্য জায়গার স্বাস্থ্য কম্পলেক্সগুলো যেখানে অধিকাংশই পঞ্চাশ বেডের, সেখানে এই হাসপাতাল ১০০ বেড বিশিষ্ট। এক মসজিদের পাশেই অপেক্ষারত ছিলেন সাজিদ ভাই। উনি ধরে নিয়ে গিয়ে লাচ্ছি খাওয়ালেন। তাঁর ধারণা ছিল,এখানেই আজকের মত আমার যাত্রার পরিসমাপ্তি। সৈয়দপুর ছাড়িয়ে আরো কিছুদূর এগুনোর পরিকল্পনা শুনে উনিই বললেন চিকলী বাজার পর্যন্ত যেতে। ওখানে হাঁটা শেষ করে ফোন দিতে বললেন। উনিই ওখান থেকে আবার সৈয়দপুর নিয়ে আসবেন।
আবার হাঁটা শুরু করতেই সৈয়দপুরের বিশালতা দেখছিলাম। একে উপজেলা শহর মানতেই কষ্ট হচ্ছিল। এমাথা থেকে ওমাথা কমসে কম তিন কি. মি.। মূল শহর পেরিয়ে বাঙ্গালীপুর নামক জায়গা পেরিয়ে হাতের ডান দিকের একটা রাস্তা ঢুকে গেছে পার্বতীপুর উপজেলার দিকে। আর কামারপুকুরে মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউটের বিশাল ভবন পেরিয়ে পৌঁছে গেলাম আইসঢাল নামক জায়গায়। আর খানিকটা এগিয়েই চিকলী বাজার।
এখানেই আজকের মতো যখন শেষ পদক্ষেপ্টা ফেললাম, মোবাইলের এপ জানান দিচ্ছে আজ পাড়ি দিয়েছি সাড়ে ৩৪ কিলোমিটার পথ। এইখানেই আছে চিকলী সেতু। সেতুর ওপারেই শুরু রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলা। কাল শুরু করব এখান থেকেই। সেতু লাগোয়া একটা টংয়ে চায়ে চুমুক দিতে দিতে ফোন দিলাম সাজিদ ভাইকে৷ মিনিট পনেরোর মধ্যেই উনি আসতেই বাইকে চেপে সৈয়দপুরের দিকে যাত্রা। আজ সাজিদ ভাইয়ের সৈয়দপুরের বাড়িতেই থাকা হবে। যে রাস্তা আমি দেড় ঘন্টা সময় নিয়ে হেঁটে এসেছি,সে রাস্তা দিয়ে ফিরতে সময় লাগল পাক্কা ৯ মিনিট!
সৈয়দপুর শহরে আসতেই দেখা হল সাজিদ ভাইয়ের বন্ধুদের সাথে। মামুন ভাই,আব্দুল্লাহ ভাই সবাই দিলখোলা মানুষ। উনারা সবাই ব্লাড ডোনেট ফাউন্ডেশন নামক গ্রুপের মেম্বার। চা-পুরির ফাঁকে ফাঁকে গল্প হল অনেক। সৈয়দপুর শহরে বাংলার পাশাপাশি সব জায়গায় উর্দু চলে। মোটামুটি সবাই দুই ভাষাতেই স্বচ্ছন্দ। উনাদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাতাসে কাবাবের গন্ধ শুঁকতে শুঁকতেই সাজিদ ভাইয়ের বাড়িতে আসতেই পরিচয় হল শুভ ভাইয়ের সাথে। সম্পর্কে সাজিদ ভাইয়ের ভাতিজা উনি। চাকুরী করেন কক্সবাজারের উখিয়ায়। কথায় কথায় বেরিয়ে এল উখিয়ার গরুবাজারে যে বিল্ডিংয়ে উনি থাকেন,সেই বিল্ডিংয়ে আমার নিত্য আনাগোনা ছিল। গল্পের ঝুলি খুলে বসলাম দুজন। একটু পরে সাজিদ ভাইয়ের বাইকে চেপে তিনজনে খেতে গেলাম খোরাক নামক রেস্তোরাঁয়।
তারপর ঐতিহ্যবাহী চিনি মসজিদ হয়ে যখন বাড়ি ফিরছি, সৈয়দপুরের আকাশ তখন ছেয়ে গেছে দীপাবলির আতশবাজির রোশনাইতে। এক জায়গায় থেমে কিছুক্ষণ সেটাই উপভোগ করে বাড়ি ফিরে তখনো কানে বাজছে বাজারে এক বুড়োর মুখে শোনা – ‘জান হ্যায় তো জাহান হ্যায়’।
জীবনের প্রথম বান্দরবান অভিযান ও একজন নাঈম ভাই তথা সিনিয়রের সাথে পথচলা
ক্ষুদ্র এই ট্রাভেলিং জীবনে অবদান আছে বহু মানুষের কখনো তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানো হয়নি ৷ আজ সবাইকে বলতে চাই আমার পাহাড়ের প্রতি ভালবাসার জন্য হাদী মুন ভাইয়ের কাছে আমি কৃতজ্ঞ ৷ ভাই না হলে মনে হয় আমি কখনো পাহাড় ভালবাসতে পারতাম না ৷ ভাইয়ের তোলো বান্দরবানের অসাধারন ছবিগুলো আমাকে তীব্রভাবে আকর্ষন করত ৷ সেই ভালবাসার ভাইটার সাথে জীবনে আমার দেখাও হয় নি সরাসরি একবারও 🙁 যখন যা জানতে চেয়েছি নিঃস্বার্থভাবে তার ক্ষুধা তিনি মিটিয়েছেন ৷ কখনও কখনও গভীর রাতে বিরক্ত করতাম জানার জন্য , ভাই কখনো বলেনি যে পরে নক দাও এখন ব্যস্ত ৷ আপনার প্রতি ভালবাসা হাদী ভাই ♥
২০১৮ সালের জুলাই মাসে রোজার ঈদের পরদিনই প্রচন্ড গরমে গিয়েছিলাম জীবনে প্রথমবার পাহাড়ের স্বাদ নিতে৷ আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছিলাম তৌফিক ভাই, হিমেল , নাঈম ভাই ( সিনিয়র ) আর আমি যাব একসাথে ৷ সমস্য হল আমরা একেকজন একেক জায়গার , তমাল ভাই কুমিল্লার, হিমেল ঢাকার, সিনিয়র ভোলার আর আমি চট্টগ্রামের ৷ সবাই একসাথে হওয়াটাই একটা চ্যালেঞ্জ ৷ সিনিয়রের বড় ভাই ফয়েস লেকে থাকত তাই তিনি একদিন আগে চট্টগ্রাম চলে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ৷ কথা ছিল আমি আর সিনিয়র একসাথে চট্টগ্রাম থেকে বান্দরবান যাব ৷ তমাল ভাই হিমেল একসাথে রওনা দিবে , বান্দরবান গিয়ে সবাই একসাথে মিলিত হব৷
যাত্রার দিন দুপুরে আমি সিনিয়রকে পিক করি মুরাদপুর থেকে৷ তারপর সিনিয়র আর আমি বহদ্দার হাট টার্মিনাল থেকে বান্দরবানের বাসে চেপে বসি ৷ লম্বা প্লান ছিল তাই দুইজনের ব্যাকপ্যাকই ছিল রসদে ভরা ৷ ব্যাগের ওজন ও তাই বেশি ছিল , আমার ব্যাগের ওজন ছিল সবচাইতে বেশি ২১ কেজি যেটা আমি যাবার আগে ওজন করে নিয়েছিলাম ৷ অন্যদের গুলাও কম বেশি এমনই হবে হয়ত জানিনা৷
সিনিয়রের সাথে প্রথম পরিচয় ৷ দুজনই গল্প করতে করতে সন্ধার একটু আগে বান্দরবান পৌঁছালাম ৷ গাড়ি থেকে নেমে দুইজনই আগে সেই রকম চা খেলাম নদীর তীরে ছোট একটা টং দোকানে ৷ সিনিয়র বহুবার বান্দরবান এসেছে , সব তার চেনা , এটা আমাকে বেশ স্বস্তি দিয়েছিল ৷ এরপর দুইজন মিলে চলে গেলাম স্বর্ণ মন্দিরে , সেখানে ঘুরতে ঘুরতে সন্ধা হয়ে গেল৷
নাঈম ভাই এবার চেষ্টা করতে লাগল ওখানে আশেপাশে কোথাও তাবু ফেলে থাকা যায় কিনা ৷ মন্দীরের কেউ রাজি হয় নি , পরে আমরা টমটম নিয়ে রাত ৮টার দিকে আবার সদরে ফিরে আসি ৷ সিদ্ধান্ত নিলাম হোটেলে থাকব না , আমরা ট্রাভেলার হোটেল আমাদের জন্য না ৷ যেকোন উপযুক্ত জায়গা পেলেই তাবু লাগিয়ে দিব ৷ সিদ্ধান্ত ফাইনাল , এবার খেতে যাব , পাহাড়ী একটা রামিয়ন (মংডু) বেশ সুস্বাদু বললেন সিনিয়র ৷ সিনিয়র আমাকে বংড তে নিয়ে গেলেন তা খাওয়ানোর জন্য ৷ সেই স্বাদটা এখনো মুখে লেগে আছে আমার , ৩ বাটি খেয়েছিলাম 😉 ৷ খাবার খেয়ে বের হয়ে তাবু লাগানোর জন্য জায়গা খুজতে লাগলাম ৷ খালি মাঠও পেয়ে গেলাম , অনেকেই নাকি আগে সেখানে গ্রুপ করে তাবু লাগিয়ে থেকেছিল অতীতে ৷ কিন্ত সমস্যা হল আমরা মাত্র দুইজন আর তাবু একটা তাই নিরাপত্তার ঝুঁকি আছে ৷
আরেকটু সামনে গিয়ে দেখি বান্দরবান সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের গেট খোলা ৷ কোন কথা না বলে গেটের ভিতরে ঢুকে গেলাম সিনিয়রকে সাথে নিয়ে ৷ সিনিয়র একটু ভয়ে ছিল ৷ রাতে প্রহরী যদি এসে কিছু বলে বা তাড়িয়ে দেয় ৷ বললাম কিস্সু হবে না ৷ তারপরও আসেপাশে অনেক খুজলাম কাউকে পেলাম না অনুমতি নেবার জন্য ৷ নাঈম ভাইকে বললাম সিনিয়র তাবু বাইর করেন , যা হবার পরে দেকমুয়ানে 😛 ঈদের বন্ধ থাকায় স্কুল বন্ধ সকালে কেউ চেচামেচি ও করবে না ৷ সিনিয়র কথামত জায়গা খুজে তাবু লাগানো শুরু করে দিছে আর আমি চারপাশে নজরদারি করতেছিলাম ৷ তাবু খাটানো হলে দুইজনের সব জিনিসপত্র তাবুর ভিতরে রেখে স্কুলের চারপাশ টা চক্কর দিতে শুরু করলাম ৷ একদম নিস্তব্দ চারপাশ৷
রাত ১০ টার পর তমাল ভাই ফোন দিল যে তারা রওনা দিয়েছে , সকালের মধ্যে পৌঁছে যাবে ৷ সিনিয়র আর আমি নিজেদের গল্পে মসগুল হয়ে গেলাম ৷ সকালে ভোরে ফজরের আজান দিতেই আমরা সব গুছানো শুরু করলাম ৷ মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়ে অপেক্ষা করতে লাগলাম তমাল ভাইদের ৷
তমাল ভাই হিমেল এসে পৌঁছালে তাদের সাথে নিয়ে নাস্তা করে থানচির দিকে যাত্রা করলাম ৷ পথে বিভিন্ন জায়গায় আর্মির চেক পোস্টে নাম লিখিয়ে আমরা দুপুরের একটু আগে থানচি গিয়ে পৌঁছালাম ৷ দুপুরের খাবার খেয়ে কুত্তা মারা গরমে জীবনের প্রথম ট্রেকিং শুরু করলাম আমি তমাল ভাই আর সিনিয়রের হাত ধরে ৷ গরম কি জিনিস সেটা আমরা হারে হারে টের পেয়েছিলাম সেদিন 🙁
পথে অনেক মজা করলাম , একটার চেয়ে একটা সেরা কমেডিয়ান একসাথে হলে যা হয় আরকি 😉 বিভিন্ন জায়গায় বিরতি দিয়ে দিয়ে সন্ধার একটু আগে বোডিং পাড়া ওয়াই জংশনে এসে আমার পায়ের মাসল ক্রাম্প করল ৷ পিঠের ভারী ব্যাগটাও বেশ প্যাড়া দিচ্ছিল ৷ তমাল ভাই হিমেলকে নিয়ে সামনে এগিয়ে গেল ৷ সিনিয়র আমার সাথে সাথে আস্তে আস্তে চলতে লাগলেন ৷ বহু কষ্টে ঠিক সন্ধায় বোডিং পাড়া গিয়ে পৌঁছালাম ৷ হাফ ছেড়ে বাঁচলাম আজ আর হাঁটতে হবে না , সকালে অবস্থা বুঝে সিদ্ধান্ত নিব ৷ তমাল ভাই আমার ব্যাগ থেকে খিচুরীর প্যাকেট বের করে রান্না করা শুরু করে দিলেন ৷ কারবারির বাড়িতে সেদিন আমরা রাত্রিযাপন করেছিলাম ৷ রাতে খেয়ে দেয়ে ক্লান্ত শরীরে একটু ঘুমালাম ৷ সকালে আমার পায়ের ব্যথা আরো বেড়ে গেল ৷ আমি কুইট করার সিদ্ধান্ত নিলাম , কিন্তু চেয়েছিলাম অন্যরা যাক ৷ আমি একজন লোকাল গাইড নিয়ে একা ফিরে আসার চিন্তা করছিলাম থানচির দিকে ৷ তমাল ভাই সিনিয়রের সাথে কথা বলে তাকে আমার সাথে ফিরে যাবার কথা বললেন ৷ সিনিয়র প্রথমে যেতে চাননি ৷ আমিও চাইনি তিনি ফিরে আসুক মিশন কমপ্লিট না করে ৷ কিন্তু তমাল ভাইয়ের ধারনা ছিল সিনিয়র অনেক ক্লান্ত হয়ত সামনে গিয়ে আর আর পারবেন না তিনি ৷ তাই তাকেও আমার সাথে ফিরে আসার কথা বললেন ৷ পরে সিনিয়র আমার সাথেই ফিরে আসার জন্য তৈরি হয়ে গেলেন ৷ সিনিয়রের জন্য সেদিন মনটা অনেক খারাপ ছিল আমার ৷ বোডিং পাড়া থেকে একটা ছেলেকে সাথে নিয়ে আমি সেদিন সিনিয়র সহ থানচি ফিরে এসেছিলাম ৷ আসার সময় সিনিয়রের সাথে কাটানো প্রতিটা মূহুর্ত আমার কাছে জীবনের সবচেয়ে উপভোগ করা সময়গুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল ৷ অনেক মজা করেছি সেদিন আমি সিনিয়র আর ইয়ং৷
সিনিয়র তোমার জন্য অনেক অনেক ভালবাসা ৷ সেই সাথে কৃতজ্ঞতা জানাই মন থেকে তোমার প্রতি ৷ বেঁচে থাকলে কোন একদিন আবার একসাথে ট্রিপ দিব ইনশাআল্লাহ , আর সেদিন আমরা ব্যর্থ হবনা ৷
নৈসর্গিক সৌন্দর্য্যের লীলাভূমি রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা ২২০- ২৭” ও ২৩০- ৪৪” উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১০- ৫৬” ও ৯২০- ৩৩” পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে অবস্থিত। রাঙ্গামাটির উত্তরে ভারতের ত্রিপুরা, মিজোরাম, দক্ষিণে বান্দরবান, পূর্বে মিজোরাম ও পশ্চিমে চট্রগ্রাম ও খাগড়াছড়ি। এ জেলা আয়তনের দিক থেকে দেশের সর্ববৃহৎ জেলা। দেশের এক মাত্র রিক্সা বিহীন শহর, হ্রদ পরিবেষ্টিত পর্যটন শহর এলাকা। এ জেলায় চাকমা, মারমা, তঞ্চঙ্গ্যা, ত্রিপুরা, মুরং, বোম, খুমি, খেয়াং, চাকমা, পাংখোয়া, লুসাই, সুজেসাওতাল, রাখাইন সর্বোপরি বাঙ্গালীসহ ১৪টি জনগোষ্ঠি বসবাস করে। রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান- এই তিন পার্বত্য অঞ্চলকে নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলা সৃষ্টির পূর্বের নাম ছিল কার্পাস মহল। পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলা থেকে১৯৮১ সালে বান্দরবান এবং ১৯৮৩ সালে খাগড়াছড়ি পৃথক জেলা সৃষ্টি করা হলে পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলার মূল অংশ রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে।
ধূপপানি ঝর্ণা বাংলাদেশের রাঙ্গামাটি জেলার বিলাইছড়ি উপজেলার মনোহর ঝর্ণাগুলোর মধ্যে একটি ৷ এটা বিলাইছড়ির ফারুয়া ইউনিয়নের ওড়াছড়ি নামক স্থানে অবস্থিত। যেতে হলে কাপ্তাই হয়ে যেতে হয় ৷ ঐদিকে আরো বেশ কয়েকটি ঝর্না রয়েছে গাছকাটা, মুপ্পোছড়া ও ণ-কাটা ঝর্ণা । একটা জ্বীন ঝর্না ও রয়েছে তবে সেখানে মানুষ যেতে সাহস করে না , কথিত আছে সেখানে জ্বীন আছে ৷ শুনেছি বেশ কিছু আদিবাসী ও নাকি মারা গেছে সেখানে গিয়ে ৷
মনোহর এই ঝর্ণাটি একসময় লোক চক্ষুর আড়ালেই ছিলো বলতে গেলে । কথিত আছে এক বৌদ্ধ ভিক্ষু গভীর অরণ্যের এই ধূপপানি ঝর্ণার নিচে ধ্যান শুরু করেন । প্রথমে তিনি একনাগারে প্রায় তিন মাসের মত রাতদিন একটানা ধ্যান করেন এখানে ৷ পরে লোকাল আদিবাসীরা ঐ বৌদ্ধ ভিক্ষুকে দিনের নির্দিষ্ট কিছু সময় বা উপলক্ষ্যে সেবা করতে গেলে এই ঝর্নাটি জন সম্মুখে প্রকাশ পায় ৷
নামকরণ
এর নামকরন ও বেশ সুন্দর তঞ্চঙ্গ্যা ভাষা থেকে এর উৎপত্তি ৷ ‘ধূপ ’ অর্থ সাদা আর তার সাথে পানি যোগ করে ধূপ্পানি হয়েছে ৷ ধূপপানি অর্থ সাদা পানির ঝর্ণা ৷
এই ঝর্ণার পানি খুব স্বচ্ছ আর যখন অনেক উঁচু থেকে তার জল নীচে তীব্র গতিতে নীচে পাথরে আছঁড়ে পড়ে তখন তা পাথরে সাথে সংঘর্ষে সাদা ফেনার মতন সৃষ্টি করে ৷ ভূমি থেকে এর উচ্চতা প্রায় ১৫০ ফুট এর মতন । ঝর্ণা থেকে পানি আছড়ে পড়ার শব্দ প্রায় বেশ কয়েক কিলোমিটার দুর থেকেও শোনা যায়। বর্ষাকালে আরও দুর থেকেও শুনা যায় বলে বলেছেন অনেকে ৷
এই ঝর্ণার ওপরে একজন বৌদ্ধ ভিক্ষু তাঁর আশ্রমে ধ্যান করেন। স্থানীয় ভাষায় এই বৌদ্ধ ভিক্ষুকে বলা হয় ‘ভান্তে’। তিনি সপ্তাহের ছয় দিন ধ্যান করেন৷ শুধু রোববারে খাবার খাওয়ার জন্য নিচে নেমে আসেন বলে কথিত। এই ছয় দিনে ভান্তে কোনো চিৎকার-চেঁচামেচি পছন্দ করেন না বলে জানা যায় । তাই শুধু রোববারেই প্রথম দিকে সবাইকে যাবার অনুমতি দিত ৷ এখন যে কোন দিনই ঝর্ণাটায় লোকজনের যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়।
ধূপপানি যাওয়ার পথে কাপ্তাই লেকের দুপাশের সৌন্দর্য্য যে কোন মানুষকেই বিমোহিত করবেই । লেকের উপর দিয়ে বয়ে চলা নানা রঙের-ঢঙ্গের, ছোটো-বড় নৌকাগুলা দেখতে বেশ সুন্দর লাগে আর তা মনকে দোলা দেয়াটাই স্বাভাবিক ৷ এসব নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখতে দেখতেই লম্বা সময়েয় পথ পাড়ি দিয়ে পৌঁছে যাবেন বিলাইছড়ি । প্রায় আড়াই থেকে তিন ঘন্টার মত লাগে কাপ্তাই থেকে বিলাইড়িতে পৌঁছাতে ৷
বিলাইছড়ির মূল আকর্ষন যে তিনটি ঝর্ণা রয়েছে তার মধ্যে “ণ-কাটা ও মুপ্পোছড়া” যদি আপনার মকে প্রশান্তি এনে দেয় তবে আমি নিশ্চিত ধূপপানি আপনাকে তার বিশালতা আর সৌন্দর্য দিয়ে দিবে পরিপূর্ণ তৃপ্তি । প্রকৃতির অপার মায়ায় সৃষ্ট এই ঝর্না নিজের রুপে-গুনে-সৌন্দর্য্যে নিজেকে নিয়ে গেছে এক অনন্য উচ্চতায় ৷ তার সৌন্দর্য আর বিশালতায় নিজেকে ধরে রাখা দুষ্কর ৷ নিজেকেই হারিয়ে ফেলে সবাই তার সৌন্দর্যের মাঝে ৷
ধূপপানি যাবার পথে বেশ কিছু আর্মির প্রথম চেকপোস্ট পড়বে। সেখানে বৈধ পরিচয়পত্র দেখাতে হবে। এখানে বলে রাখা ভালো-সবার জাতীয় পরিচয়পত্র থাকলে ভাল অন্যথায় কলেজ/ভার্সিটি আই,ডি,কার্ড বা জন্মসনদ/পাসপোর্ট এর ফটোকপি সাথে রাখতে হবে । এটা প্রত্যেকের জন্যই লাগবে আর্মির পাশ নিতে ৷
কিভাবে যাবেন
কাপ্তাই জেটিঘাট থেকে বিলাইছড়ি দুই ভাবে যাওয়া যায় লোকাল এবং রিজার্ভ বোটে ৷ দেশের যেকোন জায়গা থেকে প্রথমে কাপ্তাই আসতে হবে ৷ তারপর কাপ্তাই জেটিঘাট থেকে লোকাল বা রিজার্ভ বোটে বিলাইছড়ি। লোকাল বোটের ভাড়া পড়বে ৬০ টাকা করে প্রতিজন এখন বাড়তেও পারে ৷ আর রিজার্ভ নিলে ২০০০-৩০০০। লোকাল বোট ছাড়া শুরু হয় সকাল ৮.৩০ থেকে। তারপর প্রতি ১/১.৩০ ঘন্টা পর পর বোট ছেড়ে যায়। লোকাল বোটে গেলে বিলাইছড়ি থেকে আবার বোট রিজার্ভ করে ওড়াছড়ি যেতে হবে ।
বিলাইছড়ি থেকে ওড়াছড়ি বোট ভাড়া পড়বে প্রায় ২০০০ টাকার মতো । দরদাম করে নিতে হয় ৷ সেখান থেকে লোকাল গাইড নিয়ে যেতে হয় ধূপপানি। গাইড ফি ৫০০-৬০০ টাকা। আর কাপ্তাই থেকে রিজার্ভ বোট নিলে ভাড়া গুনতে হবে প্রায় ৪০০০-৫০০০ টাকা কম বেশি ৷
থাকার ব্যবস্থা
বিলাইছড়িতেই থাকার ব্যবস্থা আছে। সেখানকার লোকালরা কটেজের মত কিছু স্থাপনা তৈরি করেছে ট্রাভেলারদের জন্য ৷ সেখানে থাকা যায় ৷ ভিতরে বাজারে বেশ কিছু খাবারের দোকান রয়েছে ৷ রুমের কোয়ালিটি এবং সাইজের উপড় ভাড়া নির্ভর করে। রুম ভেদে দুই থেকে পাঁচজন একসাথে থাকা যায় ৷
লেখা ও ভিডিও :
লেখা ও ভিডিও: Rabi Chandrabindu
সম্পাদনা : Asif shaikat
স্বত্ব : ব তে ব-দ্বীপ
দামতুয়া ঝর্ণা বান্দরবান জেলার আলীকদম উপজেলায় অবস্থিত। বান্দরবান জেলার দুর্গম জায়গায় যে কয়টি সুন্দর ঝর্ণা আছে তার মধ্যে আকার আকৃতি ও সৌন্দর্য্যের দিক দিয়ে এটি বাংলাদেশের অন্যতম সুন্দর ঝর্ণার মধ্যে একটি। ঝর্ণায় যাওয়ার রাস্তা দুর্গম হওয়ায় তা অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় পর্যটকদের কাছে খুবই আকর্ষণীয় স্থান হিসাবে জায়গা করে নিয়েছে। দামতুয়া ঝর্ণাটি আরও বেশ কিছু নামে পরিচিত। তার মধ্যে তুক অ ঝর্ণা, লামোনই ও দামতুয়া ঝর্ণা নাম উল্লেখযোগ্য।
তুক’অ দামতুয়া:
তুক মানে ব্যাঙ আর অ-অর্থ ঝিরি, অপরদিকে দাম মানে মাছ আর তুয়া অর্থ যেখানে মাছ উঠতে পারে না। এই সব মিলিয়েই ঝর্নার নাম হয়েছে তুক-অ দামতুয়া। অদ্ভুত বৈশিষ্ট্যময় এই ঝর্না দেখতে আপনাকে আসতে হবে বান্দরবানের আলীকদমে৷
দামতুয়া ঝর্ণায় যেতে হলে প্রথমে আলীকদম – থানচি সড়কের আদুপাড়ার ১৭ কিলোমিটার নামক জায়গায় আসতে হবে।
প্রথমে আলীকদমে এসে আলীকদমের পানবাজার থেকে বাইক ভাড়া করে যেতে হবে আলীকদম-থানচি রাস্তার ১৭ কিলোমিটারের আদুপাড়া নামক জায়গায়। এক বাইকে ২ জন করে বসা যায়৷ বাইক ভাড়া মনে নাই দরদাম করে নিতে হয়৷ আলীকদম থেকে যাত্রা শুরু করে পথে ১০ কিলো নামক জায়গায় যাবার পর সেখানে আর্মি ক্যাম্প আছে। সেখানে সবার ন্যাশনাল আইডি কার্ড ও ফোন নাম্বার দিয়ে নাম এন্ট্রি করে পার্মিশন নিতে হবে। আর মনে রাখতে হবে অবশ্যই সেইদিনই ট্রেকিং শেষ করে বিকেল ৫ টার আগে এই ১০ কিলো আর্মি ক্যাম্পে ফিরে এসে রিপোর্ট করতে হবে।
পার্মিশান নিয়ে বাইকে করে ১৭ কিলোমিটারের আদুপাড়া এসে সেখান থেকে ট্রেকিং শুরু করতে হয়৷ আদুপাড়া থেকে দামতুয়া ঘুরে ফিরে আসতে প্রায় ৬-৭ ঘণ্টার মত লাগে৷ দামতুয়া ঝর্ণায় যাবার জন্যে গাইডের প্রয়োজন হবে।
আদুপাড়া থেকেই সারাদিনের জন্যে গাইড ঠিক করে নেয়া যায় ।সব ঘুরিয়ে দেখিয়ে নিয়ে আবার ফিরে আসার জন্যে গাইড ফি হিসবে ১০০০( নির্ধারিত) টাকা দিতে হয়৷